নাটক আমাদের সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার: রাবি উপাচার্য
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেছেন, নাটক আমাদের সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার। আমাদের মনোজাগতিক পরিবর্তনে বাঙালির যে লুকায়িত সাহিত্য-সংস্কৃতি তা যদি আমরা গথিত করতে পারি, তাহলে আমার মনে হয় আমরা আবার ফিরে আসতে পারব আমাদের বাঙালির সংস্কৃতিতে। যা বিশ্বে অনন্য প্রাচীনতম সংস্কৃতি।
সোমবার (২৯ জানুয়ারি) রাবির সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজী ভবনের সামনে দ্বিতীয়বারের মতো শুরু হওয়া দুই দিনব্যাপী ‘আনর্ত নাট্যমেলা’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
রাবিতে আয়োজিত এই নাট্যমেলায় বাংলাদেশের পাশাপাশি অংশ নিয়েছেন ভারত থেকে আসা অসংখ্য নাট্যকার। মেলাটি উদ্বোধন করেন প্রখ্যাত বাংলাদেশি নাট্যকার, অভিনেতা ও নাট্য পরিচালক মামুনুর রশীদ।
মেলা উদ্বোধনকালে মামুনুর রশীদ বলেন, নাট্যকর্মী এবং তাদের প্রতিনিধিদের উপস্থিতি আজকের এই শীতের সকালকে উষ্ণ করে দিয়েছে। কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ দূরদূরান্ত থেকে নাট্যকর্মীরা এখানে এসেছেন। আমরা বাংলাদেশে এক সাংস্কৃতিক রাষ্ট্র তৈরি করেছিলাম। কিন্তু সেই সাংস্কৃতিক রাষ্ট্রটি এখন আর সংস্কৃতির হাতে নেই। চলে গেছে রাজনীতির হাতে। তারপরেও আজকে আনর্ত নাট্যকর্মীদের একত্রিত করে যে সাহসিকতার প্রমাণ দিয়েছে তা গৌরবের ও আনন্দের বিষয়।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) নাট্যকার ও ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক বীর মুক্তিযোদ্ধা মলয় কুমার ভৌমিক বলেন, আজকে পুরো পৃথিবীতে মানুষের সংকট। স্বয়ং ব্রহ্মা যখন বলছেন, আমি আর দেবতা নই, আমি মানুষ। তখন আমরা মানুষ খুঁজে বেড়াচ্ছি। বর্তমানে আমরা থেকে আমি হয়ে যাচ্ছি। সেই জায়গায় আনর্ত পত্রিকার সম্পাদক উদ্যোগ নিয়েছেন যাতে আমরা আবার নাট্যিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে আমি থেকে আমরা হয়ে যাই।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্যদ্বয় অধ্যাপক মো. সুলতান-উল-ইসলাম ও অধ্যাপক মো. হুমায়ুন কবীর, কোষাধ্যক্ষ মো. অবায়দুর রহমান প্রামানিক, প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক, আনর্ত পত্রিকার সম্পাদক রহমান রাজুসহ নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
উদ্বোধন শেষে সেখানে একটি ছোট নাটক পরিবেশন করা হয়। এরপরে সেখান থেকে একটি র্যালি বের হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে।
এবারের আনর্ত নাট্যমেলায় থিয়েটারের ‘প্রত্যক্ষ’ ও ‘নেপথ্য’ শাখায় তিনজনকে আনর্ত স্বীকৃতি (পুরস্কার) দেওয়া হবে। যাত্রা শিল্পে প্রত্যক্ষ অবদানের জন্য মনোনীত হয়েছেন জ্যোৎস্না বিশ্বাস। যিনি যাত্রা সম্রাট অমলেন্দু বিশ্বাসের স্ত্রী এবং চলচ্চিত্র নায়িকা অরুনা বিশ্বাসের মা। তিনি ২ হাজারের বেশি যাত্রায় সরাসরি অভিনয় ও ৩০টিতে প্রত্যক্ষ অবদান রেখেছেন।