জাবিতে দুই হলের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, মসজিদসহ একাধিক রুম ভাংচুর
দেয়াল অপসারণ নিয়ে
- জাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৫ মার্চ ২০২৪, ১১:১৩ PM , আপডেট: ০৫ মার্চ ২০২৪, ১১:১৮ PM
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শেখ রাসেল হল ও শহীদ রফিক-জব্বার হলের মধ্যবর্তী দেয়াল অপসারণ নিয়ে দুই হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধেছে। এতে শহীদ রফিক জব্বার হলের শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে শেখ রাসেল হলের মসজিদসহ কয়েকটি রুম ভাঙচুর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অপরদিকে ঢিল ছোঁড়ার পাল্টা অভিযোগ করেছেন শহীদ রফিক জব্বার হলের শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (৫ মার্চ) রাত রাত ৯টার দিকে এ সংঘর্ষ শুরু হয়। এ প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত সংঘর্ষ চলার কথা জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও হলগুলোর অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার বিকেলে দেয়াল অপসারণের দাবিতে হল প্রভোস্ট ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর শিক্ষার্থীদের স্বাক্ষরসহ স্মারকলিপি জমা দেওয়ার প্রস্তুতি নেয় শেখ রাসেল হলের শিক্ষার্থীরা। বিষয়টি জানতে পেরে দেয়ালে বঙ্গবন্ধুর চিত্রকর্ম আঁকার প্রস্তুতি নেয় শহীদ রফিক জব্বার হল। এটি জানতে পেরে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে শেখ রাসেল হলের শিক্ষার্থীরা।
পরে শহীদ রফিক জব্বার হলের শিক্ষার্থীরা চিত্রকর্ম আঁকার জন্য দেয়ালের কাছাকাছি পৌঁছালে তাদেরকে ফেরত পাঠানো হয়। কিন্তু এরই মধ্যে শহীদ রফিক জব্বার হলের শিক্ষার্থীরা ইট-পাটকেল মেরে শেখ রাসেল হলের মসজিদসহ কয়েকটি কক্ষ ভাঙচুর করে। এরপর ঘটনাস্থলে প্রক্টরিয়াল টিম উপস্থিত হলে দু’পক্ষকে শান্ত হওয়ার আহ্বান জানান।
পরবর্তীতে দীর্ঘদিন দেয়াল অপসারণের দাবি জানিয়ে আসলেও দাবি না পূরণ হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে ক্ষোভ প্রকাশ করে। এরপর পুনরায় দু’পক্ষের মধ্যে ইট পাটকেল বিনিময় শুরু হয়। পরে শহীদ রফিক জব্বার হলের শিক্ষার্থীরা পার্শ্ববর্তী কাজী নজরুল ইসলাম হলের তালা ভেঙ্গে ছাদে উঠে শেখ রাসেল হলের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য ইট পাটকেল ছোঁড়েন।
এ বিষয়ে শেখ রাসেল হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক তাজউদ্দীন শিকদার বলেন, আমি একটা ব্যক্তিগত কাজে ঢাকায় অবস্থান করছিলাম৷ এখন হলে এসেছি। আমার শিক্ষার্থীদের শান্ত থাকার জন্য বলেছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমরা চেষ্টা করছি।
শহীদ রফিক জব্বার হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক শাহেদ রানা বলেন, আমি হলে অবস্থান করছি। এ বিষয়ে এখনই কিছু বলতে পারবো না।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, আমি খবর পাওয়ার প্রক্টরিয়াল টিমকে নিয়ে ঘটনাস্থলে চলে এসেছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে হল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমরাও সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।
হল বন্ধ থাকার পরও হলের ভেতরে ঢুকে শিক্ষার্থীদের ইট পাটকেল ছোঁড়ার বিষয়ে কাজী নজরুল ইসলাম হলের প্রভোস্ট আব্দুল্লা হেল কাফি বলেন, আমাকে যেহেতু হল বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারবো না।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বছরের জানুয়ারি মাসে অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্মিত ৬টি হলের মধ্যে মেয়েদের ১ টি ও ছেলেদের ১ টি আবাসিক হল খুলে দেওয়া হয়। এসময় ছেলেদের নতুন হল (শেখ রাসেল হল) সংলগ্ন শহীদ রফিক জব্বার হলের কিছু ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী কয়েকটি দাবির কথা তুলে রাতারাতি দেয়াল উঠিয়ে দেন। এতে বিপাকে পড়েন শেখ রাসেল হলের প্রায় হাজারখানেক শিক্ষার্থী। তাদের অভিযোগ, হল ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকবার লিখিত ও মৌখিকভাবে দাবি-দাওয়া তুলে ধরার পরও দেয়াল অপসারণ বা ছোট ফটক তৈরি এর কোনোটাই সম্ভব হয় নি। এ কারণে শিক্ষার্থীদের অনেক দূর ঘুরে ঘুরে চলাচল করতে হচ্ছে।