আটক মদ্যপ ২ নারীকে ‘বন্ধু পরিচয়ে’ ছাড়িয়ে নেন জাবি শিক্ষক
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) মদ্যপ অবস্থায় দুই নারীকে আটক করা হয়েছে। শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে থেকে নিরাপত্তাকর্মীরা তাদের আটক করেন। পরে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখায় নিয়ে গেলে সেখানে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ হেল কাফি তাদের বন্ধু পরিচয়ে ছাড়িয়ে নেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও নিরাপত্তা শাখা সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মকর্তার মেয়ের বিয়েতে দাওয়াত শেষে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালিয়ে ফিরছিলেন ওই দুই নারী ও এক পুরুষ অভিভাবক। গাড়ি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে আসলে গার্ডরা তাদের পথরোধ করেন। এসময় বেপরোয়া গতি গাড়ি চালানো নিয়ে নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে তাদের বাকবিতণ্ডা হয়।
বিষয়টি সমাধান করতেই আমি সেখানে যাই। পরে নিরাপত্তা শাখার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করেছি। -অধ্যাপক আব্দুল্লাহ হেল কাফি, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ
পরে এক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গার্ডকে আঘাত করেন গাড়িটির ড্রাইভার। হাতাহাতির এক পর্যায়ে গাড়ি থেকে বেরিয়ে মদ্যপ ওই দুই নারীও নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে আক্রমণাত্মক আচরণ শুরু করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা তাদেরকে নিরাপত্তা শাখায় নিয়ে যান। সেখানেও কর্মকর্তাদের সঙ্গে অসধাচরণ করেন ওই দুই নারী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখার কর্মকর্তারা বলেন, মদ্যপ অবস্থায় থাকায় তারা এমন আচরণ করেছিলেন। তারা নিজেদের বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ হেল কাফির বন্ধু বলে পরিচয় দেন। পরে সেখানে অধ্যাপক আব্দুল্লাহ হেল কাফি এসে তাদের ছাড়িয়ে নেন।
ঘটনাটি শুনেছি। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের মধ্যস্থতায় বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে। মূলত বন্ধের দিনগুলোতে বহিরাগতদের অধিক হারে প্রবেশের ফলে নানা ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে। -ফিরোজ উল হাসান, প্রক্টর
নিরাপত্তা কর্মকর্তা রাসেল মিয়া স্বাধীন বলেন, ওই দুই নারী মধ্যপ অবস্থায় গাড়ি থেকে নেমে আমাদের দায়িত্বরত নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে আক্রমণাত্মক আচরণ শুরু করেন। একজনকে মারধরও করা হয়েছে। পরে তাদেরকে নিরাপত্তা শাখায় নিয়ে আসা হলে এক শিক্ষক কোনো ধরনের আলোচনা ছাড়াই তাদের ছাড়িয়ে নিয়ে যান।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ হেল কাফি বলেন, ‘‘আমার বন্ধু মামুনের গেস্টের সাথে নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের ঝামেলার কথা শুনেই আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। বিষয়টি সমাধান করতেই আমি সেখানে যাই। পরে নিরাপত্তা শাখার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করেছি।’’
ওই দুই নারী মধ্যপ অবস্থায় গাড়ি থেকে নেমে আমাদের দায়িত্বরত নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে আক্রমণাত্মক আচরণ শুরু করেন। একজনকে মারধরও করা হয়েছে। -রাসেল মিয়া স্বাধীন, নিরাপত্তা কর্মকর্তা
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, এ ঘটনা শুনেছি। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের মধ্যস্থতায় বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে। মূলত বন্ধের দিনগুলোতে ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের অধিক হারে প্রবেশের ফলেই নানা ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে। সামনের দিনগুলোতে বহিরাগত নিয়ন্ত্রণে আরও কঠোর অবস্থান নেওয়া হবে।