চবি উপাচার্যকে ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ আখ্যা দিল শিক্ষক সমিতি
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারকে ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ ও ‘বিতর্কিত’ আখ্যা দিয়ে পদত্যাগ দাবি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) প্রশাসনিক ভবনের সামনে অনুষ্ঠিত প্রতীকী অনশনে অংশ নিয়ে এ কথা বলেন সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান সিদ্দিকী।
উপাচার্যকে উদ্দেশ্যে করে অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ব্যবসায় অনুষদের ডিন অধ্যাপক হেলাল নিজামীকে আপনি অসৌজন্যমূলকভাবে শোকজ করেছিলেন; যেটা নজিরবিহীন ঘটনা। তিনি একজন নির্বাচিত ডিন আর আপনি ‘অনির্বাচিত’।
‘‘তিনি শোকজের যে জবাব দিয়েছিলেন, তার বিরুদ্ধে আপনি একটি বাক্যও বলতে পারেননি। এতে বোঝা যায় আপনি আপাদমস্তক দুর্নীতিগ্রস্ত, বিতর্কিত আপনার এখনই চলে যাওয়া উচিত।’’
এর আগে, প্রয়োজন ছাড়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ও আইন বিভাগে ৯ জন শিক্ষকের নিয়োগের অভিযোগে প্রশাসনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় শিক্ষক সমিতি। মঙ্গলবার বিতর্কিত এই নিয়োগ বোর্ড স্থগিত হলেও নানাবিধ অনিয়মের অভিযোগ এনে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি জানিয়ে প্রতীকী অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে শিক্ষক সমিতি।
আরও পড়ুন: চবিতে বিতর্কিত নিয়োগের জবাব চেয়েছে ইউজিসি
অনশন কর্মসূচিতে শিক্ষক সমিতির সভাপতি বলেন, সিন্ডিকেটে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত প্রণয়নের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৭৩ সালের বঙ্গবন্ধুর তৈরি এক্টকে ভেতর থেকে অকার্যকর করার একটা প্রক্রিয়া আপনারা চালু করেছেন। সিনেটসহ বিভিন্ন প্ল্যানিং কমিটির সিদ্ধান্তকে পাশ কাটিয়ে নিজেদের খেয়ালখুশি মতো বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করে বিশ্ববিদ্যালয় এক্টকে আপনারা অকার্যকর করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছেন।
তিনি বলেন, উপাচার্য, উপ-উপাচার্য আমাদের শিষ্টাচার শিখাচ্ছেন। শিষ্টাচার কি জিনিস এটা শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দের আপনাদের থেকে শিখতে হবে না। উপ-উপাচার্য কেমিস্ট্রির শিক্ষক। আমি তার কাছে জানতে চাই, উনি কোন শিষ্টাচারের কোন শুদ্ধাচারের বিবেচনায় পাঁচটি বিভাগের সাতটি নিয়োগ বোর্ডের সদস্য? এটা হাস্যকর।
অনশন কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক, কলা অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক সেকান্দার চৌধুরীসহ অর্ধশতাধিক নেতৃবৃন্দ।
গত বছরের নভেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে উপাচার্য এবং প্রশাসনের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ করেছিলেন ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন মো. হেলাল উদ্দিন নিজামী। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনের এমন মন্তব্যের বিষয়ে কারণ দর্শানোর চিঠি দিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছিলেন, তার ওই বক্তব্যে উপাচার্যের মানহানি হয়েছে ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।