কোটা বাতিলের দাবিতে শাহবাগ মোড় অবরোধ শিক্ষার্থীদের
রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (২ জুলাই) বিকেল ৪টায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে নীলক্ষেত সায়েন্সল্যাব হয়ে শাহবাগে এসে তারা অবস্থান নেন।
অবরোধ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, হাইকোর্ট কর্তৃক প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ ৫৬ শতাংশ কোটা পুনর্বহালের আদেশ বাতিল করে ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহাল করতে হবে। অন্যথায় শিক্ষার্থীরা লাগাতার আন্দোলন করে যাবে।
এসময় শিক্ষার্থীরা ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্র সমাজ জেগেছে’, ‘লেগেছে রে লেগেছে রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘কোটা না মেধা মেধা মেধা’, ‘সারা বাংলায় খবর দে কোটা প্রথার কবর দে’সহ নানা স্লোগানে মুখরিত হচ্ছে পুরো শাহবাগ চত্বর।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ইমরান হোসেন আন্দোলনের প্রথম দিন থেকেই অংশগ্রহণ করে আসছেন। তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, কোটার মাধ্যমে বৈষম্য এবারই প্রথম নয়। ১৯৮৭ সালে বলা হয়েছিলো কোটা ধীরে ধীরে উঠে যাবে। কিন্তু ১৯৯৭ সালেও আমরা দেখেছি কোটায় মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের জায়গায় নাতি-নাতনীকেও যুক্ত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, কোটার মাধ্যমে বিভিন্ন সময় জঘন্য বৈষম্য আমরা দেখেছি। এমনও হয়েছে বিসিএস পরীক্ষায় ২০০তম হয়েও কেউ ক্যাডার পায়নি। আবার ৫০০০তম হয়েও কোটায় অ্যাডমিন ক্যাডার পেয়ে গেছে। কোটাধারী না থাকলে আসনগুলো শূন্য থেকেছে, তবুও সাধারণ শিক্ষার্থীরা পায়নি। এ ধরনের ভয়ানক বৈষম্যের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের পরিপত্রটি পুনর্বহাল করতে হবে। এটিই আমাদের এক দফা দাবি।
হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মুরাদ মন্ডল বলেন, দুঃখের বিষয় আজ মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের বিরুদ্ধে আমাদের দাঁড়াতে হচ্ছে। যারা বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করে এদেশ স্বাধীন করেছে, সেই স্বাধীন দেশে তাদের সন্তানদের কাছে আরমা বৈষম্যের শিকার। এই বৈষম্য আমরা কোনোভাবেই মেনে নেবো না। ২০১৮ সালের পরিপত্রটি পুনর্বহাল করেই এই আন্দোলন থামবে।
ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন বলেন, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ এই কোটা পদ্ধতি সাধারণ মেধাবী শিক্ষার্থীদের প্রতি একটি অবিচার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বাতিল হওয়ার পর গত ৫ জুন সেই কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। এর মাধ্যমে মেধাবী শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। আমরা চাই অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত বাতিল করা হোক।