জাবির নিপীড়ক শিক্ষকের অপসারণসহ ৪ দফা দাবি শিক্ষার্থীদের
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) নিপীড়ক শিক্ষক মাহমুদুর রহমান জনির দ্রুত শাস্তি দাবি ও চলমান প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনা সহ ৪ দফা দাবি জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের কনফারেন্স রুমে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবির কথা জানান তারা।
দাবিগুলো হলো, নিপীড়নকারী শিক্ষক মাহমুদুর রহমান জনিকে নিয়ে যে স্ট্রাকচার্ড কমিটি গঠন হয়েছে সেই কমিটির কার্যক্রমকে বেগবান করতে সর্বাত্মক সহযোগিতা করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে অভিযুক্তের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে সাংবাদিক আসিফ আল আমিনকে মারধরের ঘটনায় জড়িত দুষ্কৃতিকারীদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে, নিজেদের খায়েশ মত গাছ কাটা বন্ধ করে দ্রুত মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করতে হবে ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি সৌমিক বাগচীকে হামলার দায়ে চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, শীতের প্রারম্ভ থেকেই যেখানে এই ক্যাম্পাস মুখরিত থাকতো অতিথি পাখিদের কলকাকলিতে, সেখানে অব্যবস্থাপনায় নির্মিত ভবনের কারণে আজ অতিথি পাখিদের নাম নিশানাও খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষায় দীর্ঘদিন ধরে মাস্টারপ্ল্যানের দাবীতে আন্দোলন জারি রেখেছে সচেতন শিক্ষক-শিক্ষার্থী মহল। প্রশাসন বারবার আলোচনার নামে সময় ক্ষেপণ করেছে এবং চোরের মতো পরিকল্পনা করে রাতের আঁধারে গাছ কেটে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক পরিবেশ ও প্রাকৃতিক পরিবেশের চরম বিপর্যয়ের উল্টো পিঠে দেখতে পাই শিক্ষক রাজনীতির রমরমা অবস্থা। ছাত্রসংসদ তথা জাকসু শব্দটা ভুলে গেলেও, শিক্ষক সমিতির নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক আনন্দ-উৎসবে মেতে উঠতে দেখেছি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে।
সাংবাদিক নির্যাতনের বিচার চেয়ে তারা বলেন, প্রশাসনের অধীনে সাংবাদিক লাঞ্চনার ঘটনা কীভাবে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে এবং নিপীড়নকারী, ভ্রূণহত্যাকারী, নৈতিক স্খলনের দায়ে অভিযুক্ত ক্ষমতাধর শিক্ষক মাহমুদুর রহমান জনিকে প্রশাসন কীভাবে আগলে রেখেছে? তাকে নিয়ে স্ট্রাকচার্ড কমিটি গঠিত হলেও তিনি নিয়মবহির্ভূত ভাবে নিয়মিত শিক্ষকতা করছেন। মদ্যপ অবস্থায় উপাচার্যকে নিয়ে বিশ্রী মন্তব্য করলেও প্রশাসন তাকে কড়া জবাব দেয়ার সাহসও দেখাচ্ছে না, যা বিশ্বিদ্যালয়ের সকলকে হতাশ করেছে।
সার্বিক বিষয়ে তারা বলেন, আমরা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রশাসন কর্তৃক বারবার বিশ্বাসঘাতকতার শিকার হয়েছি। আমরা রাজনৈতিক ক্ষমতাবলে যেকোনো অন্যায় সিদ্ধান্ত আদায়ের বিরুদ্ধে। তাই আমরা দাবী করছি নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে প্রশাসনের যেসব দায়িত্ব পালন করা উচিৎ সেই সব বিষয়ে সুষ্ঠু প্রক্রিয়া জারি হোক। এমতাবস্থায় আগামী ১৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য সিন্ডিকেট সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে আমাদের দাবিগুলো উত্থাপন করতে হবে।