কোটা সংস্কার আন্দোলন যদি বন্ধও হয় এখনই ক্লাসে ফিরতে পারবেন না শিক্ষার্থীরা
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৪, ০৭:৪১ PM , আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৪, ১০:২৮ PM
সরকারি চাকরিতে নিয়োগে কোটার বিষয়ে চার সপ্তাহের স্থিতাবস্থা জারি করেছেন আপিল বিভাগ। এ রায় জারি করার সাথে আপিল বিভাগ আন্দোলনকারী ছাত্রছাত্রীকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরে গিয়ে পড়াশোনায় মনোনিবেশ করতে বলেছেন। আদালত শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরতে বললেও পেনশন স্কিম নিয়ে শিক্ষকদের চলমান কর্মবিরতির জন্য তা সম্ভব হচ্ছে না।
বুধবার (১০ জুলাই) আপিল বিভাগ পর্যবেক্ষণ ও নির্দেশনায় বলেছেন, আন্দোলনকারী ছাত্রছাত্রীকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরে গিয়ে পড়াশোনায় মনোনিবেশ করতে বলা হলো। সব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টর এবং অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানেরা তাঁদের শিক্ষার্থীদের ফিরিয়ে নিয়ে শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করবেন বলে আদালত আশা করেন। আর আন্দোলনকারীরা চাইলে আইনজীবীর মাধ্যমে তাঁদের বক্তব্য তুলে ধরতে পারবেন। আদালত মূল আবেদন নিষ্পত্তির সময় তাঁদের সে বক্তব্য বিবেচনায় নেবেন।
এদিকে প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবি নিয়ে এক অবস্থান কর্মসূচিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড.জিনাত হুদা বলেন, প্রত্যয় স্কিম ম্যানমেইড ডিজাস্টার। এই দুর্যোগে পেনশন কর্তৃপক্ষ তৈরি করেছে। গণমাধ্যমকর্মীরা আমাদের প্রশ্ন করছে শিক্ষকরা কবে ক্লাসে ফিরবে। আমরা তাদের বলতে চাই এটা অর্থমন্ত্রণালয় কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞাসা করুন। আমাদের দাবি তারা কবে মেনে নিবে। তারা এখনো পর্যন্ত কোনো ধরনের সংলাপের আমন্ত্রণ করেনি। আমাদের ৩ দফা দাবি মেনে নিলে এখনি কর্মবিরতি ছেড়ে ক্লাসে ফিরব।
তিনি আরও বলেন, আমরা অনুধাবন করছি ক্লাসে দ্রুত না ফিরলে সমস্যা তৈরি হবে।তবে বাধ্য হয়ে জাতির স্বার্থে আন্দোলনে রয়েছি।তবে আমাদের শিক্ষকরা যথেষ্ট আন্তরিক।শুক্র শনিবার বন্ধের দিনেও রুটিনের থাকা ক্লাসগুলো অফলাইন-অনলাইনে নিয়ে শ্রেনীকার্যক্রমের ধারাবাহিকতা বজায় রাখবেন।
অপরদিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বায়ক সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, ২০১৮ সালের পরিপত্রের খেলা আমরা আর খেলতে চাই না। আমাদের নির্বাহী বিভাগ যদি আশ্বাস দেয় যে অনগ্রসর জাতির জন্য ৫% কোটা রেখে সকল কোটা বাতিল করা হবে, তাহলে আজকেই আমাদের শেষ আন্দোলন। আমরা কাল থেকে পড়াই ফিরে যাবো। মুক্তিযোদ্ধা কোনো পোষ্য কোটা নয়, এটা কোনো কোটা হতে পারে না।
আরেক সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আজকে কেন্দ্রীয় নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলনস্থল ত্যাগ করবো না। দ্বিতীয়ত অতি উৎসাহী হয়ে আনন্দ মিছিল বের করার জন্য মাঠ ছেড়ে যাওয়ার কোন পুনপরিকল্পনা করব না। আমরা যারা বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের ব্যানারে আন্দোলন করছি, যতক্ষণ পর্যন্ত নির্বাহী বিভাগ থেকে সুস্পষ্ট কোন বক্তব্য না পাচ্ছি ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবো। যে আন্দোলনের মূল গুরুত্বপূর্ণ জায়গাটি ছিল এক দফা দাবি, সেই জায়গা থেকে আমরা বিচার বিভাগকে ধন্যবাদ জানাই। কোন সুবিধাবাদী পক্ষ যদি আদালতে রায়কে কাজে লাগিয়ে আন্দোলন স্থল ত্যাগ করতে চাই তাদেরকে আমরা সুবিধাবাদী হিসেবে চিহ্নিত করতে চাই। আমাদের মূল দাবি ছিল সকল প্রকার গ্রেডের অনৈতিক কোটার যৌক্তিক দাবি আদায়ে যতক্ষণ না পর্যন্ত নির্বাহী বিভাগ থেকে সঠিক তথ্য না পাচ্ছি, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব।