৭ম দিনেও সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে জাবি শিক্ষকরা, অচল শিক্ষাকার্যক্রম
অর্থমন্ত্রনালয় জারিকৃত সার্বজনীন পেনশন স্কিমকে (প্রত্যয় স্কিম) বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন আখ্যা দিয়ে তা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনের ৭ম দিনেও সর্বাত্মক কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষকরা। এতে অচল হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষাসহ সকল কার্যক্রম।
রবিবার (৭ জুলাই) দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান ভবনের সামনে শিক্ষকরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এদিন সকাল থেকেই কর্মবিরতির অংশ হিসেবে সব ধরণের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রাখে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা।
এর আগে একই দাবিতে গত ১ জুলাই থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি শুরু করেন দেশের ৩৫টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। প্রত্যয় স্কিম প্রত্যাহার না হলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথাও জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নেতৃবৃন্দ।
কর্মসূচীতে ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক সুলতানা আক্তার বলেন, 'দেশের দুর্নীতিবাজরা কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছে। কানাডার বেগমপাড়ায় আলিশান বাড়ি বানাচ্ছে। তবে সেদিকে আপনাদের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। আপনারা দুর্নীতিবাজদের টাকায় হাত না দিয়ে শিক্ষকদের পেনশনে হাত দিয়েছেন। শিক্ষকরা যদি তাদের আর্থিক নিরাপত্তা না পায়, তাহলে কিভাবে তারা শিক্ষা ও গবেষণায় মনোনিবেশ করবে? তাই অতি দ্রুত সর্বজনীন পেনশন স্কিম বাতিল করার আহ্বান জানাচ্ছি'।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মো. মোতাহার হোসেন বলেন, 'শিক্ষকরা দামী গাড়ি-বাড়ি চায়নি। তারপরেও শিক্ষকদের ন্যায্য পাওনা টুকুর উপরে সরকার হাত দিয়েছে। নতুন এই পেনশনের আওতায় শিক্ষকদের বেতন থেকে ১০% করে টাকা কেটে রাখা হবে। তবে শিক্ষকরা যে বেতন পায় সেটা দিয়েই সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। এরপরেও ১০% করে টাকা কেটে রাখলে আমাদের জন্য ব্যায়ভার চালানো কষ্টকর হয়ে যাবে'।
আরও পড়ুন: সাইন্সল্যাব মোড় অবরোধ কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের, যান চলাচল বন্ধ
তিনি বলেন, 'আমরা আন্দোলন করতে চাইনা। আমরা অতি দ্রুত সময়ে শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রমে ফিরে যেতে চাই। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাই, আপনি বিশ্ববিদালয়ের শিক্ষকদের সাথে বসেন, তাদের কথাগুলো শোনেন। কেননা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সহযোগীতা ছাড়া বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণ সম্ভব নয়'।
প্রসঙ্গত, সর্বজনীন পেনশন স্কিম সংক্রান্ত ‘বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন’ প্রত্যাহার এবং পূর্বের পেনশন স্কিম চালু রাখার দাবিতে গত ২০ মে সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন। তার ধারাবাহিকতায় ২৬ মে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশের ৩৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ে একযোগে মানববন্ধন করেন শিক্ষকরা। পরবর্তীতে গত ৩০ জুন পূর্ণ কর্মবিরতি পালন করা হয় এবং পরবর্তী দিনগুলোতে সর্বাত্মক কর্মবিরতি আহ্বান জানান আন্দোলনরত শিক্ষকরা।