আলোচনায় ঢাবির কার্জন হলের নামাজ, চারুকলার রং উৎসব
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কার্জন হল চত্বরে নামাজরত অবস্থায় এবং চারুকলা অনুষদ প্রাঙ্গণে রং খেলায় মেতে ওঠার দুটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। একই বিশ্ববিদ্যালয়ে দুটি ভিন্ন ভিন্ন আয়োজন নিয়ে নেটিজেনদের কেউ করছেন প্রশংসা, আবার কেউ করছেন সমালোচনা।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) কার্জন হলের সামনে খোলা মাঠে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন ঢাবি শাখা। একইসঙ্গে সেখানে ‘আদর্শ সমাজ বিনির্মাণে মাহে রমজানের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ইফতার শেষে সেখানে খোলা মাঠেই নামাজ আদায় করেন উপস্থিত নেতাকর্মীরা।
একইদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়েছে রং উৎসব। প্রতিবারের মতো এবারও প্রিয়জনদের সঙ্গে রং খেলায় মেতে ওঠে অনুষদটির শিক্ষার্থীরা। এসময় বন্ধু-বান্ধবী ও সহপাঠীদের গায়ে-মুখে রং মেখে মেতে উঠেন শিক্ষার্থীরা।
নেটিজেনরা বলছে, কার্জন হল চত্বরে নামাজ পড়াটা লোক দেখানো ইবাদত। কেননা ওখানে ১০০ গজের মধ্যে মসজিদ রয়েছে। অন্যদিকে, রমজান মানে চারুকলা অনুষদ প্রাঙ্গণে রং উৎসবে অংশ নিয়ে মুসলমানদের রোজায় সংযম কতটুকু হচ্ছে তা প্রশ্নের বিষয়।
ছবি দুটি শেয়ার দিয়ে ঢাবি ছাত্র জামাল হোসেন রুহানী লিখেছেন, সনাতন ধর্মাবলম্বী বন্ধুদের উৎসব হিসেবে হোলিতে আপত্তি নেই, বরং তা নির্বিঘ্ন করতে হবে। ক্যাম্পাসে নামাজ থাকবে, পূজা থাকবে, হোলিও হবে। যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে। তবে রং উৎসবকে যদি আমার উৎসব বলা হয়, আমি দ্বিমত করবো। মুসলিম হিসেবে আমার এমন কোনো উৎসব নেই। আমার উপর চাপিয়ে দেয়ারও সুযোগ নেই। যার যার উৎসব তার তার, পারস্পরিক সহযোগিতা-আন্তরিকতা সবার।
কার্জন হল চত্বরে নামাজরত অবস্থার ছবিটি শেয়ার করে ফেসবুকে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের সাবেক নেতা বশির ইবনে জাফর লিখেছেন, একটি ছবি শতাব্দীর অমানিশা দূর করে আলোর উপস্থিতি জানান দেয়। পদদলিত করে আধুনিকতার নামে সৃষ্ট সাংস্কৃতিক আগ্রাসন। ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাবি শাখার ইফতার মাহফিল পরবর্তী মাগরিবের নামাজ।
প্রবাসী বাংলাদেশি লেখক তসলিমা নাসরিন ছবিটি শেয়ার দিয়ে লিখেছেন, শুনলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্যু হয়েছে। বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ সরকার এবং মাদ্রাসা গোষ্ঠীর যৌথ উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়কে হত্যা করেছে। এর জানাজার ছবি ফেসবুকে ভাইরাল। আমিও একটি কালেক্ট করলাম। কবরের কিছু মাটি গণভবন, বঙ্গভবন আর সংসদ ভবনের মাথায় ছিটিয়ে দিয়ে এলে বেশ হয়। একটি ভয়াবহ মৃত্যুর সাক্ষী হয়ে রইল তারা।
আর প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন লিখেছেন, লোক দেখানো যে কোনো কিছুই খারাপ। নামাজের সময় হলে, যেকোনো জায়গায় নামাজ আদায় করা যায়। তবে, কাছে মসজিদ থাকলে সেখানেই আমরা নামাজ পড়তে যাই। এই যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুসুল্লি ভাইয়েরা নামাজ পড়ছেন, এর ১০০ গজের মধ্যে ৪০০ বছরের পুরানো কার্জন হল মসজিদ। ৫০০ গজের মধ্যে ডানে-বামে আরো তিনটি মসজিদ আছে। আল্লাহর ঘরে না গিয়ে, কেন ওনাদের খোলা মাঠে নামাজ আদায় করতে হচ্ছে? এখানে কি সাওয়াব বেশি হবে?