ধর্ষকদের ক্যাম্পাসে ঠাঁই নাই: জাবিতে চলছে বিক্ষোভ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) দম্পতিকে ডেকে এনে স্বামীকে আটকে রেখে ধর্ষণের ঘটনায় টানা চতুর্থ দিনের মতো প্রতিবাদ অব্যাহত রেখে বিক্ষোভ মিছিল করেছে 'নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চ'।
বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুর দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুরাদ চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন তারা। মিছিলটি রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
মিছিলে 'মোস্তাফিজ-জনি ভাই ভাই , ক্যাম্পাসে ওদের ঠাঁই নাই' ধর্ষকদের ফাঁসি চাই, অছাত্রদের বহিষ্কার করো' 'ধর্ষণের পৃষ্ঠপোষক, রাজনীতিকে প্রতিহত করো 'সহ বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে দেখা যায়।
এসময় তারা নিপীড়ন মুক্ত ক্যাম্পাস নিশ্চিত ও দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে ৪ দফা দাবি তুলে ধরেন। তাদের দাবিগুলো হলো-ধর্ষণকান্ডে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত, মেয়াদোত্তীর্ণ অছাত্রদের হল থেকে বের করে গণরুম বিলুপ্ত, যৌন নিপীড়ক শিক্ষক মাহমুদুর রহমান জনির বিচার নিষ্পত্তি ও ধর্ষণ ঘটনায় সহায়তাকারী প্রক্টর ও মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রভোস্টের অপরাধ তদন্ত করে তাদের প্রশাসনিক পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান।
ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের আহ্বায়ক আলিফ মাহমুদ বলেন, চার দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চের আন্দোলন চলমান থাকবে। প্রভোস্ট এবং প্রক্টরকে অব্যাহতি দিতে হবে। জাবির শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের যে দাবি 'মাহমুদুর রহমান জনির বিচার' তা কার্যকর হলে নিপীড়নের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগরের যে ঐতিহাসিক অবস্থান তা দেশের কাছে পরিস্ফুটিত হবে। মাহমুদুর রহমান জনির এজেন্ডা উত্থাপন ব্যতীত আজকের মত আর কোনো সিন্ডিকেট সভা আমরা অনুষ্ঠিত হতে দিবো না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক পারভীন জলি বলেন, আজ বিশ্ববিদ্যালয়ে সিন্ডিকেট সভা ছিল। আপনারা হয়ত জানেন না কেন সিন্ডিকেট সভা স্থগিত হয়েছে। আমি উপাচার্যের কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই, প্রশাসন যৌন নিপীড়ক শিক্ষক মাহমুদুর রহমান জনিকে কেন সাময়িক বহিষ্কার করে নি? প্রশাসন চাইলেই পারতো তাকে সাময়িক বহিষ্কার করতে। কিন্তু আমরা ধরে নিচ্ছি আপনি তাকে ভয় পান, কারণ তিনি একটা ছাত্রসংগঠনের সভাপতি ছিলেন । এজন্য এখন পর্যন্ত তাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয় নি। ধর্ষক মোস্তাফিজের পালিয়ে যেতে যারা সাহায্য করেছে,তার দায় প্রক্টর এড়াতে পারেন না। অথচ প্রক্টরের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি,আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য, শনিবার জাবির মীর মশাররফ হোসেন হলে বহিরাগত এক ব্যক্তিকে আটকে রেখে তার স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। রাত সাড়ে ৯টার দিকে হলসংলগ্ন জঙ্গলে ঘটা এই ঘটনায় অভিযুক্ত প্রধান আসামি ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুরকে পরদিন সকালে সাভারের একটি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে দাবি করে পুলিশ। আর শনিবার রাতেই ধর্ষককে পালাতে সাহায্যকারীরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযুক্তরা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ছাত্র সাগর সিদ্দিকী ও হাসানুজ্জামান, শাহ পরান, মুরাদ এবং উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র সাব্বির হাসান।