অন্যায় দেখে কখনও পিছিয়ে যাননি বঙ্গবন্ধু: অধ্যাপক মশিউর রহমান
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান বলেছেন, ছোটবেলা থেকেই বঙ্গবন্ধুর মধ্যে মনুষ্যপ্রেম ও নেতৃত্বগুণ বিকশিত হয়েছিল। সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধের আন্দোলনে তিনি ছিলেন অগ্রগামী। এরই ধারাবাহিকতায় এই বাংলার স্বাধীনতার জন্য তিনি সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মদিন ও শিশুদিবস উপলক্ষে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) আয়োজিত বিশেষ আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান বলেন, ভাষা আন্দোলন থেকে একাত্তরে স্বাধীনতা সব জায়গায় তিনি ছিলেন অগ্রগামী। কখনও অন্যায় দেখে বঙ্গবন্ধু পিছিয়ে যাননি। যদি আজকে শিক্ষার্থীরা বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে তার রাজনৈতিক আদর্শ, তার দর্শন সম্পর্কে জানতে পারে তবে কখনো তারা পথভ্রষ্ট হবে না। অনৈতিক কাজ করতে পারবে না। মানুষকে ভালোবাসতে হয় কীভাবে তার আদর্শ দৃষ্টান্ত হলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ১৯৭৫ সালে এদেশের কিছু বিপথগামী মানুষ দেশকে পিছিয়ে দিতেই তারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে। তারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে শুধু বাংলার অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে না বরং তারা সমগ্র বিশ্বের তৃতীয় অর্থনৈতিক বিপ্লবকে বাধাগ্রস্ত করেছে। এই বিপথগামী মানুষেরা চীন, পাকিস্তান এবং আমেরিকার দোসর হিসেবে কাজ করছে। তবে আজ স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর বঙ্গবন্ধুকন্যা তাঁর আদর্শকে ধারণ করেই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর। সকল প্রতিবন্ধকতা দূর করেই তিনি বাংলাদেশকে সোনার বাংলাদেশ গড়তে বদ্ধ পরিকর।
রবিবার (১৭ মার্চ) বিকালে জহির রায়হান মিলনায়তনের সেমিনার কক্ষে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন বশির আহমেদের সভাপতিত্বে এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাবি উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম বলেন, বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশ এক ও অভিন্ন। বঙ্গবন্ধুকে ছাড়া বাংলাদেশ কল্পনা করা যায় না। বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাংলাদেশ হতো না। আজকের এই দিনেই বঙ্গবন্ধু জন্ম নিয়েছিলেন বলেই আমরা আজকে বাংলায় কথা বলতে পারছি, বাংলাদেশকে পেয়েছি।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু সবসময় বাংলাদেশের মানুষের ভাল চেয়েছেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে স্কুল কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছেন, শিক্ষকদের রেশনের ব্যবস্থা করেছেন। কিন্তু তবুও কিছু ক্ষমতালোভী মানুষ বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে দেশকে পিছিয়ে দিয়েছিল। তারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে মূলত এই দেশকেই পিছিয়ে দিতে চেয়েছিল কিন্তু তারা তা করতে ব্যর্থ হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা পিতার অসমাপ্ত দায়িত্বকে কাঁধে নিয়ে একের পর এক মেগাপ্রজেক্ট বাস্তবায়ন করে দেশকে উন্নত করায় বদ্ধ পরিকর।
আলোচনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু হাসানের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক শেখ মো মনজুরুল হক, উপ-উপাচার্য শিক্ষা অধ্যাপক মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. রাশেদা আখতার প্রমুখ।
এর আগে, এদিন সকাল ১০ টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মদিন উপলক্ষে উপাচার্যের নেতৃত্বে আনন্দ শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। শোভাযাত্রাটি শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়ে বঙ্গবন্ধু হলের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
আনন্দ শোভাযাত্রায় কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. রাশেদা আখতার, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, রেজিস্ট্রার আবু হাসান, আবাসিক হল সমূহের প্রভোস্ট, প্রক্টর, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান, বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষক, অফিসার এবং কর্মচারীগণ অংশগ্রহণ করেন। আনন্দ শোভাযাত্রা শেষে উপাচার্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সম্মুখে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন। এছাড়াও এদিন চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা সহ নানা আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়।