‘তোকে সিটে উঠতে না দিলে প্রক্টর-প্রাধ্যক্ষ আসবে?’
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ছাত্রনেতার বিরুদ্ধে আবাসিক শিক্ষার্থীর সিট দখল ও হুমকি-ধমকির অভিযোগ উঠেছে। কক্ষ থেকে বিছানাপত্র নিয়ে নেমে যেতে বলেন অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা। এ নিয়ে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে হল প্রাধ্যক্ষ বরাবর লিখিত আবেদন জানিয়েছে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ হবিবুর রহমান হলে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী ইমরান ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী এবং শহিদ হবিবুর রহমান হলের ১৪৬ নং কক্ষের আবাসিক ছাত্র। অভিযুক্ত একই হল ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা মিনহাজ ইসলাম ও আইন-বিষয়ক সম্পাদক আহসান হাবিব ফিরোজ।
ভুক্তভোগী ইমরানের অভিযোগ, 'গত ১৮ এপ্রিল দুপুরে আমি হল প্রশাসনের বরাদ্দকৃত ১৪৬ নম্বর কক্ষে উঠি। রাতে খাওয়ার জন্য বাহিরে গেলে ছাত্রলীগ নেতা মিনহাজের কয়েকজন নেতাকর্মী এসে আমার বিছানাপত্র সরিয়ে দেন এবং সেখানে সমাজকর্ম বিভাগের ২০২২-২৩ সেশনের শিক্ষার্থী মাহফুজুলকে তুলে দেন। রাত হলে এসে এ অবস্থা দেখে প্রাধ্যক্ষে জানাই।
তিনি জানান, 'তুমি ছাত্রলীগকে জানাও প্রক্টর স্যারের সুপারিশে প্রাধ্যক্ষ এই সিট তোমাকে বরাদ্দ দিয়েছে। এই দুই দিন তো ছুটি। রবিবার এসে এটা দেখব। তুমি এখান থেকে বের হবা না।' ফলে রাত গভীর হওয়ায় ওভাবেই রুমে থাকি। শুক্রবার সকালে হলের ছাত্রলীগ নেতা ফিরোজ তার কক্ষে ডাকেন এবং সিট ছাড়ার জন্য হুমকি-ধামকি দেন।
তিনি বলেন, 'তোকে যদি সিটে ওঠতে না দেই তাহলে প্রক্টর বা প্রাধ্যক্ষ আসবে? এখান থেকে যাওয়ার পর বিছানাপত্র নিয়ে চলে যাবি। তোকে যদি এরপর হলে দেখি তাহলে খবর আছে।'
অভিযোগের বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা মিনহাজ ইসলাম বলেন, ‘ওই শিক্ষার্থী ওই সিটেই থাকবে। তাছাড়া ছাত্রলীগের কেউ যেন কোন শিক্ষার্থীকে হল কক্ষে না ডাকে সে বিষয়ে সকলকে সতর্ক করব।’
হুমকির বিষয়টি অস্বীকার করে আহসান হাবিব ফিরোজ জানান, 'প্রাধ্যক্ষকে জানিয়েই ওই সিটে আমি একজনকে উঠিয়েছি।'
এ ব্যাপারে হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক শরিফুল ইসলাম জানান, 'ঘটনাটি অবগত হয়েছি। বিষয়টি আমি দেখছি। ওই শিক্ষার্থী ওই সিটেই থাকবে। আমি কথা বলেছি, আর সমস্যা হবে না। পরবর্তীতে যদি একই ঘটনা ঘটলে তাহলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা মিনহাজের বিরুদ্ধে হলে সিট দখল, আবাসিক ছাত্রকে হুমকি-ধামকি ও ডাইনিং-ক্যান্টিনে খেয়ে টাকা পরিশোধ না করার একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় ছাত্রলীগের দখলকৃত সিটে ওঠা মাহফুজুল হলের আবাসিক ছাত্র নয়।
এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটির সদস্য সচিব ও প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, 'বিষয়গুলো আমরাও দেখছি। একটি কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য চেষ্টা করছি।'