দ্বিতীয় দিনের সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে অচল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
অর্থমন্ত্রনালয় জারিকৃত সার্বজনীন পেনশন স্কিমকে (প্রত্যয় স্কিম) বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন আখ্যা দিয়ে তা বাতিলের দাবিতে সর্বাত্মক আন্দোলন করছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ ৩৫ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারীরা। প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবিতে পুর্ণদিবস কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচির ২য় দিন আজ। এর ফলে সম্পূর্ণ অচল হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষাসহ সকল কার্যক্রম।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দসহ অন্যান্য শিক্ষকেরা কলাভবনের মূল ফটকে ২য় দিনের মত কর্মবিরতি পালন ও অবস্থান কর্মসূচী পালন করেন।
অবস্থান কর্মসূচিতে ঢাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জিনাত হুদা বলেন, এ আন্দোলন শিক্ষার্থীদের জন্যেই। ভবিষ্যতে তারাই শিক্ষক হবেন। অনেক ধরণের অপপ্রচার চলছে এ আন্দোলন নিয়ে। বলা হচ্ছে, শিক্ষার্থীদের জিম্নি করে এ আন্দোলন করা হচ্ছে। মূলত, শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের জন্যেই এ আন্দোলন করছে। আর, প্রত্যয় স্কিমের মাধ্যমে পুরো বাংলাদেশের শিক্ষকদেরই মূলত জিন্মি করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, উন্নত বিশ্বের কথা বাদই দিলাম যেহেতু সবকিছুই বাদ দিচ্ছি। এই উপমহাদেশের দিকে তাকান, ভারত, শ্রীলঙ্কা এমনকি পাকিস্তানেও শিক্ষকদের বেতন অনেক বেশি।যাদের বিরুদ্ধে আমরা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন করেছিলাম তাদের দেশেও শিক্ষকদের বেতন অনেক বেশি।
ঢাবি শিক্ষক সমিতির সাবেক সহ সভাপতি ও ঢাবি সাদা দলের আহবায়ক অধ্যাপক লুৎফুর রহমান বলেন, এই পেনশন স্কিমটি শিক্ষকদের মান সম্মানের ব্যাপার। যারা পেনশন স্কিমের পক্ষে কথা বলছে তারা তাদের নিজস্ব অবস্থান বজায় রাখার জন্য এসব বলছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছাত্ররা সব সময় আন্দোলনের সংগ্রামের মাধ্যমে এই জাতিকে দিক নির্দেশনা দিয়েছে। তাই আমি মনে করি এই আন্দোলন শিক্ষার্থীদেরও আন্দোলন।
তিনি আরও বলেন, আমরা মনে করি আমাদের যে আন্দোলন সেই আন্দোলনে দেশের অন্যান্য জনগনও অংশগ্রহণ করবেন যদি সরকার এই স্কিম বাতিলে আরও কালক্ষেপণ করেন। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের আদর্শের ভিন্নতা থাকলেও এই আন্দোলনে আমাদের কোনো মত পার্থক্য নেই। সকল দল মত নির্বিশেষে আমরা এই আন্দোলনের সাথে একমত।
এসময় অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত হওয়া বিবৃতিকে প্রত্যাখ্যান করেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইয়া এবং শিক্ষকেরা তাদের বক্তব্যে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলমান রাখার ঘোষণা দেন।
কর্মসূচিতে অধ্যাপক জিনাত হুদার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন জহুরুল হক হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুর রহিম , শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক এম ওহিদুজ্জামান, কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আবদুল বাছিরসহ আরও অনেকে।