প্রভোস্ট দিলেন হলের সিট, ছাত্রলীগ নেতা নামিয়ে দিলেন
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শহীদ হবিবুর রহমান হলে এক আবাসিক শিক্ষার্থীকে সিট থেকে নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে অত্র হল শাখা ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত এক নেতার বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী হল প্রভোস্ট বরাবর একটি লিখিত অভিযোগপত্র জমা দেন।
গতকাল মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) রাত ৮টার দিকে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী রাতের খাবার খেতে হলের বাইরে যান। এই সুযোগে ২০৮ নম্বর কক্ষ থেকে তার বেডপত্র ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র মেঝেতে ফেলে ক্ষমতাবলে অন্য এক শিক্ষার্থীকে সিটে তুলে দেন সোহান নামের এক ছাত্রলীগ নেতা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী হলেন রাকিবুল ইসলাম রকি। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তার বাসা দিনাজপুর জেলায়। অন্যদিকে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা হলেন সোহান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী এবং হবিবুর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিবের অনুসারী বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী রাকিবুল ইসলাম রকি বলেন, আমি গতকাল রাত ৮টায় রাতের খাবার খেতে বাহিরে যাই। খাবার খেয়ে রুমে এসে দেখি আমার বেডপত্র মেঝেতে ফেলে অন্য এক ছেলেকে আমার সিটে তুলে দিয়েছে ছাত্রলীগ নেতা সোহান। এই রুমে প্রভোস্ট আমাকে বরাদ্দ দিয়েছেন বলার পরেও তারা আমাকে থাকতে দিবে না বলে জানিয়েছে। এ বিষয়ে প্রভোস্টকে জানালে তিনি আমাকে বলেন, আমার দায়িত্ব হলো সিট বরাদ্দ দেওয়া যা আমি দিয়েছি, এখন কীভাবে থাকবে সেটা তুমি জানো।
তিনি আরও বলেন, অসচ্ছল পরিবার থেকে আমার উঠে আসা। আর্থিক অবস্থার কারণে বিভাগে আমি এক বছর গ্যাপ দিতে হয়েছে আমাকে। প্রভোস্টের কাছে ছয় মাস ঘুরে এই সিটটা আমি পেয়েছি। যদি এই সিট না পাই তাহলে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়াটা আমার জন্য খুবই কষ্টকর হবে। তাই আমার সিট আমাকে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা সোহানের ফোনে একাধিকবার কল করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব বলেন, বিষয়টি শুনামাত্রই ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে আমি ডেকেছি। কী হয়েছে তার কাছ থেকে শুনব। যদি সে হলের কার্ডধারী শিক্ষার্থী হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই তাকে তার সিটে তুলে দেওয়া হবে। এ বিষয়টি দ্রুতই মীমাংসা করে দিব।
এ বিষয়ে শহীদ হবিবুর রহমান হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক শরীফুল ইসলাম বলেন, ওই ছেলের পারিবারিক সমস্যার কথা শুনে আমি তাকে হলে সিট প্রদান করেছি। তার সমস্যাটি শুনেছি। এ বিষয়ে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গালিবের সাথে আমার কথা হয়েছে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে তার নিজ কক্ষেই তুলে দেওয়া হবে।