আন্দোলনে বন্ধ ঢাবির মেডিকেল সেবা ও লাইব্রেরি, ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা
সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিমের বাতিলের দাবিতে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে শিক্ষক, কর্মকর্তা- কর্মচারীদের কর্মবিরতিতে ভোগান্তিতে পরেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা। আন্দোলণের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে গিয়ে জরুরি চিকিৎসা সেবা না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন অনেক শিক্ষার্থী। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়টির কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি বন্ধ পাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে প্রধান গেইটে হামলার ঘটনাও ঘটেছে।
কর্মবিরতির প্রথমদিনে সোমবার (১ জুলাই) কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়েছেন তবে গেট বন্ধ রয়েছে। সকাল ৯টার দিকে গেট খোলা হবে এমনটি কর্মচারীরা জানালে শিক্ষার্থীরা অপেক্ষা করেন তবে আর খোলা হয়নি। এতে শিক্ষার্থীরা প্রবেশপথে সামনে থাকা কিছু ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন এবং গেটে ধাক্কাধাক্কি করেন। এতে প্রবেশপথের বেশকিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা আন্দোলন করছেন তবে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা তারা কীভাবে বন্ধ করে দেয়? ক্লাস-পরীক্ষাসহ দাপ্তরিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে তাই বলে লাইব্রেরি কেন বন্ধ হবে যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনার পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা এমনিতেই নেই। এর ফলে আন্দোলন প্রশ্নবিদ্ধ হবে বলেও মন্তব্য করেন অনেকে।’
এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের হোমিওপ্যাথি বিভাগে সেবা না পেয়ে ফেরত আসার অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা। তবে চক্ষু-দন্ত বিভাগসহ অন্যান্য বিভাগ চালু রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন খোকা বলেন, ‘রোববারে গিয়ে ডাক্তার পাইনি। আজকে সকালে আবার গিয়েছি, তবে ডাক্তার বললেন কর্মবিরতিতে সেবা দেবেন না। এটা খারাপ লাগার বিষয়। মুক্তিযুদ্ধের সময়ও মেডিকেল সেবা বন্ধ ছিল না। কোনো বর্বর জাতিও এভাবে হাসপাতাল সেবা বন্ধ করবে না।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী মেডিকেল অফিসার হালিমা সাদিয়া বলেন, কর্মবিরতির কারণে সেবা দিচ্ছেন না তারা। যেদিন কর্মবিরতি শেষ হবে তখন সেবা পাওয়া যাবে।
আন্দোলন নিয়ে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিনাত হুদা বলেন, ‘এই আন্দোলন শিক্ষার্থীদের জন্যই। ভবিষ্যতে তারাই শিক্ষক হবে। সর্বাত্মক সকল প্রকার প্রশাসনিক ও অ্যাকাডেমিক কাজ বন্ধের অংশ হিসেবে বন্ধ রয়েছে। আন্দোলনে সর্বাত্মকতা বন্ধ রাখার জন্য এটা করা হয়েছে। ছাত্রদের জন্যই এ আন্দোলন, আগামীতে তারাই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হবে।’
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাকসুদুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীরা লাইব্রেরি চালু রাখার জন্য লিখিত আবেদন করেছে। এ বিষয়ে উপাচার্য স্যারের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত জানানো হবে। আর মেডিকেল-নিরাপত্তাসহ জরুরি সকল সেবা চালু থাকবে।