১৫ নভেম্বর ২০২৩, ১৪:২৫

ঢাবির কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে সিট সংকট ও অব্যবস্থপনার প্রতিবাদে মানববন্ধন

ঢাবির গ্রন্থাগারে সিট সংকট ও অব্যাবস্থপনার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন   © টিডিসি ফটো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সিট সংকট নিরসনসহ অব্যবস্থপনার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ, ক্লাসের পড়া বা গবেষণার জন্য খুব কম শিক্ষক-শিক্ষার্থীই যান সেখানে। সিট সংকটের কারণে চাকরিপ্রত্যাশীদের ভিড়ে সেখানে ঠাঁই মেলে না গবেষণা বা কোর্স পড়ার জন্য যাওয়া শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের।

ঢাবির কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সিট সংকট, সাইকেল চুরি, বই চুরি, সিসিটিভির নজরদারির অর্পযাপ্ততা, ব্যবহার অনুপযুক্ত ওয়াশরুম, সুপেয় পানির অভাব, বহিরাগত শিক্ষার্থীদের প্রবেশ, অতিরিক্ত শব্দদুষণ, লাইব্রেরি প্রশাসনের অব্যবস্থাপনা ও ইন্টারনেট সেবার ব্যবস্থা না থাকার প্রতিবাদ। একইসঙ্গে এসব সমস্যা নিরসনের দাবিতে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের প্রবেশপথে আজ বুধবার অবস্থান কর্মসূচি ও মানববন্ধন পালন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
  
জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে প্রতিষ্ঠাকালীন আসন সংখ্যা ছিল ৫৮০টি, সেটা বর্ধিত করায় বর্তমান সিট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৪০০টিতে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষার্থী অনুযায়ী কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সিট সংখ্যা অনেক কম। এতে করে গ্রন্থাগারের প্রবেশপথে প্রায়ই বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। সর্বশেষ গত ৯ নভেম্বর ব্যাগ রাখা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয় যা হাতাহাতি পর্যন্ত গড়িয়েছিল।
 
শিক্ষার্থীদের বক্তব্য যে, শিক্ষার্থীদের মধ্যে কিছু গ্রুপ আছে যারা রাজনৈতিক পরিচয় ব্যাবহার করে লাইন মেনটেইন না করে জোরপূর্বক লাইব্রেরিতে ঢুকে যায়, কেউ প্রতিবাদ করলে মারমুখী আচরণ করে। 

এর আগে সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবিতে ব্যাগ রাখার সময় নির্ধারণের জন্য ৮ নভেম্বর সকালে তিনটি ব্যালটে ভোটের আয়োজন করা হয়। ভোটে অংশগ্রহণকারী শতভাগ শিক্ষার্থী ভোর ছয়টায় ব্যাগ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। পরবর্তীতে  বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা এই বিশৃঙ্খলা নিরসনের দাবিতে অভিযোগ পত্র নিয়ে লাইব্রেরি প্রধানের কাছে যান। এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরি প্রধান অধ্যাপক ড. নাসিরুদ্দিন মুন্সি লাইব্রেরি পরিদর্শনের আশ্বাস দেন এবং বলেন এই বিষয়ে তদন্ত মাফিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উর্দু বিভাগের বঙ্গবন্ধু হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থী বলেন, লাইব্রেরির সমস্যা আজকের না। ভিসি আসে ভিসি যায় লাইব্রেরির কোন সমাধান হয় না। লাইব্রেরিতে আমাদের পানি ফিল্টারিংয়ের ব্যবস্থা নাই। সিট সংকট, নিয়মিত সাইকেল চুরি, অনুপযুক্ত ওয়াশরুমসহ বিভিন্ন ধরণের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এসব সমস্যা সমাধানের দাবি নিয়ে ভিসি স্যারের কাছে গেলে তিনি বলেন, লাইব্রেরিতে বিশৃঙ্খলাপূর্ণ পরিবেশের জন্য আমরা দায়ী নয়। এর জন্য কোন পদক্ষেপ আমরা গ্রহণ করতে পারবো না। তোমাদের সেমিনার লাইব্রেরী আছে, হলে রিডিং রুম আছে। সেখানে গিয়ে পড়াশোনা করতে পারো।’ 

ওই শিক্ষার্থী আরও  বলেন, আমাদের যে যৌক্তিক দাবি ও সমস্যা নিরসনের  নির্দিষ্ট সময়সীমা না দেওয়া পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। তিনি যদি আমাদের এই যৌক্তিক দাবি না মেনে নেন তাহলে আমরা আরও কঠোর অবস্থানে যেতে বাধ্য হবো।

রোকেয়া হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থী বলেন, লাইব্রেরির মধ্যে মেয়েদের মাত্র চারটি ওয়াশরুম সেটাও ব্যবহার করার অনুপযোগী। এরই মধ্যে আমরা লিখিত অভিযোগ নিয়ে ভিসি সার বরাবর দিলে তিনি আমলে নেননি। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আমাদের কর্মসূচি চালিয়ে যাব।

অবস্থান কর্মসূচি চলাকালীন ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি মাযহারুল কবির শয়ন পরিদর্শনে যান। তিনি সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি শুনেন এবং বলেন, ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে যে সমস্যা বিদ্যমান আসলে সেটা নিন্দনীয়। এছাড়াও তিনি শিক্ষার্থীদের এই যৌক্তিক দাবির সাথে একাত্মতা পোষণ করেন। তাদের এই যৌক্তিক দাবি এবং সমস্যা নিরসন নিয়ে উপাচার্যের সাথে আলোচনার যথাসাধ্য চেষ্টা করবেন বলে আশ্বাস দেন। 

উল্লেখ্য, কর্মসূচি শেষে অবস্থান কর্মসূচিতে থাকা সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে তিনজনের প্রতিনিধি সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি সংবলিত একটি পত্র নিয়ে ভিসি বরাবর গিয়েছে।