ফেসবুকে ঢাবির শিক্ষিকা পরিচয়ে প্রতারণা, আসামিকে পুলিশে দিলেন হাইকোর্ট
ফেসবুকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষিকা পরিচয়ে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে করা মামলার আসামিকে জামিন দেননি হাইকোর্ট। আসামি শরীফুল ইসলামকে তুলে দেওয়া হয়েছে পুলিশের হাতে। মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) আগাম জামিন চাইতে হাজির হলে বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
প্রতারক চক্রের ফাঁদে পড়ে ৬ লাখ টাকা খুইয়ে সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা করেছিলেন খুলনার মৌলভী পাড়ার মোমিনুল ইসলাম। মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০২২ সালের ২৬ মে আসামি ড. ফাতিমাতুজ জোহরার পরিচয়ে ভুয়া ফেসবুক আইডি থেকে মোমিনুল ইসলামকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠানো হয়। তিনি সরল বিশ্বাসে তা গ্রহণ করেন। পরে মায়ের মৃত্যুর কথা বলে ১ লাখ ৩২ হাজার টাকা পাঠাতে বলেন। বাদী নগদে ও বিকাশে ওই টাকা পাঠান। এছাড়া ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানির পরিচালকের পদ পেতে হলে বাদীকে সাড়ে ৫ লাখ টাকা দিতে বলেন। বাদী রাজশাহীর ইসলামী ব্যাংকের শাখায় ওই টাকা পাঠান। আর কোম্পানির চুক্তিপত্রে স্বাক্ষরের জন্য তাঁকে ঢাকায় আসতে বলা হয়।
এদিকে গত বছরের ৬ জুন ঢাকায় গিয়ে আসামিদের উল্লিখিত ঠিকানায় না পেয়ে মোবাইলে ফোন করেন মোমিনুল। এ সময় একজন ফোন রিসিভ করে বলেন যে, তারা ড. জোহরাকে অপহরণ করেছে। ২০ লাখ টাকা দিলে ছেড়ে দেবে। পরে বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করেন মোমিনুল। আর বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ হলে পরদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগে গিয়ে জানতে পারেন ওই নামের কোনো নারী শিক্ষক নেই সেখানে। পরে খুলনায় ফিরে গিয়ে সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন তিনি। যেখানে নিজেকে তিনি অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে উল্লেখ করেন। মামলায় তিনজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৪ জনকে আসামি করা হয়।
আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কেএম মাসূদ রুমি বলেন, যার ব্যাংক হিসাবে টাকা দেওয়া হয়েছে সেই তিন নম্বর আসামি শরীফুল ইসলাম আগাম জামিনের জন্য এসেছিলেন। আসামি তাঁর ব্যাংক হিসাবে টাকা গ্রহণের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। আদালত বলেছেন, যেহেতু এটি সংঘবদ্ধ চক্র। তাঁকে আগাম জামিন দেওয়ার সুযোগ নেই। এই ধরনের প্রতারক চক্রের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া প্রয়োজন। পরে তাঁকে শাহবাগ থানা-পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন এবং খুলনার মামলায় গ্রেপ্তার দেখাতে বলা হয়েছে।