নির্বাচনের পর চবিতে বিএনপি-জামায়াত থেকে শিক্ষক নিয়োগ হতে পারে: উপাচার্য
- চবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯:১২ PM , আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯:৩০ PM
সামনে নির্বাচন আসছে, এই নির্বাচনের পরে বিএনপি-জামায়াত থেকে শিক্ষক নিয়োগ হতে পারে। আমি কি এই (শিক্ষক নিয়োগ) বোর্ডগুলো তাদের আসার জন্য রেখে দিবো? পরিকল্পনা কমিটির সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড বাতিলের দাবিতে শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে এই বোর্ড বাতিলের দাবি জানালে একথা বলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার।
গতকাল রবিবার বিভাগীয় পরিকল্পনা কমিটির সিদ্ধান্ত অমান্য করে অবৈধ নিয়োগ বোর্ড বাতিলের দাবিতে উপাচার্য বরাবর চিঠি দিতে যান শিক্ষক সমিতির নেতারা। এসময় চিঠিটি গ্রহণের আপত্তি জানিয়ে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান সিদ্দিকীকে চিঠিটি পড়ে শোনাতে বলেন উপাচার্য। চিঠিটি পড়ে শোনানোর একপর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে যান তিনি। এসময় উপাচার্য এসব কথা বলেন। এ সংক্রান্ত একটি রেকর্ড দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের হাতে সংরক্ষিত আছে।
চিঠিতে এর আগেও ফারসি বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের লেনদেনের অডিও ফাঁস, উপাচার্যের ব্যক্তিগত সহকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়াসহ অনিয়ম-দুর্নীতির প্রসঙ্গ আনলে উপাচার্য উত্তেজিত হয়ে বলেন, “এটা আর ক’বছর পড়বেন অন্যটা বলেন। আমি কি দুর্নীতি করেছি বলেন? বারবার দুর্নীতির কথা বলছেন? দুর্নীতির প্রমাণ দেন একটা? শিক্ষক সমিতি থেকে আপনারা কি কাজ করেছেন? আমি কী রাস্তার মানুষ? বিশ্ববিদ্যালয় কী বিক্রি করে দিয়েছি? চুরি করেছি? কি বলতে চান আপনি? আপনারা ষড়যন্ত্র করে কোন লাভ হবে না। আমার কিছুই করতে পারেননি, পারবেন না। নির্বাচনের পর বিএনপি-জামায়াত শিক্ষক নিয়োগ দিতে পারে। এজন্য আমি শিক্ষক নিয়োগ দিচ্ছি।” এর কিছুক্ষণ পর উপাচার্য নিয়োগ বোর্ডের সদস্য ও প্রার্থীদের নিয়ে নিজ বাংলোতে গিয়ে নিয়োগ বোর্ডের সভা সম্পন্ন করেন।
আরও পড়ুন: ভিসির বাসভবনে শিক্ষক নিয়োগের ভাইভা, মুখোমুখি উপাচার্য-শিক্ষক সমিতি
উপাচার্যের বলা বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতার আসার আগে নিয়োগ দেওয়া বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সভাপতি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমরা শিক্ষক সমিতিতে যারা আছি সিনিয়র শিক্ষক, ডিনসহ আমরা মনে করি দেশের মানুষের কাছে আওয়ামী লীগের ব্যাপক জনসমর্থন আছে। আসন্ন নির্বাচনে ইনশাআল্লাহ আওয়ামী লীগ জয়লাভ করবে। উনি (উপাচার্য) কোন আশঙ্কা থেকে এটা বলছেন জানি না। উনার আওয়ামী লীগের প্রতি কোনো শঙ্কা থাকতে পারে আমাদের নাই।
“এবার সরকার ও নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ‘ফ্রি এন্ড ফেয়ার ইলেকশন’ হবে। আর আমরা মনে করি আওয়ামী লীগ ব্যাপক সমর্থন পেয়ে জয়লাভ করবে। উনি আওয়ামী লীগ, আওয়ামী লীগ করে মুখে ফেনা তুলে ফেলেন। কিন্তু উনার কথা আর বিশ্বাসের জায়গা কতটুকু?”
উপাচার্য উত্তেজিত হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা চিঠির মাধ্যমে আমাদের দাবিগুলো জানাতে গিয়েছিলাম। উপাচার্য আমাদের কথাগুলো প্রথমে শুনতেন, মানতেন বা না মানতেন সেটা ওনার ব্যাপার। কিন্তু তিনি আমাদের সাথে চরম অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন। যেটা মোটেও কাম্য নয়।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও বাংলা বিভাগে পরিকল্পনা কমিটির ‘না’ করা সত্ত্বেও শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড নিয়ে গতকাল দিনভর চলে নানা নাটকীয়তা। গতকাল আইন বিভাগের নিয়োগ বোর্ড দুপুরে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও শিক্ষক সমিতির বাঁধার মুখে পরবর্তীতে ভিসি বাংলোর অফিসে সম্পন্ন হয় নিয়োগ বোর্ড। এদিকে আজ সোমবার বাংলা বিভাগের নিয়োগ বোর্ড হওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত অনিবার্য কারণ দেখিয়ে তা হয়নি।