ঢাবির ক্যান্টিনে খাসির গোশতের সঙ্গে রান্না হয় দশ টাকার নোট!
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিনের নিম্নমানের খাবার নিয়ে যেন বিতর্ক থামছেই না। কখনো পচা মাছ, কখনো পচা মাংস আবার কখনো খাবারে পরিবেশন করা হয় বিভিন্ন ধরনের বস্তু। শিক্ষার্থীরা বলছেন, সবকিছু ছাড়িয়ে এবার মাংসের সাথে দশ টাকার নোট রান্না যেন খাবারে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। তবে ক্যান্টিন মালিকের দাবি, টাকা রান্না হয়নি। উড়ে এসে পরিবেশন করা প্লেটে পড়তে পারে।
শুক্রবার (২৮ জুন) দুপুর ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মোহাম্মদ মুহসিন হলের ক্যান্টিনে খেতে যান শামীম নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২য় বর্ষের এক শিক্ষার্থী। ওই ক্যান্টিনে বসে খাবার অর্ডার করলে তিনি গোশতেরে সঙ্গে মেশানো দশ টাকার একটি নোট দেখতে পান।
শামীমের দাবি, মাংসের সঙ্গে দশ টাকার এ নোটটি রান্না হয়েছে। অনেকটা মজার ছলে তিনি বলেন, খাসির মাংসের সাথে মসলাস্বরূপ দশ টাকার এ নোট রন্ধনশিল্পে নতুন এক রেসিপি!
শিক্ষার্থীরা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যতগুলো হল রয়েছে তারমধ্যে হাজী মোহাম্মদ মুহসিন হলের খাবার সবচেয়ে নিম্নমানের। এ ব্যাপারে হল প্রশাসনের নেই কোনো পদক্ষেপ। এ হলের ক্যান্টিনের খাবার খেয়ে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
হলটির খাবার খেয়ে অসুস্থ হওয়া চতুর্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমি প্রতিদিনের ন্যায় খাবার খেতে গিয়ে পাঙাস মাছ অর্ডার করেছিলাম। মাছের কিছু অংশ খাওয়ার পরপরই আমার অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। এক পর্যায়ে বমি এবং পেটের সমস্যা নিয়ে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা নিয়েছি।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, হাজী মোহাম্মদ মুহসিন হলের ক্যান্টিন মালিক আলমগীর একক আধিপত্যের মাধ্যমে বহুবছর এই হলটির ক্যান্টিনের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি কাউকে তোয়াক্কা করেন না। মাঝেমধ্যেই সোশাল মিডিয়ায় তাকে নিয়ে সমালোচনা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাকে লর্ড উপাধি দিয়ে নামকরণ করেন ‘লর্ড আলমগীর’।
সম্প্রতি ‘লর্ড আলমগীর’ পর্তুগাল চলে যাওয়াতে ক্যান্টিনের নতুন দায়িত্ব নেন রিপন হোসেন। তবে দায়িত্ব বদল হলেও ক্যান্টিনের খাবারের মানে কোনো পরিবর্তন হয়নি। রিপনের দায়িত্বেও প্রায় সময় শিক্ষার্থীরা খাবারের মান নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন। তবে রিপন আজকের মাংসের সাথে টাকা রান্নার বিষয়টি মানতে নারাজ।
তবে ভুক্তভোগী শামীম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, নামাজ শেষে ক্যান্টিনে খাবার খেতে গেলে আমি খাসির মাংস অর্ডার করি। মাংস থালায় ঢালতে গিয়ে দেখি মাংসের ভেতর দশ টাকার নোট। তখন ক্যান্টিন ম্যানেজারকে এটি দেখালে সে বলে ‘চেঞ্জ করে দিচ্ছি’।
তবে ক্যান্টিন মালিক রিপন হোসেন বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, এরকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। খাবার যেখান থেকে দেওয়া হয় সেখান থেকে হয়তো টাকা উড়ে মাংসের প্লেটে পড়তে পারে। টাকা তো কাগজ, এটি রান্না করলে আস্ত থাকতো না। তার দাবি, আগের তুলনায় খাবারের মান এখন অনেক ভালো।