ঢাবির হলে নেশা-প্রেমিকার সঙ্গে উচ্চশব্দে ফোনালাপ ছাত্রলীগ নেতার, নিষেধ করায় মারধর
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) স্যার এ এফ রহমান হলের ২২২নং কক্ষে এক শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে একই কক্ষে থাকা ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (২৮ মে) সকালে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী হলের প্রাধ্যক্ষ বরাবর অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন।
জানা যায়, হলে নেশা ও প্রেমিকার সঙ্গে উচ্চশব্দে ফোনালাপ নিষেধ করায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে মারধর করে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম সাব্বির আহমেদ। তিনি ঢাবির চীনা ভাষা ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা মো. তৌসিফ ঢাবির সংগীত বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং হল শাখা ছাত্রলীগের ১নং সহ-সম্পাদক।
শিক্ষার্থীর করা অভিযোগপত্রের ছবি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের হাতে এসেছে। এতে বলা হয়েছে, ভুক্তভোগী সাব্বির অন্যরুম থেকে ২২২ নম্বর কক্ষে শিফট হলে একই কক্ষে আগে থেকেই অবস্থানরত ছাত্রলীগ নেতা তৌসিফের সাথে তার সখ্যতা হচ্ছিল না। কারণ তৌসিফ নেশা করে হলে আসতেন এবং হলের ভেতরেও নেশা করতেন। পাশাপাশি রাত জেগে প্রেমিকার সাথে জোরে শব্দ করে কথা বলায় সবার ঘুমানোর অসুবিধা হতো। এটা নিয়ে প্রতিবাদ করায় ভুক্তভোগীর সাথে অভিযুক্তের একদফা ঝামেলা হয়। তখন ছাত্রলীগ নেতা তার গায়ে হাত তুললে হল ছাত্রলীগ তার মীমাংসা করে দেয়।
অভিযোগপত্র
তিনি অভিযোগপত্রে আরও বলেন, আজ সকালে রুমে গেলে সবাই ঘুমানো থাকলেও অভিযুক্ত তৌসিফ জেগে ছিল। কোনো কারণ ছাড়াই সে আমাকে গালি দেয় এবং শব্দ কম করতে বলে অথচ আমি শব্দই করিনি। পরে আমি জবাব দিলে সে আমার গলা টিপে ধরে। আমার শ্বাস বন্ধ হয়ে যাবে এমন সময় আমার চিৎকারে আরেক ভাই এসে তাকে সরিয়ে দেয়।
জানতে চাইলে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা তৌসিফ মারধরের কথা অস্বীকার করে বলেন, সাব্বির মেন্টাল। ওর মাথায় সমস্যা আছে। এজন্যই ওকে আগের রুম থেকে বের করে দিয়েছে এখন এই রুমে এসেছে। ওর শরীরে কোনো ধরনের স্পর্শই করা হয়নি বলে দাবি তার।
একই রুমের শিক্ষার্থী বাধনও একই কথা বলেন। তিনি বলেন, ওর মাথায় একটু সমস্যা আছে। সে সবার সাথেই খারাপ ব্যবহার করে। গালিগালাজ করে। ওর গায়ে কেউ হাত দেয়নি। আর আমি রুমের সবচেয়ে সিনিয়র তো আমি থাকতে এখানে কোনো ধরনের মারামারি কেউ করে না।
বাধন এবং তৌসিফ দুজনই ছাত্রলীগ করেন। বাধন তৌসিফকে বাঁচাতে মিথ্যা বলছেন আর তৌসিফ আমাকে পাগল সাজিয়ে নিজে বাঁচতে চাইছেন বলে জানান ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সাব্বির।
হলটির প্রাধ্যক্ষ ঢাকার বাইরে থাকায় আবাসিক শিক্ষক অধ্যাপক মো. আজমের কাছে এ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এখনও হলে যাইনি। যার ফলে কোনো কিছুই আমি এখনও জানি না। হলে গেলে জানতে পারবো।