সবার মন খারাপে পাশে থাকা জয়নবের শোকে বিহ্বল ঢাবির সহপাঠীরা
‘জয়নব আপু মানে সকলের স্মৃতিতে একটি হাসিমাখা মুখ। দায়িত্ব সচেতন এবং মিশুক মানুষ ছিলেন। আপু ছিলেন আমাদের হতাশা দূর করার অন্যতম জায়গা। আপুর স্মৃতিগুলো এখনো চোখের সামনে ভেসে ওঠে। তিনি মারা গেছেন এটা বিশ্বাস করতে অনেক কষ্ট হচ্ছে’ কথাগুলো বলছেন বঙ্গমাতা হলের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি ডিপার্টমেন্টের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী স্বর্ণালী। একই হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী জয়নব খাতুন।
রোববার ভ্রমণকন্যা-Travelettes of Bangladesh র সাথে বান্দরবান ট্যুরে গিয়ে ফিরতি পথে রোমা উপজেলায় কেউক্রাডং-দার্জিলিং পাড়ার মাঝামাঝি এলাকায় পর্যটকবাহী জিপ গাড়ি পাহাড়ের খাদে পড়ে জয়নব নিহত হন।
জয়নব খাতুনের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছে তার বন্ধু, সহপাঠী এবং রুমমেটরা। একাডেমি পড়ালেখার পাশাপাশি জয়নব ছিলেন সহশিক্ষা কার্যক্রমে সরব। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রেঞ্জার ইউনিটের সদস্য, হিমু পরিবহনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং ভ্রমণ কন্যার সদস্য ছিলেন। এছাড়াও ভ্রমণকন্যা-Travelettes Of Bangladesh এর সেরা ভলানটিয়ার ছিলেন এবং মুভার' স একটি সচেতনতামুলক সংগঠন যার শুভেচ্ছাদূত হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন এই শিক্ষার্থী।
জানতে চাইলে বঙ্গমাতা হলের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি ডিপার্টমেন্টের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী স্বর্ণালী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, জয়নব আপু মানে সকলের স্মৃতিতে একটি হাসিমাখা মুখ। দায়িত্ব সচেতন এবং মিশুক মানুষ ছিলেন তিনি। আপু ছিলেন আমাদের হতাশা দূর করার অন্যতম জায়গা। সিনিয়র মানে যেমন একটা ব্যাপার হয় বকা খাওয়া, কথা বলতে ভয় পাওয়া, আপু একদমই তেমন ছিলেন না। আপুর স্মৃতিগুলো এখন চোখের সামনে ভেসে ওঠে। তিনি মারা গেছেন এটা বিশ্বাস করতে অনেক কষ্ট হচ্ছে।
‘হাঁটতে চলতে দেখা হলেই আপু হেসে আগে জিজ্ঞেসা করতেন কেমন আছিস, খেয়েছিস। মন খারাপ কেন?? হল এর সিনিয়র হিসেবে তিনি হাসিমুখে সবার সাথে কথা বলতো’
তিনি আরো বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রেঞ্জার ইউনিটের সদস্য থাকাকালীন আপুর সাথে বিশেষ সমাবর্তনে দায়িত্ব পালন করেছি। তার সাথে কাটানো স্মৃতিগুলো কখনো ভুলতে পারবো না।
বঙ্গমাতা হলের নিহত শিক্ষার্থীর রুমমেটদের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তারা কথা বলার অবস্থা নেই বলে জানায়।
ভ্রমণকন্যা-Travelettes of Bangladesh জয়নবের সহকর্মী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, জয়নব আমাদের অনেক কাছের জুনিয়র ছিল। সবার সাথে মিশে সে চলত। তার মৃত্যু কোনো ভাবেই মেনে নিতে পারছি না।
অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান শাহিরা আফরিন বিষয়টি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, নিহত জয়নব খাতুন অপরাধবিজ্ঞানের শিক্ষার্থী। তার এ ঘটনায় আমরা সবাই শোকাহত।