মাস্টারপ্ল্যানের দাবিতে জাবিতে বিক্ষোভ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) সব অংশীজনের মতামতের ভিত্তিতে মহাপরিকল্পনা (মাস্টারপ্ল্যান) প্রণয়নের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে একদল শিক্ষার্থী। আজ সোমবার বেলা পৌনে দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুরাদ চত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি কয়েকটি সড়ক ঘুরে প্রশাসনিক ভবন হয়ে পরিবহন চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীদের হাতে ‘মাস্টারপ্ল্যান দাও, জাহাঙ্গীরনগর বাঁচাও’, ‘প্রাণ–প্রকৃতি উজাড় করে উন্নয়ন চাই না’, ‘অটোমেশন চালু করে শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ কমাও’, ‘১৫২ কোটি টাকা খরচ করে তৃতীয় প্রশাসনিক ভবন চাই না’—লেখাসংবলিত প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।
সমাবেশে ছাত্র ইউনিয়ন বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের (একাংশ) সাধারণ সম্পাদক ঋদ্ধ অনিন্দ্য গাঙ্গুলীর সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন বিপ্লবী ছাত্র-মৈত্রী জাবি শাখার সংগঠক সোমা ডুমরি। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে মাস্টারপ্ল্যানের দাবি জানিয়ে কোনো কাজ দেখতে পায়নি। প্রশাসন মাস্টারপ্ল্যান ছাড়া কাজ করায় আমাদের ক্যাম্পাসের প্রাণ-প্রকৃতি নষ্ট হয়েছে। কয়েক মাস আগে রাতের আঁধারে আইবিএ ভবনের জন্য সুন্দরবন এলাকায় গাছ কাটা হয়। তার পরিপ্রেক্ষিতে একটি তদন্ত কমিটি হলেও সেই তদন্ত রিপোর্ট আমরা পাইনি। আমাদের আন্দোলনকে প্রশাসন আলগাভাবে নিচ্ছে। প্রশাসনকে বলতে চাই, আমাদের আন্দোলন আলগাভাবে নিলে দেখবেন, এই আন্দোলন একদিন দাবানলে পরিণত হবে।’
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট (মার্ক্সবাদী) জাবি শাখার সংগঠক সজিব আহমেদ বলেন, ‘আমরা আসলে ভয় পাচ্ছি এবং ভীতসন্ত্রস্ত এই কারণে যে এই প্রশাসন প্রতি ছুটিতে এবং রাতের আঁধারে গাছ কেটে ফেলেছে। সামনে শীতের ছুটি শুরু হবে। আমরা ভয় পাচ্ছি, এই ছুটিতেও প্রশাসন আবার গাছ কাটাবে কি না। তারা ১ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকার কাজ করেছে মাস্টারপ্ল্যান ছাড়াই। দুটি প্রশাসনিক ভবন থাকার পরও আরেকটি প্রশাসনিক ভবন করতে চাচ্ছে। এই অপ্রয়োজনীয় ভবন করলে ১৫২ কোটি টাকা অতিরিক্ত খরচ হবে। এই অপ্রয়োজনীয় ভবন করতে দেওয়া হবে না। অপরিকল্পনার মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে যে উন্নয়ন হচ্ছে, তাতে ১২ শোর বেশি গাছ কাটা হয়েছে। বাকি উন্নয়নকাজ করার আগে অবশ্যই মাস্টারপ্ল্যান জরুরি হয়ে পড়েছে।’
ছাত্র ইউনিয়ন বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের (একাংশ) সহসভাপতি আশফার রহমান বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে মাস্টারপ্ল্যানের জন্য আমরা সক্রিয় আন্দোলন জারি রেখেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সবাই বলছে, আমাদের দাবি যৌক্তিক। তার পরও মাস্টারপ্ল্যান করার কোনো আগ্রহ আমরা প্রশাসনের মধ্যে দেখছি না। প্রশাসনকে হুঁশিয়ারি করে বলে দিতে চাই, শীতের বন্ধে যদি আরও একটা গাছ কাটা হয় তাহলে শিক্ষার্থীরা এই প্রশাসনকে সমূলে উৎপাটন করবে। প্রশাসন উন্নয়নের নামে বারবার চাকচিক্যময় নকশা দেখায়, কিন্তু সেটা সুন্দরভাবে শেষ করে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কিছু অটোমেশনের আওতায় নিয়ে আসা হলে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমবে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের সেই ভোগান্তি প্রশাসন দূর করার কোনো সদিচ্ছা আমরা দেখি না।’