শিক্ষা ও গবেষণায় ৫৩ বছরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
- জাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১২ জানুয়ারি ২০২৪, ০৬:১৯ PM , আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২৪, ০৬:৪৯ PM
নানা ঘাত প্রতিঘাত পেরিয়ে শিক্ষা এবং গবেষণায় প্রতিষ্ঠার ৫৩ বছরে পদর্পন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। জাবিতে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এ অনুষ্ঠান পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে শুক্রবার দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপাচার্য অধ্যাপক মো. নুরুল আলম উপস্থিত সকল শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের শুভেচ্ছা জানান।
এদিন সকাল ১০টায় বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ চত্বরে জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলন এবং পায়রা উড়িয়ে দিবসের উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলম। পরে আনন্দ শোভাযাত্রা, রক্তের গ্রুপ নির্ণয়, বর্তমান ও সাবেক শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের স্মৃতিচারণ, প্রীতি ফুটবল ও হ্যান্ডবল ম্যাচ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়।
সংস্কৃতির রাজধানী খ্যাত ঢাকার অদূরেই সাভারে অবস্থিত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রতি র্যাঙ্কিংয়ে বিশ্বে এগিয়েছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক টাইমস হায়ার এডুকেশন (টিএইচই) ম্যাগাজিন শিক্ষা ও গবেষণার ওপর ‘ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র্যাঙ্কিং-২০২৪’-এর তালিকায় বাংলাদেশের ৯টি বিশ্ববিদ্যালয় জায়গা করে নিয়েছে।
এই তালিকার ৮০১ থেকে ১০০০ এর মধ্যে রয়েছে বেসরকারি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি), জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) এবং বেসরকারি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় (এনএসইউ)। এই ধারা চলমান রাখতে বদ্ধপরিকর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
উপাচার্য অধ্যাপক মো. নুরুল আলম বলেন, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র্যাঙ্কিং-২০২৪’-এ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ১০০০ এর মধ্যে স্থান করে নিয়েছে। আমরা এই র্যাঙ্কিংয়ে আরো এগিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব। বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা খাতে বরাদ্দ বাড়িয়ে অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে র্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব। তাই বিশ্ববিদ্যালয়কে র্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে নিতে সর্বাত্মক চেষ্টা করব।
তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান অর্থাৎ বাংলাদেশে ৫টি বিশ্ববিদ্যালয় ছিল। এতে এ অঞ্চলের উচ্চশিক্ষার চাহিদা পূরণ না হওয়ায় পূর্ব পাকিস্তানের নেতারা ও শিক্ষিতজন একটি আবাসিক বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি তোলেন।
পাকিস্তান সরকার বিষয়টি গুরুত্ব অনুধাবন করে এবং শিক্ষা বিভাগ থেকে এ-সংক্রান্ত একটি খসড়া তৈরি করে। ১৯৬৫ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের কার্যকরী সংসদ পরিকল্পনাটি অনুমোদন করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ঢাকা থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে গাজীপুর জেলার সালনায় স্থান নির্ধারণ করা হয়। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তরও স্থাপন করা হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেখানে আর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়নি।
পরে ১৯৬৭ সালে ঢাকা থেকে ৩২ কিলোমিটর দূরে সাভারের নির্জন পরিবেশে নতুন স্থান নির্বাচন করা হয়। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পশ্চিম পাশে এ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্পপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয় ড. সুরত আলী খানকে। বাস্তুকলাবিদ প্রকৌশলী সংস্থা এ বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণকাজ করে। পরে ১৯৭৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্ট পাস হয়। এ অ্যাক্টে বিশ্ববিদ্যালয়ের নামকরণ করা হয় ‘জাহাঙ্গীরগর বিশ্ববিদ্যালয়’।