৫২ বছরে বিজ্ঞানের ৯, কলা ও সামাজিকের ৬ শিক্ষক ঢাবির ভিসি
১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর এ পর্যন্ত উপাচার্য পেয়েছে ২৯ জন। তারমধ্যে স্বাধীনতার পর বিজ্ঞান ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে সবচেয়ে বেশি উপাচার্য পেয়েছে এ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। যদিও স্বাধীনতার আগে কলা এবং সামাজিক বিজ্ঞান থেকে সবচেয়ে বেশি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
সর্বশেষ নিয়োগ পাওয়া অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালও বিজ্ঞানের বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন। শিক্ষাবিদরা বলছেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিজ্ঞানের গুরুত্ব বাড়ায় এ ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে বেশি উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠার ১০২ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উপাচার্য নিয়োগ হয়েছে কলা এবং সামাজিক বিজ্ঞান থেকে। ২৯ জন উপাচার্যের মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগের ১২ জন, কলার সাত জন এবং সামাজিক বিজ্ঞানের ছয় জন রয়েছেন।
তাছাড়া আইন থেকে দু’জন এবং একজন ব্যবসায় শিক্ষার রয়েছেন। একজনের পড়াশোনার বিষয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে স্বাধীনতার পর বিজ্ঞান ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে বেশি উপাচার্য নিয়োগ হয়েছে। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে অধ্যাপক ড. মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়টির নিয়োগ পেয়েছিলেন। তিনি ছিলেন সামাজিক বিজ্ঞান ব্যাকগ্রাউন্ডের।
এরপর থেকে এ পর্যন্ত আরও ১৬ জনকে উপাচার্য নিয়োগ পেয়েছেন। মোট নিয়োগ পাওয়া ১৭ জনের মধ্যে বিজ্ঞানের ৯ জন, সামাজিক বিজ্ঞানের পাঁচ জন, কলার একজন ও বাণিজ্যের একজন। আরেক জনের বিভাগ নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘আমি যেহেতু বিজ্ঞানের মানুষ, তাই আমি স্বাভাবিকভাবে বলবো বিজ্ঞান থেকে আসলেই ভালো। বিজ্ঞানের বাইরে আর সি মজুমদার স্যার অনেক ভালো ছিলেন।’
মোট নিয়োগ পাওয়া ১৭ জনের মধ্যে বিজ্ঞানের ৯ জন, সামাজিক বিজ্ঞানের পাঁচ জন, কলার একজন ও বাণিজ্যের একজন। আরেক জনের বিভাগ নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এ অধ্যাপকের ভাষ্য, ‘ভালো একাডেমিশিয়ান থেকে উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হোক। তিনি যে ব্যাকগ্রাউন্ডের হোক, তাতে কোনো সমস্যা নেই। কলা থেকে ভালো শিক্ষক এসেছেন। উপাচার্য নিয়োগ দেওয়ার আগে অন্য কোনো পরিচয় বড় না হোক। অন্তত ভালো একাডেমিশিয়ান থেকে উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হোক।’
স্বাধীনতার পর বিজ্ঞান থেকে নিয়োগ পাওয়া উপাচার্যরা হলেন, অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল, অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ, অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, অধ্যাপক এ কে আজাদ চৌধুরী, অধ্যাপক মনিরুজ্জামান মিঞা, অধ্যাপক এম শামসুল হক, অধ্যাপক এ কে এম সিদ্দিক, অধ্যাপক ফজলুল হালিম চৌধুরী ও অধ্যাপক আব্দুল মতিন চৌধুরী।
সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ থেকে নিয়োগ পাওয়া উপাচার্যরা হলেন, অধ্যাপক আ আ ম স আরোফিন সিদ্দিক, অধ্যাপক আনোয়ারুল্লাহ চৌধুরী, অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমদ, অধ্যাপক শামসুল হক, অধ্যাপক ড. মুজাফফর আহমদ চৌধুরী। আর বাণিজ্য অনুষদ থেকে নিয়োগ পাওয়া উপাচার্য ছিলেন অধ্যাপক আবদুল মান্নান।
স্বাধীনতার পর সবচেয়ে বেশি উপাচার্য নিয়োগ চট্রগাম বিভাগ থেকে
স্বাধীনতার পর সবচেয়ে বেশি উপাচার্য নিয়োগ হয়েছে চট্রগাম বিভাগ থেকে। ১৭ জন উপাচার্যের মধ্যে ৯ জন এ বিভাগের। তিন জনের জন্ম ভারতে। দুজন ঢাকা বিভাগের। অন্য দুজনের তথ্য নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
আরো পড়ুন: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. ইমদাদুল হক আর নেই
স্বাধীনতার পর গড়ে কম সময় দায়িত্ব পাচ্ছেন উপাচার্যরা
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর উপাচার্যরা তাদের মেয়াদ কম পেয়েছেন। স্বাধীনতার ৫২ বছরে ১৭ জন এবং স্বাধীনতার আগে ৫১ বছরে ১২ জন নিয়োগ পেয়েছেন। সে হিসেবে স্বাধীনতার পর গড়ে একজন উপাচার্য মেয়াদ পেয়েছেন ৩ দশমিক শূন্য ৫ বছর। অন্যদিকে স্বাধীনতার আগে গড়ে ৪ দশমিক ২ বছর।
পাকিস্তান আমলে স্বাধীনতার পরের চেয়ে বেশি মেয়াদ পেয়েছেন উপাচার্যরা। ২৪ বছরে সাত জন গড়ে ৩ দশমিক ৪ বছর। ব্রিটিশ আমলে ২৭ বছরে পাঁচজন। সবচেয়ে বেশি গড়ে সময় ছিল ব্রিটিশ আমলে, ৫ দশমিক ২ বছর।