০৯ জুলাই ২০২৪, ১৭:৫৫

আজও ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ জাবি শিক্ষার্থীদের

ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ জাবি শিক্ষার্থীদের  © টিডিসি ফটো

সরকারি চাকরিতে সকল গ্রেডে বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লিখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ন্যূনতম পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাস করে কোটা পদ্ধতিকে সংশোধনের এক দফা দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা।  

আজ মঙ্গলবার (৯ জুলাই) বিকেল পৌনে ৪টা থেকে শুরু করে বিকেল সোয়া ৪টা পর্যন্ত প্রায় আধা ঘণ্টা এই অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এতে সাময়িক সময়ের জন্য সড়কের উভয় লেনে যানজটের সৃষ্টি হয়।

অবরোধকালে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম ইমনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী সোহাগী সামিয়া। 

তিনি বলেন, ১৯৭২ সালে যখন মুক্তিযোদ্ধা কোটা চালু হয় তখন বলা হয়েছিল-এটি অন্তবর্তীকালীন সিদ্ধান্ত। এত বছর পরেও সেই অন্তবর্তীকালীন সময় পার হয় নি। এখনও মুক্তিযোদ্ধাদের তৃতীয় প্রজন্মের জন্য ৩০ শতাংশ কোটা প্রথা বহাল থাকার যৌক্তিকতা নাই। ২০১৮ সালে কোটা সংস্কারের দাবিতে চলা আন্দোলনের প্রেক্ষিতে সরকার সব কোটা বাতিল ঘোষণা করে। এর কারণ ছিল আমাদেরকে সব ধরনের কোটা বিরোধী হিসেবে তুলে ধরা। আমাদের স্পষ্ট বক্তব্য- আমরা কোটার যৌক্তিক সংস্কার চাই। তবে সেটা শুধু অনগ্রসর জাতিগোষ্ঠীর জন্য।

সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদুল ইসলাম ইমন বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত করেছে সরকার। সাম্য, মানবিক মর্যাদা আর ন্যায় বিচারের চেতনাকে ৩০ শতাংশ কোটা দিয়ে অবমাননা করা হয়েছে। এটা ফিরিয়ে আনতে আমাদের এক দফা দাবি মানার বিকল্প নেই। আমরা আজকে প্রতীকী অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছি বলে আমাদের শক্তি-সামর্থ্য কমে গেছে বলে যারা মনে করেছেন তারা বোকার স্বর্গে বাস করছেন। আগামীকাল ছাত্র সমাজের পক্ষে রায় না এলে কঠোরতর কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হবো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আহসান লাবিব বলেন, সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথা বহাল রাখা অযৌক্তিক। কারণ এই কোটা প্রথা মেধাবীদের বঞ্চিত করছে। সংবিধানে সমতা প্রতিষ্ঠার কথা বলা হলেও কোটা প্রথা মূলত বৈষম্য তৈরি করছে। তাই আমরা অবিলম্বে কোটা প্রথার সংস্কার চাচ্ছি।

আন্তর্জাতিক বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফ সোহেল বলেন, ছাত্রদের আন্দোলনের কারণে হাইকোর্ট শুনানি এগিয়ে আগামীকাল (১০ জুলাই) এর কথা বলেছেন। অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন এবং সড়ক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন তারা আগামীকালের  শুনানিতে আন্তরিক থাকবেন। আমরা শুনানির উপর আশা রেখে আজকে দ্রুত অবরোধ কর্মসূচি শেষ করলাম। তবে আমাদের দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত আমরা অবরোধ কর্মসূচিতে অনড় থাকবো।

উল্লেখ্য, গত ৪ জুলাই আপিল বিভাগ কোটা প্রথা বহাল রাখার ফলে নতুন করে আন্দোলনের ডাক দেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তারই অংশ হিসেবে ‘বাংলা ব্লকেড’ নামে সারা বাংলাদেশে মহাসড়ক অবরোধ করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।