‘নদী বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে’

স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তানের পরাজয়ের অন্যতম কারণ ছিল আমাদের নদীগুলো। আমাদের দেশে বহু নদী আছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় সেই নদীগুলো কি আজ সব বেঁচে আছে? মনে রাখতে হবে নদী বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে।

মঙ্গলবার (৪ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের মেরিন সায়েন্স এন্ড ফিশারিজ অনুষদের মিলনায়তনে চিটাগং ইউনিভার্সিটি রিসার্চ এন্ড হায়ার স্টাডি সোসাইটির (সিইউআরএইচএস) উদ্যোগে প্রথমবারের টেডএক্স চিটাগাং ইউনিভার্সিটি' অনুষ্ঠানে একথা বলেন চবি অধ্যাপক ও হালদা নদী গবেষক ড. মনজুরুল কিবরিয়া।

তিনি বলেন, হালদা বাংলাদেশের একমাত্র নদী যেটা বাংলাদেশে শুরু হয়ে বাংলাদেশেই শেষ হয়েছে। পৃথিবীর একমাত্র নদী যেটা থেকে নিষিক্ত ডিম সংগ্রহ করা হয়। হালদা নদী থেকে শুধু ১ বছরে অর্থনীতিতে কন্ট্রিবিউট হয় ৮ কোটি টাকা। হালদা নদী  চট্টগ্রামের লাইফ লাইন। নগরবাসীর জন্য প্রতিদিন হালদা নদী থেকে ১৮ লক্ষ্য লিটার পানি সংগ্রহ করা হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তানের পরাজয়ের অন্যতম কারণ ছিল আমাদের নদীগুলো। আমাদের দেশে বহু নদী আছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় সেই নদীগুলো কি আজ সব বেঁচে আছে?

তিনি আরও বলেন, আমি হালদা পাড়ের সন্তান। আমি যখন ৮ম শ্রেণীতে পড়ি আমার স্কুল শিক্ষক আমাকে একটি কবিতা লিখতে বলেছিলেন। আমি লিখেছিলাম 'হালদা নদী' কবিতাটি। আমরা দূষণমুক্ত নদীর উদাহরণ দিতে গিয়ে লন্ডনের টেমস নদীর উদাহরণ দেই। কিন্তু আমরা অতি শিগগিরই হালদা নদীকে উদাহরণ দিতে পারবো দূষণমুক্ত নদী হিসেবে। 'নদী বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে।' শিক্ষার্থীদের মধ্যে আমরা নদী নিয়ে সচেতনতা তৈরি করি। হালদা নদী নিয়ে আমাদের সবশেষ সাকসেস হলো বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান। অতি শিগগিরই আমরা হালদা নদীকে আন্তর্জাতিক হেরিটেজ হিসেবে দেখবো এ আশা রাখছি।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (অ্যাকাডেমিক) অধ্যাপক বেনু কুমার দে, মেরিন সায়েন্স এন্ড ফিশারিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. শফিকুল ইসলাম, আবুল খায়ের গ্রুপের জেনারেল ম্যানেজার এ এন এম ওয়াজেদ আলী। এছাড়া অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন সিইউআরএইচএসের মডারেটর ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. আদনান মান্নান, সিইউআরএইচএস এর উপদেষ্টা ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের ড. অধ্যাপক অলক পাল। 

তিন শতাধিক শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্পোরেট ব্যক্তিত্ব অংশ নেন। লিড অর্গানাইজার এবং কিউরেটর নুসরাত আফরিন এবং সিলভিয়া নাজনীনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের।সিইউআরএইচএস এর পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন মাহমুদ শরীফ ও কাবেরী দাশ। 

অনুষ্ঠানে টেড বক্তা হিসেবে নিজেদের জীবনের সফলতা, ব্যর্থতার গল্প তুলে ধরেন স্বাধীনতা পদক বিজয়ী বিজ্ঞানী অধ্যাপক হাসিনা খান, প্রখ্যাত বিতার্কিক ও উপস্থাপক ডা. আব্দুন নুর তুষার, গীতিকার ও কর্পোরেট ব্যক্তিত্ব আসিফ ইকবাল, সাহিত্যিক ও সাংবাদিক আনিসুল হক, শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. বাসনা মুহুরি, এভারেস্ট পর্বত আরোহী ডা. বাবর আলী এবং মিস বাংলাদেশ (২০০৭) জান্নাতুল ফেরদৌস পিয়া।

আয়োজনের মূল পৃষ্ঠপোষকতায় ছিল আমা কফি, সহযোগিতায় ছিল এমবিএ অ্যাসোসিয়েশন চিটাগং ইউনিভার্সিটি, কনফিডেন্স সল্ট, স্টেলার ও হাবিব তাজকিরাজ। বেভারেজ পার্টনার হিসেবে ছিল পুষ্টি, হোয়াইট রেবিট, লোণস্টার স্টেক হাউজ, চিলক্স। সহযোগিতায় অ্যাকাডেমিক পার্টনার হিসেবে ছিল দি ইংলিশ একাডেমি এবং ক্রিয়েটিভ আইটি ইন্সটিটিউট, হেলথকেয়ার পার্টনার হিসেবে এসপেরিয়া হেলথ কেয়ার, ট্রাভেল পার্টনার হিসেবে ইউএস বাংলা এয়ারওয়েজ। এছাড়া মিডিয়া পার্টনার হিসেবে ছিল সময় টিভি, চ্যানেল টুয়েন্টি ফোর, দ্য ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস, দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড এবং দৈনিক পূর্বকোণ।


সর্বশেষ সংবাদ