চবির ভর্তি ফরম বিক্রির ২৩ কোটি টাকা ভিসি শিক্ষক ও ছাত্রলীগের মধ্যে ভাগাভাগি: চুন্নু
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ভর্তি ফরম বিক্রির ২৩ কোটি টাকা ভিসি, প্রো ভিসি, শিক্ষক ও ছাত্রলীগের মধ্যে ভাগাভাগি হয়ে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয় ফান্ডে জমা হয়নি। প্রতি বছর যদি এ রকম হয়, তাহলে দেশটা কীভাবে চলছে? এমন প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ ও জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু।
রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে অনির্ধারিত আলোচনায় তিনি এ প্রশ্ন তোলেন। এ সময় ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।
চুন্নু বলেন, চবিতে এবারের সেশনে ভর্তি ফরম বিক্রির ২৩ কোটি টাকা ভিসি, প্রো ভিসি, শিক্ষক ও ছাত্রলীগের মধ্যে ভাগাভাগি হয়ে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয় ফান্ডে জমা হয়নি। প্রতি বছর যদি এ রকম হয় তাহলে দেশটা কীভাবে চলছে? ভাবতেই পারি না। আমি শিক্ষামন্ত্রীকে বলব... এটা যদি সত্যি হয়ে থাকে তাহলে এটা একটি গুরুতর অপরাধ। এটা দেশের মানুষকে আপনি জানান। আমি আপনার কাছে জানতে চাই এ কী করে সম্ভব?
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বছর (২০২৪) ভর্তি ফরম বিক্রি করে ২১ কোটি ৯১ লাখ টাকা আয় হয়েছে। সার্ভিস চার্জসহ মোট আয় ২৩ কোটি টাকা। গত বছর এ আয় ছিল ১৭ কোটি ১৪ লাখ টাকা। ফরম বিক্রির এই টাকা উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যসহ শিক্ষকরা ভাগ বাটোয়ারা করে নেন। ছাত্রলীগও অতীতের মতো এই টাকার ২ শতাংশ ভাগ চেয়েছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শিরীন আখতারের দায়িত্বের ইতোমধ্যে চার বছর পূর্ণ হয়েছে, যেকোনো সময় উপাচার্য পদে পরিবর্তন আসতে পারে। ছাত্রলীগের ধারণা, উপাচার্য পরিবর্তন হলে এই ফর্ম বিক্রির টাকার ভাগ পাওয়াটা অনিশ্চিত হয়ে যাবে। তাই তারাও টানা সংগ্রামে মনোযোগী হয়েছে।
তিনি বলেন, চবির এক দ্বায়িত্বশীল সূত্র জানায়, উপাচার্য শিরীন আখতারের নানাবিধ বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে নতুনভাবে তিনি আর দ্বায়িত্ব পাচ্ছেন না এটা চূড়ান্ত। প্রশাসনও তাই ছাত্রলীগের সঙ্গে ভাগ বাটোয়ারার কোনো আপসে যাচ্ছে না। উপাচার্য পদ নিশ্চিত না হলে শিরীন আখতার আর টাকা দিতে নারাজ। প্রতি বছর ভর্তির টাকার ভাগ নেওয়ার জন্য ছাত্রলীগ ক্যাম্পাস উত্তপ্ত রাখে। এই বছরও তার ব্যতিক্রম নয়।
জাপা মহাসচিব বলেন, ২১ কোটি ৯১ লাখ ভর্তি পরীক্ষার টাকার দুই শতাংশ ছাত্রলীগ চায়, সেই টাকা দাঁড়ায় ৪৩ লাখ। তারা বলছে, আরও সাত লাখ টাকা বাড়িয়ে তাদেরকে ৫০ লাখ টাকা দিতে হবে। চবিতে ভর্তি পরীক্ষার টাকা কোনোদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফান্ডে যায় না, মারাত্মক কথা, এটা কোন দেশ! এবারেও ২১ কোটি ৯১ লাখ, গত বছর ১৭ কোটি ৪০ লাখ টাকা, এত টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টে জমা হয় না। এটা আইনের চরম লঙ্ঘন, চরম অন্যায়।