০৬ মার্চ ২০২৪, ২০:৫৭

ধূমপান নিয়ে রাবি ছাত্রলীগের দুই পক্ষের হাতাহাতি

ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের হাতাহাতি  © সংগৃহীত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতা-কর্মীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখ্শ হলগেটে এ ঘটনা ঘটে। 

এ সময় ছাত্রলীগের এক পক্ষের নেতা-কর্মীদের হাতে রড ও লাঠিসোঁটা দেখা গেছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন হলে অবস্থানরত ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা। তবে ছাত্রলীগের দুই শীর্ষ নেতার দাবি, বিষয়টি দুই হলের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ঝামেলা। তাঁরা সেটি সমাধান করেছেন। 

ঘটনায় জড়িত সভাপতির অনুসারীরা হলেন আল ফারাবী (মাদার বখ্শ হলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা), তানভীর আহমেদ প্রমুখ। অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীরা হলেন সাজিদ (জিয়াউর রহমান হলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা), মিশকাত হাসান (মাদার বখ্শ হলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা) ও তাদের অনুসারীরা। এদের মধ্যে আল ফারাবী ফাইন্যান্স বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী, মিশকাত হাসান হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্যব্যবস্থা বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী, তানভীর আহমেদ আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের এবং সাজিদ ফলিত রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী। 

প্রত্যক্ষদর্শী ও ছাত্রলীগের একাধিক বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ জিয়াউর রহমান হলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা সাজিদের এক ছোটভাই (জুনিয়র) তার বান্ধবীকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের পুকুর পাড়ে বসেছিলেন। তাদের অপর পাশেই বসে ধূমপান করছিল মাদার বখ্শ হল ছাত্রলীগের কর্মী তানভীর আহমেদ ও তার এক বড়ভাই। ধূমপানের ধোঁয়ায় অস্বস্তি অনুভব করলে তাদেরকে ধূমপান করতে নিষেধ করেন সাজিদের সেই ছোটভাই। এর প্রতিক্রিয়ায় তাদের সাথে চোখ রাঙিয়ে কথা বলেন তানভীর। পরে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয় এবং এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

পরবর্তীতে বান্ধবী নিয়ে বসা ওই শিক্ষার্থী ঘটনাস্থল ত্যাগ করে জিয়া হল ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা সাজিদকে ফোন দেন। এরপর সাজিদ তার অনুসারীদের নিয়ে মাদার বখ্শ হলের দিকে আসেন। অপরদিকে তানভীর মাদার বখ্শ হলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা আল ফারাবীকে ডেকে নেন। উভয় পক্ষের নেতাকর্মীরা হল গেটে আসলে তাদের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। একপর্যায়ে ফারাবী ও তার অনুসারীরা হল থেকে রড ও লাঠিসোঁটা নিয়ে হল গেটে এসে সাজিদ ও তার অনুসারীদের মারতে উদ্যত হয়। কিন্তু ঘটনাস্থলে উপস্থিত মাদার বখ্শ হল শাখা ছাত্রলীগের আরেক দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ও সাধারণ সম্পাদকের অনুসারী মিশকাত হাসানসহ অন্যান্যরা তাদেরকে প্রতিহত করেন।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব বলেন, ‘দুই হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঝামেলা হয়েছিল। এটা নিয়ে সেখানে হট্টগোল লেগেছিল। দুই হলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা সেটা ছাড়িয়ে দিয়েছিল। খবর পেয়ে আমি সেখানে গিয়ে এক মিনিটের মধ্যে সবাইকে ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে বলি। পরে সেটি মীমাংসা করে দিয়েছি।’ তবে ঘটনাস্থলে দেশীয় অস্ত্র প্রদর্শনের বিষয়টি জানেন না বলে জানিয়েছেন তিনি। 

রাবি ছাত্রলীগ সভাপতি বাবু বলেন, দুই হলের সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছোট ঝামেলা হয়েছিল। তাৎক্ষণিক মীমাংসা করে দিয়েছি। সাধারণ সম্পাদক গালিব বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে এক মিনিটের মধ্যে সবাইকে স্থান ছাড়তে বলি এবং বিষয়টি মীমাংসা করে দিয়েছি।

মাদার বখ্শ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক শামীম হোসেন বলেন, ছাত্রলীগের দু’পক্ষে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়েছে।