গাজায় গণহত্যা বন্ধের দাবিসহ ৩ দাবিতে ঢাবিতে মানব পতাকা প্রদর্শন
ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি আগ্রাসন ও গাজায় গণহত্যা বন্ধের দাবিতে মার্চ ফর প্যালেস্টাইন নামক ব্যানারে মানবপতাকা প্রদর্শন ও সমাবেশ করেছে করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪ টায় ঢাবির সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির নেতাকর্মীরা মার্চ ফর প্যালেস্টাইনের ব্যানারে এই আয়োজন করেন।
মানব পতাকা প্রদর্শনের পাশাপাশি সমাবেশে তিনটি দাবি তুলে ধরেন শিক্ষার্থীরা। দাবিগুলো হলো, গাজায় গণহত্যা বন্ধ করা, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে দমননীতি বন্ধ করা এবং ইসরায়েলে সামরিক সহায়তা বন্ধ করা।
এসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সকল ছাত্রসংগঠনগুলোকে একত্রিত হয়ে একটি বৃহৎ ছাত্র সমাবেশের আহবান জানিয়ে ঢাবির আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, ফিলিস্তিনে আজকে যা হচ্ছে তা মানব সভ্যতার ইতিহাসে সবচেয়ে বর্বর ঘটনা সবচেয়ে বড় ট্রাজেডি। গাজাতে ইতোমধ্যে ইসরায়েলী বাহিনীর আক্রমণে ৬৭ শতাংশ বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যা একটি নির্দিষ্ট এলাকায় সবচেয়ে বড় ধ্বংসযজ্ঞের রেকর্ড ভেঙেও অনেক উপরে চলে গিয়েছে। ৩৫ হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করেছে ইসরায়েলিরা যার মধ্যে ৭০ শতাংশ হচ্ছে নারী এবং শিশু এবং ৮০ শতাংশ হচ্ছে সাধারণ নাগরিক যাদের সাথে গাজা যুদ্ধের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
তিনি আরও বলেন, গতকাল ইসরায়েলী বাহিনী কর্তৃক মিশর সীমান্তে অবস্থিত রাফা দখলের মাধ্যমে আরও খারাপ অবস্থায় পড়বে গাজাবাসী। রাফা দখলের মাধ্যমে ইসরায়েলীরা মিশর-ইসরায়েলের যে ডেভিড চুক্তি সেটি ভঙ্গ করেছে। এটিই একমাত্র সীমানা যেখান দিয়ে আহত ফিলিস্তিনি নাগরিকদের জন্য এইড আসতো, ক্ষুধার্ত লোকদের জন্য খাবার আসতো। আজ সেই রাস্তাও বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েল। আমরা আশা করবো ফিলিস্তিন একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাবে এবং জাতিসংঘের স্থায়ী সদস্য হবে।
লেখক রাখাল রাহা বলেন, এই আগ্রাসন শুরু হয়েছে ২য় বিশ্বযুদ্ধের পরপরই। তারপর থেকেই নানা চড়াই উতরাই পার করে আজকের এই অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে ফিলিস্তিনকে জাতিগত উচ্ছেদ বা জাতিগত নির্মূলের অবস্থায় নিয়ে গেছে ইসরায়েল। এই উচ্ছেদ আয়োজন অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। এই হামলায় সরাসরি মদদ দাতা যুক্তরাষ্ট্রকে এই সমর্থন থেকে ফিরে আসতে হবে।
মানবাধিকার কর্মী শারমিন মুরশিদ বলেন, ইসরায়েলকে সুস্পষ্ট মদদদাতা মারেকিন যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিনিদের রক্তে রন্ধ্রে রন্ধ্রে জমে আছে গণহত্যা ও দখলদারিত্ব। তারা একটার পর একটা দেশ ও জাতিকে নিধন করে আসছে। ইরাক, লিবিয়া আফগানিস্তানের মত দেশকে কতগুলো মিথ্যের ভিত্তিতে তারা নিধন করেছে।তাদের হাতে মিডিয়া, তাদের হাতে তথ্যের শক্তি, তাদের হাতে অর্থ। তারা সেটাকে অপব্যবহার করে প্রতিবার মিথ্যের দোহাই দিয়ে তারা খুন করেছে।
তিনি আরও বলেন, আজকে ফিলিস্তিনের পরাজয় শুধু ফিলিস্তিনের পরাজয় নয় এটা সকলের পরাজয়। সকল মুক্তিকামী মানুষের পরাজয়। ইসরায়েলের দিন শেষ হতে চলেছে এবং শেষ হবে। খুব শীঘ্রই আমরা স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র দেখতে পাবো।
ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক ও গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির আহবায়ক আখতার হোসেন বলেন, আজকের এই আয়োজনে আমরা ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী জনতার সাথে সংহতি প্রকাশ করছি। বিশ্ব পরিমন্ডলে আমাদের কয়েকটি দাবি থাকবে গাজায় গণহত্যা বন্ধ করতে করতে হবে। আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অত্যাচার ও দমননীতি বন্ধ করতে হবে এবং ইসরায়েলকে সকল প্রকার সামরিক সহায়তা বন্ধ করতে হবে।