প্রধানমন্ত্রী নারী হয়ে নিরলস পরিশ্রম করলে আমরা পারবো না কেন: চবি উপাচার্য

প্রধানমন্ত্রী একজন নারী হয়ে দিন রাত নিরলস পরিশ্রম করে সুষ্ঠু ভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে পারলে আমরা সবাই মিলে কেন একটি বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করতে পারবো না—বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপাচার্য ড. আবু তাহের।

রবিবার (১৪ এপ্রিল) পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

সেসময় তিনি বলেন, আমি ইউজিসিতে  থাকাকালীন বিভিন্নসময় প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে যেতে হতো। আমি দেখেছি প্রধানমন্ত্রী দিনে কমপক্ষে ১৮ঘন্টা কাজ করেন। আমি উনাকে জিজ্ঞেস করেছি আপা আপনি ভোরে কয়টায় উঠেন। উনি জবাবে বলেছিলেন আমি ৩-৪টায় উঠে তাহাজ্জুদের নামাজ, ফজরের নামাজ পড়ে লেকে কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করি তারপর নিজের কাজ শুরু করি। এই কথাগুলো এই জন্যেই বলছি একজন প্রধানমন্ত্রী যদি দিন রাত পরিশ্রম করতে পারে একটি দেশের জন্যে, আমরা সকলে মিলে কেন একটি বিশ্ববিদ্যালয়কে সুন্দর ভাবে পরিচালনা করতে পারবো না।

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু ৭ই মার্চের ভাষণে মুক্তির সংগ্রাম ও স্বাধীনতার সংগ্রাম দুইটি শব্দকে একসূত্রে গেঁথেছেন। স্বাধীনতার সংগ্রাম ১৯৭১ সালে শেষ হলেও মুক্তির সংগ্রাম এখনও চলমান। মুক্তির সংগ্রামের জন্য বঙ্গবন্ধু তনয়া কাজ করে যাচ্ছেন। আশা করি সেই মুক্তির সংগ্রাম প্রতিষ্ঠায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সকল স্তরের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারীরা অংশ নিবে, এটা আমার বিনীত অনুরোধ।  

সে সময় তিনি বলেন, আমি আমার অভিজ্ঞতা দিয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো এই বিশ্ববিদ্যালয়কে শিক্ষা, গবেষণায়, জ্ঞান বিজ্ঞানে অন্যান্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য। আমরা ইতোমধ্যে বিশ্ব র‍্যাংকির জন্যে আবেদন করেছি। আমরা আশাকরি আগামী বছর আন্তর্জাতিকভাবে আমাদের একটা স্বতন্ত্র অবস্থান তৈরি হবে হবে। এরপর আসবে ন্যাশনাল ফোকাস, লোকাল ফোকাস। আমাদের অতীতের গ্লানি মুছে অতীতের যে গৌরব,সমৃদ্ধি  ছিল সেটা পুঁজি করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। বাঙালির সংস্কৃতি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালন করতে হবে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে আগে তিনদিন ব্যাপী নব নববর্ষ উদ্‌যাপনের প্রোগ্রাম হতো। এখন তা হয় না। আমি খুব বেশি সময় পাইনি তাই এবার ছোট পরিসরে নববর্ষের আয়োজন করেছি। ইচ্ছে আছে আগামীতে আপনাদের আগের মতো তিনদিনের মেলা উপহার দেওয়ার। 

সে সময় তিনি সকলকে সকলের অর্পিত দায়িত্ব যথাযথ, নিষ্ঠা, আন্তরিকতার সহিত পালন করার অনুরোধ জানান। 

‘এই বৈশাখে বৈশ্বিক বৈভবে’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে অনুষ্ঠিত দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী ‘বর্ষবরণ উৎসব পহেলা বৈশাখ’ ১৪৩১ আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (অ্যাকাডেমিক) অধ্যাপক বেণু কুমার দে, ও উপ-উপাচার্য (প্রশাসনিক) অধ্যাপক ড. মো. সেকান্দর চৌধুরি, চবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় উদ্‌যাপন কমিটির সদস্য সচিব প্রফেসর ড. মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী। 

এছাড়া অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চবি সিনেট সদস্য ও চবি বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ নাসিম হাসান, চবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর আবদুল হক, চবি আইন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. আবদুল্লাহ আল ফারুক, চবি অফিসার সমিতির সভাপতি রশিদুল হায়দার জাবেদ, এবং চবি কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ আলী হোছাইন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন চবি ইংরেজি বিভাগের প্রফেসর ড. সুকান্ত ভট্টাচার্য ও চবি অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তন্ময়ী হাসান।

দিনব্যাপী এই আয়োজনের শুরুতে সকাল সাড়ে ১০টায় ছিলো মঙ্গল শোভাযাত্রা। এরপর আলোচনা পর্ব শেষে মুক্ত মঞ্চে বলী খেলা, বুদ্ধিজীবী চত্বরে কাবাডি খেলা চাকসু প্রাঙ্গণে বউচি খেলা অনুষ্ঠিত হয়।

বিকাল ৩ টায় জারুলতলার বৈশাখি মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। সেসময় ক্ষুদ্র পরিসরে মেলাও বসে ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণে।


সর্বশেষ সংবাদ