০৯ জুলাই ২০২৪, ২১:২৬

চবির কোটা আন্দোলনকারীকে হত্যার হুমকি, ছাত্রলীগের কর্মীর বিরুদ্ধে দুই থানায় জিডি

চবিতে কোটা আন্দোলন  © সংগৃহীত

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্থারের দাবিতে আন্দোলনকারী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) নাট্যকলা বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী খান তালাত মাহমুদ রাফিকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের কর্মী ও একই বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের হৃদয় আহমেদ রিজভীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় দুই থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন ভুক্তভোগী রাফি।

গত রবিবার এ হুমকি পাওয়ার পরদিন সোমবার চবি প্রক্টর বরাবর অভিযোগপত্র দেন রাফি। পরে একইদিনে হাটহাজারী মডেল থানায় ও আজ মঙ্গলবার ভুক্তভোগীর নিজ এলাকা নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ থানায় দুটি জিডি করা হয়েছে। হাটহাজারী মডেল থানায় ভুক্তভোগী রাফি ও নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ থানায় ভুক্তভোগীর বাবা মো. তরিকুল ইসলাম জিডি করেছেন।

সাধারণ ডায়েরিতে মো. তরিকুল ইসলাম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কর্মী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী হৃদয় আহমেদের নাম উল্লেখ করেছেন। এতে তিনি বলেন, গত রবিবার রাত ১০টা ২৫ মিনিটে এক ব্যক্তি তার মুঠোফোনে কল করেন। ওই ব্যক্তি তাকে বলেছেন, ‘আপনার ছেলে কোটা আন্দোলন করছে, আন্দোলন থেকে সরে না এলে আপনার ছেলেকে জীবিত অবস্থায় পাবেন না, হয়ত আপনার ছেলের লাশটি পেতে পারেন।’

জানতে চাইলে মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, আমি আমার ছেলের জীবনের নিরাপত্তা চাই। এজন্য থানায় একটি সাধারণ জিডি করেছি।  

এ বিষয়ে রাফি বলেন, যে নাম্বার থেকে কল করা হয়েছিল সেটি নিয়ে আমি খোঁজ-খবর নিয়েছি। খোঁজ নিয়ে জানতে পারি যে ওটা আমার বিভাগের সিনিয়র ২০১৯-২০ সেশনের হৃদয় আহমেদ রিজভীর নাম্বার। তাঁর বাড়ি নরসিংদী জেলায়। 

রাফি আরও বলেন, এ ঘটনার পর আমি এখন ক্যাম্পাসে ও ক্যাম্পাসের বাইরে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেছি। আমি প্রক্টর বরাবর অভিযোগপত্র দিয়েছি এবং হাটহাজারী মডেল থানা ও মোহনগঞ্জ থানায় দুটি জিডি করেছি। 

হুমকি দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে অভিযুক্ত হৃদয় আহমেদ রিজভী বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে সেটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি তার বাবাকে কোনো ফোন করিনি। আমি রাফিকে বিভাগের ছোটভাই হিসেবে চিনি। সে একদিন এসে পরিচিত হয়েছিল। আমি বাড়িতে অবস্থান করছি। হত্যার হুমকি দিবো কেন? আমি এ বিষয়ে জানি না। 

এদিকে, আজ মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর একটি অভিযোগ দেন অভিযুক্ত রিজভী। সেখানে তিনি রাফির বাবাকে ফোন দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। কিন্তু হত্যার হুমকির বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। 

জিডির বিষয়ে মোহনগঞ্জ থানায় ওসি মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ভুক্তভোগীর বাবা একটি জিডি করেছেন। আমরা এটি আদালতে পাঠাবো। আদালত অনুমতি দিলে আমরা বিষয়টি তদন্ত করবো।

এ বিষয়ে হাটহাজারী মডেল থানার ওসি মনিরুজ্জামান বলেন, রাফি নামের একটা ছেলে জিডি করেছে। এখানে তেমন কিছুই উল্লেখ করেনি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. অহিদুল আলম বলেন, ছেলেটা অভিযোগপত্র দিয়েছে। যেহেতু তাকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে এটা ক্রিমিনাল কেস। এটা পুলিশ তদন্ত করবে।