আইবিএ ভবন নির্মাণের দাবিতে জাবিতে বিক্ষোভ মিছিল
‘অপশক্তির আঘাত, জায়গা বদলের অজুহাত, ভবন কাজে বাধা কেন, প্রশাসন চুপ কেন?’- স্লোগানে মুখরিত বিক্ষোভ মিছিলে একাডেমিক ভবনের নির্মাণ কাজ বন্ধ না করার দাবি জানিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ইন্সটিটিউট অব বিজনেস এ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (আইবিএ) শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (৫ নভেম্বর) সকাল ১০ টায় সমাজবিজ্ঞান ভবনের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে তারা। মিছিলটি ট্রান্সপোর্ট এলাকা থেকে ঘুরে নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। এসময় ভবন নির্মাণে ৪ দফা দাবি সংবলিত স্মারকলিপি উপাচার্য বরাবার দেন তারা। ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থীরা এসময় সকল ধরণের জটিলতা নিরসন করে আইবিএ ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু করার দাবি জানান। দাবি মানা না হলে সকল একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রাখা হবে বলেও জানান তারা।
শিক্ষার্থীরা জানান, আমাদের ইন্সটিটিউটের ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হওয়ার পূর্বেই সেটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আমরা যেকোনো মূল্যে আমাদের ভবন চাই। ভবন যদি এই স্থানে করতে এতই সমস্যা হয়, তাহলে প্রশাসন কেন এই স্থান নির্ধারণ করেছিল। এই দায় প্রশাসনকেই নিতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী সিরাতল মোস্তাকিম শ্রাবণী বলেন, আইবিএ ইতোমধ্যে প্রায় ১ কোটি টাকা সেখানে খরচ করেছে। এটা প্রশাসনের টাকা নয়। এটা আমাদের টাকা। এখন নির্ধারিত স্থানে নির্মাণ কাজ বন্ধ করলে এই ক্ষতিপূরণ কে দিবে? এই দায় প্রশাসনকে নিতে হবে।আমাদের সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে কোনো বিরোধ নাই। তবে গুটিকয়েক শিক্ষার্থী এটার বিরুদ্ধে অপতৎপরতা চালাচ্ছে। আমাদের দাবি একটাই। আমরা একাডেমিক ভবন চাই। আর দাবি মানা না হলে আমরা আমাদের সকল একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রাখার ঘোষণা দিচ্ছি।
আরও পড়ুন: অবরোধের মধ্যেই ঢাবিতে চলছে ক্লাস-পরীক্ষা ও পরিবহন
এর আগে, চলতি বছরের ২৩ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান কারখানার পেছনে ‘সুন্দরবন’ নামক স্থানে ইন্সটিটিউট অব বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশনের (আইবিএ) ভবন নির্মাণের জন্য জায়গা বরাদ্দ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরে গত বুধবার সে স্থানে গাছ কেটে নির্মাণ কাজ শুরু করলে প্রতিবাদ জানায় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক দলগুলো। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে শিক্ষার্থীরা আইবিএ ভবন নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর ভেঙে ফেলে। ফলে আইবিএ ভবনের কাজ কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। ছাত্র ইউনিয়ন বৃহস্পতিবার দিনভর প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করে রাখলে উপাচার্য এ নির্মাণ কাজের কিছুই জানেন না বলে দাবি করেন।
তবে ইন্সটিটিউট সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের Head of Procurement Entity (HOPE) হচ্ছেন উপাচার্য। HOPE থেকেই আইবিএ ভবনের নির্মাণ কাজের চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়েছে এবং উপাচার্য ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন। তাঁর অনুমোদন অনুযায়ী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তাদের কাজ শুরু করেছে। HOPE অনুমোদন দিয়ে দেবার পর বিষয়টি আর আইবিএর কর্তৃত্বে নেই। এখন যদি উপাচার্য বলেন তিনি কিছু জানেন না সেটা কোনভাবেই কাম্য নয়।
আইবিএ-জেইউ এর পরিচালক অধ্যাপক কে এম জাহিদুল ইসলাম বলেন, 'আমাদের শ্রেণিকক্ষ এবং শিক্ষকদের কক্ষের সংকট আছে। দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনকে এটা জানিয়ে আসছি৷ প্রশাসন আমাদের এই জায়গা নির্ধারণ করে দিয়েছে। আশা করছি প্রশাসন সুবিবেচনা করবেন। এছাড়া, শিক্ষার্থীদের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের বিষয়টি আমার অবগত নয়'।
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান জানান, ‘ভিসি স্যার বিষয়টি অবগত হয়েছেন। আমাদের সামনে ১৩ তারিখে সিন্ডিকেট সভা রয়েছে। সেখানেই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এর আগে চলমান দাবি দাওয়ার কোনো সিদ্ধান্তই নেওয়া সম্ভব নয়’।