বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেই ঈদ করবেন বেশিরভাগ উপাচার্য
বাংলাদেশের আকাশে গতকাল মঙ্গলবার ১৪৪৫ হিজরি সনের পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। ফলে আজ বুধবার রমজান মাসের শেষ দিন। ৩০ রোজা পূর্ণ করে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সারা দেশে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যরা কে কোথায় এ ঈদ উদযাপন করছেন, সে খোঁজ নিয়েছে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল রাজধানী ঢাকায় পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করবেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করবেন।
ঢাবি উপাচার্য বলেন, পবিত্র ঈদুল ফিতর ধনী-গরিব, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের জীবনে সৌহার্দ, সহমর্মিতা, সহনশীলতা ও ভ্রাতৃত্বের বার্তা নিয়ে আসে। ঈদুল ফিতর সবার মাঝে আত্মশুদ্ধি, উদারতা, নৈতিকতা ও মানবিক মূল্যবোধ জাগ্রত করে। সব ভেদাভেদ ভুলে এই দিনে সবাই সাম্য, মৈত্রী ও সম্প্রীতির বন্ধনে মিলিত হয়।
তিনি বলেন, প্রতিবেশী, আত্মীয়-স্বজন ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে উপাচার্য বলেন, মাহে রমজানের আত্মশুদ্ধি ও সংযমের শিক্ষা গ্রহণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ, অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
সম্প্রতি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ১৯তম উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের। তিনিও এবারের ঈদ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে উদযাপন করবেন। তিনি কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে ঈদুুল ফিতরের নামাজ আদায় করবেন।
চবি উপাচার্য বলেন, নামাজের পর পুরো সকালটা ক্যাম্পাসেই কাটাবো বলে ভেবেছি। এরপর সন্ধ্যায় কিছু দাওয়াতি মেহমান থাকবেন, তাদেরকে ভিসি বাংলোতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, সেখানে তাদের সঙ্গে সময় কাটাবো। দিনশেষে আমার জন্মস্থানে যাবো, যেখানে আমার শৈশব কেটেছে। শত ব্যস্ততার মাঝে পরিবারকে সময় দেবো। তাদের সাথে কিছু সময় কাটাবো। এভাবেই এবারের ঈদটা কাটবে বলে পরিকল্পনা করেছি।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম ক্যাম্পাসে ঈদ উদযাপন করবেন। তিনি বলেন, জাহাঙ্গীরনগর আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ায় শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের একটি বড় অংশ ক্যাম্পাসেই ইদ উদযাপন করবেন। তাই আমিও সকলের সাথে এখানেই ইদের আনন্দে শরীক হবো। তবে ঈদের দিন বিকেলে আমার পরিবারের সঙ্গে এই আনন্দ ভাগাভাগি করতে গ্রামের বাড়িতেও যাবো।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার রাজশাহীতেই ঈদ উদযাপন করবেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করবেন।
রাবি উপাচার্য বলেন, ঈদে যারা ক্যাম্পাসে থাকবেন তাদের সাথে যেন কেন্দ্রীয় মসজিদে ঈদের নামাজ পড়তে পারি, সেজন্য এবারের ঈদ ক্যাম্পাসেই উদযাপন করবো। এই ঈদটা আমাদের মুসলিমদের জন্য একটা বিশেষ ঈদ। রমজান শেষে তাকওয়া অর্জনের মাধ্যমে আমরা নিজেকে পরিশুদ্ধ করি। রমজান শেষে সবার প্রতি আমার প্রত্যাশা থাকবে, আমরা মানুষ হিসেবে যেন সবাই শুদ্ধ হই, সৃষ্টিকর্তার বিধি-বিধান মেনে চলি।
তিনি বলেন, পবিত্র ঈদুল ফিতর ধনী-গরিব, শ্রেণি-পেশা ও ধর্ম নির্বিশেষে সবার জীবনে সৌহার্দ্য, সহমর্মিতা, সহনশীলতা ও ভ্রাতৃত্বের বার্তা নিয়ে আসে। সব ভেদাভেদ ভুলে ঈদের দিনে সকল মুসলিম সাম্য, মৈত্রী ও সম্প্রীতির বন্ধনে মিলিত হই। ঈদুল ফিতর সবার মাঝে আত্মশুদ্ধি, উদারতা, নৈতিকতা ও মানবিক মূল্যবোধ জাগ্রত করে। পবিত্র মাহে রমজান থেকে আত্মশুদ্ধি ও সংযমের শিক্ষা গ্রহণ করে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, উদার ও মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় সবাই যেন এগিয়ে আসে সেই প্রত্যাশা রাখছি।
বাকৃবি উপাচার্য বলেন, আমি যেন সততা এবং দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করতে পারি, সবার কাছে এই দোয়া চাইবো। ঈদের দিন ক্যাম্পাসে যারা অবস্থান করবেন তাদের সবার ঈদের নামাজ শেষে উপাচার্যের বাসভবনে মিষ্টি খাওয়ার দাওয়াত থাকবে। এসময় সবার সাথে আলিঙ্গন করা হবে। সেটির জন্য আমি অপেক্ষায় থাকবো। আশা করছি, ঈদের দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক-কর্মকর্তারা আসবেন। তাদের সাথে কুশল বিনিময় করা হবে।
তিনি বলেন, পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ আইইউটির কেন্দ্রীয় মসজিদে আদায় করার পরিকল্পনা রয়েছে। এরপর একাধিক রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ রয়েছে। পবিত্র ঈদুল ফিতর আইইউটির বিদেশি শিক্ষার্থীদের সঙ্গেও উদযাপন করবো। তারা পরিবার রেখে লেখাপড়ার জন্য এখানে অবস্থান করছেন। আমি তাদের (বিদেশি শিক্ষার্থী) অভিভাবক হিসেবে রাতের খাবার তাদের সঙ্গে গ্রহণ করবো। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও শিক্ষক-কর্মকর্তারাও যোগ দেবেন।
অধ্যাপক আবদুস সালাম বলেন, আমার একটা রক্তের সম্পর্কের আত্মীয়স্বজন এবং আরেকটি বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে ইবি পরিবারের লোক আমার আপন। তবে আমার ফিজিক্যাল সত্তা একটি। তাই যেখানেই ঈদ করি নামাজ পড়েই অন্য জায়গার কি অবস্থা খোঁজখবর নেই। আমি ক্যাম্পাসে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত আছি। ঈদের পরে প্রথম খোলার দিনেই ডাক্তার দেখাতে হবে। এজন্য এবার ঢাকাতেই ঈদ করার সম্ভাবনা বেশি।