ধর্ষকের বিচার না হলে ‘ভিসি পতন’ আন্দোলনে যাবেন জাবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) আবাসিক হলে স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের তৃতীয় দিনে এসে জড়িতদের ধর্ষক-নিপীড়কদের বিচার না হলে ‘উপাচার্য পতন’ আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনের সড়কে ‘নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চ’ এর ব্যানারে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে এ ঘোষণা দেন আন্দোলনকারীরা। এসময় ধর্ষণ ও নিপীড়ন-মুক্ত নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিও জানানো হয়৷
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে নিষ্ক্রিয় ও নির্বিকার আখ্যা দিয়ে দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, আমরা এমন একজন উপাচার্যকে পেয়েছি যিনি নিষ্ক্রিয় ও নির্বিকার। ক্যাম্পাসে যত ঘটনা ঘটে এর প্রেক্ষিতে তিনি কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না৷ তিনি বড়জোর একটা নির্দেশ পাঠান কিন্তু এর কিছুই বাস্তবে ঘটে না৷ আমরা অছাত্রদের বের করার কথা বলেছি, তিনি শুধু নির্দেশ দিয়ে নির্বিকার হয়ে বসে আছেন।
এছাড়া ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা, অছাত্রদের হল থেকে বের করা,প্রক্টর অধ্যাপক আ স ম ফিরোজ উল হাসান ও মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক সাব্বির আলমের পদত্যাগ এবং যৌন নিপীড়নের দায়ে অভিযুক্ত পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান জনিকে চাকরিচ্যুত করার দাবি জানান উপস্থিত বক্তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী আ র ক রাসেল বলেন, ধর্ষণ ও ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা ঘটায় অবৈধ শিক্ষার্থীরাই। তারাই বিশ্ববিদ্যালয়ে গণরুম তৈরি করে বিকৃত যৌনাচারের দীক্ষা দেয়৷ গণরুমে নবীন শিক্ষার্থীদের উলঙ্গ করে পর্ন দেখানো হয়, তাঁদেরকে পর্ন কালচারে মধ্য ঢুকতে বাধ্য করা হয়৷ এই গণরুম সংস্কৃতির মাধ্যমে একসময় নবীন শিক্ষার্থীরাই পরবর্তীতে একেকজন ধর্ষক মোস্তাফিজ, মানিক হয়ে ওঠে।
মানববন্ধনে ইতিহাস বিভাগের পারভীন জলি বলেন, নিপীড়ক শিক্ষার্থী ও তাকে সহায়তাকারীদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে, অপরাধী ও অবৈধ এই শিক্ষার্থীর সদনপত্র ও ছাত্রত্ব বাতিল করতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয়কে নিজ ব্যয়ে বাদী হয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা লড়ে বিচার নিশ্চিত করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পাঁচ দিনের মধ্যে অবৈধ শিক্ষার্থীদেরকে হল থেকে বের করার আশ্বাস দিলেও এখনো কোন উদ্যোগ নেয়নি, ইতোমধ্যে তিনদিন পেরিয়ে গেছে। আমরা আগামী দুই দিনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো অবৈধ শিক্ষার্থীমুক্ত করার জোর দাবি জানাচ্ছি।
মানববন্ধনে অন্যান্যদের মধ্যে গোলাম রব্বানী, রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা, আইরিন আক্তার, নুরুল আলম, সোহেল আহমেদ, সোহেল রানা, মনোয়ার হোসেন তুহিন, রনি হোসাইন, বোরহান উদ্দীনসহ প্রায় ২০ জন শিক্ষক ও পঞ্চাশোর্ধ্ব সাধারণ শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।