২৩ মে ২০২৪, ১৬:১৪

হিজাব ইস্যুতে আবারও আলোচনায় ঢাবি অধ্যাপক আজিজুর

হিজাব ইস্যুতে আবারও আলোচনায় ঢাবি অধ্যাপক আজিজুর
আলোচিত সেই মন্তব্য ও অধ্যাপক ড. আজিজুর রহমান  © সংগৃহীত

ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় আয়োজিত ওয়ার্ল্ড সায়েন্স, এনভারনমেন্ট এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং প্রতিযোগিতায় (ডব্লিউএসইইসি) স্বর্ণপদক জিতেছেন বাংলাদেশের নারী শিক্ষার্থীরা। স্বর্ণপদক জয়ী কয়েকজন নারী শিক্ষার্থী হিজাব পরিহিত ছিলেন। ফেসবুকের একটি পোস্টে তাদেরকে নিয়ে মন্তব্য করে ফের আলোচনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মনোবিজ্ঞান বিভাগের সুপারনিউমারি অধ্যাপক ড. আজিজুর রহমান। এর আগে ২০১৫ ও ২০১৬ সালে হিজাব ইস্যুতে আলোচনায় ছিলেন এই শিক্ষক।

জানা যায়, 'প্রহরী' নামে বিশেষ ধরনের রোবট তৈরি করে স্বর্ণপদক জিতেছে নারী শিক্ষার্থীদের একটি দল কোড ব্ল্যাক। গত ১৯ মে ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় অনুষ্ঠিত প্রতিযোগীতায় অংশ নিয়ে এ স্বর্ণপদক জিতেন তারা। স্বর্ণপদকপ্রাপ্তদের একটি খবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবটিক্স অ্যান্ড মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের অধ্যাপক ড. লাফিফা জামাল ফেসবুকে শেয়ার দিলে সেখানে অধ্যাপক ড. আজিজুর রহমান একটি কমেন্ট করেন, ‘আপনার দলের মেয়েদের কালো হিজাব পরিহিত পোষাক বাঙালি মেয়েদের প্রতিনিধিত্ব করে কী?’ 

আলোচনায় আসা সেই কমেন্টটি

এদিকে এই মন্তব্যের স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায় নেটিজেনদের। যদিও পরবর্তীতে সেই মন্তব্যটি ডিলেট করে দিয়েছেন বলে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে দাবি করেছেন ঢাবির এই অধ্যাপক। 

এর আগে ২০১৬ সালে হিজাব পরে ক্লাসে আসার কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রীকে ক্লাস থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ উঠে এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে। ড. আজিজুর রহমান আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের প্রভাবশালী সদস্য ছিলেন।

সেই সময় আলোচিত এ ঘটনা নিয়ে গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে মনোবিজ্ঞান বিভাগের ৩য় বর্ষের একজন ছাত্রী বোরকা পরে ক্লাসে আসছিলেন। ওই শিক্ষক তাকে বোরকা পরে ক্লাসে আসতে নিষেধ করেন। একই সঙ্গে যতদিন হিজাব পরে আসবে ততদিন তার ক্লাসের উপস্থিতিও দেয়া হবে না বলে জানান তিনি। এ ঘোষণার পর বেশ কয়েকটি ক্লাসে ছাত্রীটির ক্লাসে উপস্থিতি দেননি ওই শিক্ষক।

সহপাঠীরা জানান, ছাত্রীটি প্রতিটি ক্লাসে উপস্থিত থাকলেও আজিজুর রহমান তার নাম ডাকেন না এবং উপস্থিতিও দেন না। সর্বশেষ মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত ক্লাসেও একই ঘটনা ঘটায় ছাত্রীটি দাঁড়িয়ে তার হাজিরা দেওয়ার জন্য স্যারকে অনুরোধ করেন। ড. আজিজুর রহমান তাকে হিজাব খুলে ক্লাসে আসলে হাজিরা দেয়া হবে বলে জানিয়ে দেন এবং বলেন, তুমি কি ছাত্র না ছাত্রী সেটা কিভাবে বুঝব। বিশ্ববিদ্যালয়ে তোমার আইডেনটিটি কি? এর পরপরই তাকে ক্লাস থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। এ ঘটনায় কয়েকজন ছাত্রী প্রতিবাদ করলে তাদেরও ক্লাস থেকে বের করে দেন ওই শিক্ষক।

এর আগে ২০১৫ সালে আজিজুর রহমান বোরকা পরে আসার কারণে নাবিলা ইকবাল নামে তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রীকে ক্লাস থেকে বের করে দেন। 

মন্তব্যের বিষয়ে অধ্যাপক ড. আজিজুর রহমান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমি হিজাব ইস্যুতে যে মন্তব্য করেছিলাম সেটা ডিলেট করে দিয়েছি। যেহেতু সমাজ এটা ভালো মনে করছে না তাই মন্তব্য ডিলেট করে দিয়েছি। এসময় তিনি নারী শিক্ষার্থীদের এই কৃতিত্বের জন্য অভিনন্দন জানান।