যৌন হেনস্তার অভিযোগে চবি অধ্যাপকের বহিষ্কার দাবি শিক্ষার্থীদের
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) রসায়ন বিভাগের অধ্যাপকের বিরুদ্ধে একই বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানি ও ধর্ষণচেষ্টার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এ সময় ওই অধ্যাপকের বহিষ্কার দাবি করেন শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনার ও প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় দুর্জন বিদ্বান হলেও পরিত্যাজ্য; স্থায়ী বহিষ্কার চাই; raise voice Against sexual assuault; যৌন নিপীড়কের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায় তাদের।
ভুক্তভোগীর সহপাঠী মো.সাজিদ বলেন, আমাদের দাবি এই শিক্ষককে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের করে দেওয়া হোক। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা করুক আমরা এটা চাই। ভবিষ্যতে যেন আমাদের বিভাগে এমন ঘটনা করার সাহস না পায় তার দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। আমাদের সহপাঠীর সাথে যে আচরণ হয়েছে তার সুষ্ঠু বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী ইশরাত বলেন, এমন অপরাধ আরও আগে থেকে হয়ে আসছে। কেউ আত্মসম্মানের ভয়ে সাহস করে কোনো অভিযোগ করেনি। কিন্তু আপু অভিযোগ করেছে। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয় এমন একটা শাস্তির আয়োজন করবে তার নজির সারাজীবন থাকবে। যেন কেউ কোনোদিন এমন জঘন্য কাজ করতে না পারে।
এ সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. সজীব ঘোষ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নির্যাতন সেলে এই বিষয়টি তোলা হবে। এটি সুপ্রিম সেল। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী এখানে থাকে। তোমরা আমার সন্তানতুল্য। এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা যেন আর কারও সাথে না ঘটে সেই বিষয়ে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
এর আগে গতকাল ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ দেয় অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী জানান, ‘থিসিস চলাকালীন সময়ে আমার সুপারভাইজার কর্তৃক যৌন হয়রানি ও নিপীড়নের শিকার হই। থিসিস শুরুর পর থেকে তিনি আমার সঙ্গে বিভিন্ন যৌন হয়রানিমূলক; যেমন-জোর করে হাত চেপে ধরা, শরীরের বিভিন্ন অংশে অতর্কিত ও জোরপূর্বক স্পর্শ করাসহ অসংগত ও অনুপযুক্ত শব্দের ব্যবহার করেছেন। এছাড়া কেমিক্যাল আনাসহ আরও বিভিন্ন বাহানায় তিনি আমাকে তার রুমে ডেকে নিয়ে জোরপূর্বক জাপটে ধরতেন।’
পরে চবি প্রশাসন যৌন হয়রানি বিরোধী সেলের প্রধান অধ্যাপক ড. জারিন আক্তারের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। সেলের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত এবং ভুক্তভোগী দুজনের সাথেই আলোচনার জন্য ডাকা হয়েছে।