রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের মানববন্ধন
মুক্তিযুদ্ধ, বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে অপপ্রচার এবং অবমাননার প্রতিবাদে মানববন্ধন পালন করেছে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখার সদস্যরা।
বুধবার (৪ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাস ভবন সংলগ্ন প্যারিস রোডে এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা।
'মুক্তিযোদ্ধাবিরোধী অপশক্তিরা নিপাত যাক', 'দেশ স্বাধীন করল যারা, কেন অপমানিত হবে তারা', 'কোটা ব্যবস্থা বৈষম্য সৃষ্টি করে না বরং সমতা বিধান করে', 'মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে কটাক্ষ চলবে না, চলবে না', 'মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সম্মানহানি করা যাবে না' এসময় এমনসব প্ল্যাকার্ডের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানান তারা।
মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম রাবি শাখার সহ-সভাপতি হবিবুর রহমান বলেন, আমাদের এখানে আসার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে যারা মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে হেয় করছে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা। মেধাকে কখনো দাঁড়িপাল্লা দিয়ে মাপা যায় না। আমাদের ছবি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে; এটা অন্যায়। নারীদের ৬০%, রেলওয়েতে ৪০% কোটা রয়েছে কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলে না। সবাই কথা বলে মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে। অবাঞ্চিত তথ্য দিয়ে আমাদের হেয় করা হচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যঙ্গ করে 'মুরগিযোদ্ধা' বলা হচ্ছে। যারা এমনটা করছে তারা এদেশকে আফগানিস্তান বানাতে চায়। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম এ আন্দোলন করে যাবে।
বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান রিয়াদ উদ্দিন বলেন, ১০টি বা ২০টি শৃগাল কখনো একটি বাঘকে শিকার করতে পারে না। আমরা হচ্ছি বীরের সন্তান, আপনারা হলেন শৃগাল। আমাদের বাধ্য করবেন না রাজপথে নামতে, আমাদের হুঙ্কার যখন ছুটবে আপনারা গর্তে লুকিয়ে বাঁচতে পারবেন না। যার প্রমাণ ১৯৭১ সালে আমাদের বাপ-চাচারা দিয়ে গেছেন। আমরা যেভাবে মরতে পারব আপনারা সেভাবে মরতে পারবেন না।
সংগঠনের সহ-সভাপতি মাহফুজ বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে নিয়ে যে কটূক্তি করা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ আইনপরিপন্থী। মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের যারা মেধাশূন্য বলছেন তাদের কথা শুনে বুঝা যায় এই জাতি কতটা নির্লজ্জ। আমাদের অপমাণিত করা হবে, তা আমরা কখনই মানব না। ২০১৮ সালের নির্বাচনকে টার্গেট করে সরকার পতনের উদ্দেশ্যে কোটা আন্দোলন শুরু করে জামায়াত-শিবির। বাংলাদেশে এত কোটা থাকতে তাদের চুলকানি শুধু মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে।
এসময় তাদের সাথে একাত্ম্যতা পোষণ করে বীর মুক্তিযোদ্ধা সজল বলেন, মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা যখন রাজপথে দাঁড়িয়েছে এটা জাতির জন্য লজ্জা। যারা নিজের জীবনকে বাজি রেখে দেশকে স্বাধীন করেছে তাদের সন্তান ও প্রজন্মকে এ নির্লজ্জ জাতি সম্মান দিতে জানে না। বরং তাদের অপমান করা হচ্ছে, তাদের নামে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। এটা খুবই লজ্জাজনক। আজ আমাদের সন্তানদের মেধাশূন্য বলছে, তারা কি এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা পাস করেনি? মুক্তিযোদ্ধা সন্তানরা মেধা দিয়ে পাস করে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে। সুতরাং তাদের মেধাশূন্য বলার সুযোগ নেই।
এসময় মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম রাবি শাখার প্রায় শতাধিক সদস্য উপস্থিত ছিলেন।