প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করলেন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা
কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। আজ রবিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী এক প্রেস কনফারেন্সে বলেছেন, শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া বাদ দিয়ে আবার কোটা আন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টা করছে।
এই বক্তব্যের পর দুপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনের একাধিক সমন্বয়ক দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করার কথা জানান। তারা জানান, প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে আমার আশার বাণী শুনতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে ছাত্র সমাজ দারুণভাবে আশাহত হয়েছে। আমাদের আন্দোলন চলবে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক বাংলা বিভাগের মাহিন সরকার বলেন, ২০১৮ সালে কোটা সংস্কারের আন্দোলন যেটা আমরা করেছিলাম সেখানে আমরা কোটা বাতিল চাইনি। তখন সংসদকে তোয়াক্কা দেখিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় যখন পরিপত্র জারি করে তখন সংসদের কার্যকারিতা নয়ে প্রশ্ন ওঠে। আজকে প্রধানমন্ত্রীর এ ধরনের বক্তব্য আমাদের কাছে আকস্মিক লেগেছে। আমরা এই বক্তব্যকে প্রত্যাখ্যান করছি।
আন্দোলনের আরেকজন অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আমার মনে হয় প্রধানমন্ত্রীর আরেকটু ভেবে এ ধরনের কথা বলা উচিত ছিল। আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মান করছি না। আমরা পোষ্য কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি। প্রতিবন্ধী, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য কোটা আমরা চাই কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের পরে তাদের সন্তান, নাতি- নাতনীদের জন্য এত বেশি কোটা আশাব্যঞ্জক নয়। আমরা এর যৌক্তিক সংস্কার চাই। প্রধানমন্ত্রী যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন আমরা চাই সেটা মেধাবীদেরকে দিয়েই হোক।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী বাংলা বিভাগের মোসাদ্দেক বলেন, আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে আশার বাণী শুনতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে ছাত্র সমাজ দারুণভাবে আশাহত হয়েছে। আমরা দৃঢ়তার সাথে বলতে চাই, শিক্ষার্থীরা অযৌক্তিক কোনো আন্দোলন করছেন না। বাংলাদেশের ইতিহাস বলে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় ছাত্র জনতার আন্দোলনের মুখেই বঙ্গবন্ধুসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়েছিল। সুতরাং আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা অযৌক্তিক কোন কিছুই নয়। ছাত্র-জনতার জন্যই আইন, আইনের জন্য ছাত্র জনতা নয়।
তিনি বলেন, আর তাছাড়া আদালত যে রায়টি দিয়েছে তা সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক। সংবিধানের কোথাও কোটা শব্দটির উল্লেখ নেই। সংবিধান সকল সরকারি চাকরি ক্ষেত্রে সুযোগের সমতার কথা বলেছে। সেখানে দাঁড়িয়ে আদালতের এই রায় কোনোভাবেই ন্যায় বিচার হতে পারে না। তাই ছাত্র সমাজ রাজপথে আন্দোলন করার মাধ্যমেই কোটা পদ্ধতি সংস্কার করে সকল ধরনের বৈষম্য দূর করবে। ঊনসত্তরের মতো আবারো আদালতকে ন্যায় বিচার প্রদানে বাধ্য করবে।