বাস আটকে চাঁদা আদায় জাবি ছাত্রলীগের, বহিষ্কার ‘নিরপরাধ শিক্ষার্থী’!
সম্প্রতি বাস আটকিয়ে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে। তবে এ ঘটনায় ভুক্তভোগী এক নিরপরাধ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের সুপারিশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় ডিসিপ্লিনারি বোর্ড (শৃঙ্খলা কমিটি) ।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলমের সভাপতিত্বে শৃঙ্খলা কমিটির এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (সাময়িক দায়িত্ব প্রাপ্ত) ও ডিসিপ্লিনারি বোর্ডের (শৃঙ্খলা কমিটি) সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. আলমগীর কবির এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২৫ মার্চ গ্রামের বাসা যাওয়ার উদ্দেশ্যে টিকেট কাটতে নবীনগর যান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ৪৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী সজীব মন্ডল। সেখানে গাইবান্ধা রুটে চলাচলকারী আলহামরা পরিবহণ একহাজার টাকার ভাড়া দ্বিগুণ চাইলে ঐ শিক্ষার্থী অতিরিক্ত ভাড়া দিতে অস্বীকার করেন এবং একপর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে সেখানে তার সাথে বাকবিতণ্ডা হয় এবং তর্কবিতর্কের এক পর্যায়ে তাকে মারধর করা হয় বলে দাবি করেন ঐ শিক্ষার্থী। পরবর্তীতে ঐ শিক্ষার্থী বিষয়টি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের বন্ধুদের জানালে ঐ হলের সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেইরি গেট সংলগ্ন রাস্তায় আলহামরা পরিবহনের একটি বাস আটক করেন।
কিন্তু পরবর্তীতে এই ঘটনাকে পুঁজি করে মারধরের অভিযোগ তুলে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা বাস কোম্পানির কাছ থেকে ৩৫ হাজার টাকা চাঁদা নিয়ে বাস ছেড়ে দেন বলে জানা যায়।
ঘটনাস্থলে থাকা ছাত্রলীগের একটি অংশ জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মাজেদুল ইসলাম সজীব, মাহমুদ আল গাজ্জালী, মো. হাসান মাহমুদ ফরিদ ও উপ-কর্মসংস্থান সম্পাদক নাহিদ ফয়সাল সহ ছাত্রলীগের অনেকে সেখানে উপস্থিত ছিলেন ।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সজীব মণ্ডল বলেন, আমি শুধু হলের বন্ধুদের জানিয়েছি, সেখানে কেউ রাজনীতি করে কি করে না, সে বিষয়ে আমি কিছু জানি না এবং আমি নিজেও কখনো রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলাম না।
তিনি আরও বলেন, বহিষ্কারের বিষয়টি আমি জানি না। আমাকে অফিসিয়ালি এ বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (সাময়িক দায়িত্বে) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলমগীর কবির বলেন, ঘটনাটি সজিবকে কেন্দ্র করে সংগঠিত হয়েছে বিধায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যমান শৃঙ্খলাবিধি অনুযায়ী তাকে সাময়িক বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে ৪ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির মাধ্যমে দোষীদের শনাক্ত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত শৃঙ্খলাবিধি অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এতে সজিবের কোনো দায় না পাওয়া গেলে তার সাময়িক বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হবে।