বৈষম্যমূলক পেনশন স্কিম বাতিলের দাবিতে জাবি শিক্ষকদের মানববন্ধন
অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত পেনশন স্কিম সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, প্রতিশ্রুত সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেলের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শিক্ষক সমিতি। রবিবার (২৬ মে ) দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে মানববন্ধনটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রায় শতাধিক শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় বক্তারা অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত পেনশন স্কিমকে বৈষম্যমূলক উল্লেখ করে বলেন, এই নীতি প্রত্যাহার না হলে ব্যাপক পরিসরে আন্দোলন শুরু হবে। মানববন্ধন থেকে আগামী বুধবার দুই ঘণ্টা কর্মবিরতি ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের কথা জানান।
মানববন্ধনের সঞ্চালক জাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও রসায়ন বিভাগের প্রফেসর শাহেদ রানা বলেন, এই বৈষম্যমূলক পেনশন বহাল থাকলে মেধাবীরা শিক্ষক হওয়ার আগ্রহ হারাবে। এতে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠে শিক্ষার মান দুর্বল হবে। আমরা আশা করছি প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে সুনজর দেবেন। অতিসত্বর এর কোনো সুরাহা না হলে আমরা আরো বৃহৎ কর্মসূচিতে যাবো।
প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের প্রফেসর সুফি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, শিক্ষা ও গবেষণা খাতে যেখানে বরাদ্দ বাড়ানো দরকার ছিল সেখানে বরাদ্দ কমিয়ে আনা হয়েছে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, পাকিস্তানের শিক্ষকদের থেকে আমাদের দেশের শিক্ষকদের বেতন অনেক কম। আমরা সরকারের কাছে আবেদন জানাতে চাই, অনতিবিলম্বে বৈষম্যমূলক পেনশন স্কিম বাতিল করে শিক্ষকদের সম্মান ও যথাযথ মর্যাদা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক।
দর্শন বিভাগের প্রফেসর কামরুল আহসান বলেন, অনিয়ম ও লুটপাটে দেশের অর্থনীতি তলানীতে এসে ঠেকেছে। তাই সরকার শিক্ষকদের রক্তশোষণ করার নীতি বেছে নিয়েছে। একজন উপাচার্যের মূল্য একজন পুলিশ কিংবা সরকারি পিয়নের চেয়ে কমে গেছে। এই পিয়নরাও এই স্কিমের আওতাভুক্ত নয়। এই পেনশন স্কিমের জন্য মেধাবীরা শিক্ষক হওয়ার প্রবণতা হারাবে। যা জাতির জন্য ভয়াবহ ফল বয়ে আনবে।
প্রসঙ্গত, গত ১৩ মার্চ অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক পেনশন সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে বলা হয়, সকল স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থা এবং উহাদের অধীন অঙ্গপ্রতিষ্ঠানসমূহের চাকরিতে যে-সব কর্মকর্তা বা কর্মচারী, তাহারা যে নামেই অভিহিত হউন না কেন ১ জুলাই ২০২৪ তারিখ ও তৎপরবর্তী সময়ে নতুন যোগদান করিবেন, তাহাদের সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনার আওতাভুক্ত করিল।