জাবিতে ধর্ষণের ঘটনায় করা তদন্ত কমিটি ও দীর্ঘ সময় নিয়ে অসন্তোষ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় ক্ষোভে আন্দোলনে নেমেছে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা। রবিবার (৪ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং বিচারসহ বিভিন্ন দাবি নিয়ে আন্দোলন নামে তারা। তবে ধর্ষণের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের করা তদন্ত কমিটি ও সময়সীমা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
এরআগে ধর্ষণের ঘটনার তদন্তে চার সদস্যদের কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয় এতে।
তদন্ত কমিটির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক গোলাম রফিক বলেন, এই আন্দোলন চলছে, চলবে। আমরা কাওকে ক্ষমা করবো না। এই ঘটনা নিয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট নই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুগত ব্যক্তিদের কমিটিতে রাখা হয়েছে। চাইলেই যেখানে ৫ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দেয়া সম্ভব সেখানে তারা সর্বোচ্চ সময় ১৫ দিন নিয়েছে। আমরা প্রশাসনকে আহ্বান করবো আগামী ৭ দিনের মধ্যে এ তদন্ত কাজ শেষ করে চূড়ান্ত শাস্তি নিশ্চিত করুন। তদন্ত কমিটি যদি সততার সাথে রিপোর্ট না দেয় তাহলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামবো।
তিনি আরও বলেন, প্রশাসনের মদদে, শিক্ষকদের মদদে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে আড়াই হাজার অবৈধ শিক্ষার্থী বসবাস করছে। প্রশাসন জানিয়েছে আগামী ৫ কার্যদিবসের মধ্যে অবৈধ এবং অছাত্রদের হল থেকে বিতাড়িত করবেন। আমরা হুশিয়ার করে দিতে চাই এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যদি কোনোরকম টালবাহানা করা হয় আমরা জানি কিভাবে আন্দোলন চালিয়ে যেতে হয়। আমাদের অবস্থান কোনো দলের বিরুদ্ধে নয়, আমাদের অবস্থান ধর্ষকদের মদদদাতাদের বিরুদ্ধে, এই ক্যাম্পাসের অবৈধ ছাত্রদের বিরুদ্ধে, এই ক্যাম্পাসে শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করার পক্ষে, অবৈধ শিক্ষার্থীদের দ্বারা নির্যাতিতদের পক্ষে।
আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি বলেন, নির্যাতিত নারীর স্বামীকে যে হলে আটকে রাখা হয়েছে এর দায় হল প্রশাসন এড়াতে পারেন না। হল ক্যাম্পাসের বাইরে যে ঘটনা ঘটেছে এর দায় প্রক্টরিয়াল টিম এড়াতে পারেননা, সর্বোপরি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এড়াতে পারেন না। নিপীড়নকারী যে পালাতে পারলো এর দায় যাদের তাদের বিচার করতে হবে। হল প্রশাসন এবং প্রক্টরিয়াল টিমেরর বিচার আজ সিন্ডিকেটে হয়নি এটা অবশ্যই হওয়া উচিত ছিলো।
এদিকে ধর্ষণের অভিযোগে আশুলিয়া থানার মামলায় গ্রেফতার ছাত্রলীগ নেতা মোস্তাফিজুরসহ চার আসামির তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রবিবার ঢাকার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাবেয়া বেগমের আদালত তাদের এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে নেয়া অপর আসামিরা হলেন- সাব্বির হাসান, সাগর সিদ্দিক ও হাসানুজ্জামান। এদিন তাদেরকে আদালতে হাজির করে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক মিজানুর রহমান। অপরদিকে আসামি পক্ষে রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে শুনানি করা হয়।