২৭ অক্টোবর ২০২৩, ১৭:১৬

আমার উপরে আল্লাহ নিচে শেখ হাসিনা: চবি উপাচার্য 

চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার  © টিডিসি ফটো

'আমার উপরে আল্লাহ, আর নিচে শেখ হাসিনা আছে' বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার। শুক্রবার (২৭ অক্টোবর)  চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ছাত্রদের জন্য নির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ও অতীশ দীপঙ্কর হলের উদ্বোধনের সময় তিনি এই মন্তব্য করেন।

অধ্যাপক শিরীণ আখতার বলেন, উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য একটা চলমান প্রক্রিয়া। আপনি ইচ্ছে করলেই আমাকে টেনে নামতে পারবেন না। প্রধানমন্ত্রী যতদিন আমাকে চাইবেন আমি থাকব, উনি যখনই বলবেন আমি আসন ছেড়ে দিব। আমারও একটু আরামের দরকার ছিল এগুলো ছেড়ে দিয়ে একটু লেখালেখি করব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যতদিন আমাকে  চাচ্ছেন ততদিন  আমাকে আর কয়েকটা দিন সহ্য করুন। আমাকে একটু ভালো রাখেন। আর আমাকে বাকি কাজগুলো করতে দেন। আমি যতদিন আছি একদিনও মাঠ ছেড়ে যাব না। আমি বীর মুক্তিযোদ্ধার কন্যা ও বীর মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী। 

তিনি আরও বলেন, এ দুটি হল উদ্বোধনের ইচ্ছা দীর্ঘদিনের। লোকবলের অভাবে গত চার বছরে নিয়োগ দেওয়া যাচ্ছে না। ইউজিসি বলছে খণ্ডকালীন কর্মচারীদের দিয়ে কাজ চালাতে। যা হোক, আমাদের প্রকৌশলীরা এক মাসের মধ্যেই দুটি হল আবাসনের উপযোগী করে তুলেছেন। আমি চেষ্টা করেছি দ্রুত হলটির কার্যক্রম শুরু করতে। তারই অংশ হিসেবে শত ব্যস্ততার মধ্যেও মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী দিল্লি থেকেই আমাদের হল উদ্বোধন করেছেন। 

তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, তোমরা লেখাপড়া করে মানুষ হবে এবং মানবিক হবে। সহিংসতা করবে না। আমার নামে বদনাম আছে, আমি নাকি শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার হতে দেই না। কি লাভ শিক্ষার্থীদের জীবন নষ্ট করে। 

ড. মোহাম্মদ আনোয়ার সাঈদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এম.পি। তিনি উপাচার্যের সভাকক্ষে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে হল দুটি উদ্বোধন করেন।

আরও পড়ুন: পরীক্ষায় ‘নকলে ধরা খাওয়া’ প্রার্থীকে শিক্ষক পদে সুপারিশ চবির

চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দে। 

প্রসঙ্গত, প্রথমে ৯ কোটি ৭৫ লাখ ৮৫ হাজার টাকা ব্যয়ে ২০১৫ সালের ৮ অক্টোবর ছাত্রদের জন্য ১৮৬ আসন বিশিষ্ট ৪৫ হাজার বর্গফুটের দোতলা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের উদ্বোধন করা হয়। দু’টি লিফট, এসি পাঠাগার, ৫০ কেভি পাওয়ারের জেনারেটর, ক্যান্টিন, প্রার্থনাকক্ষ, ইনডোর খেলা, কমন রুম, ইউনিয়ন রুম, টিভি রুম, ওয়েটিং রুম, প্রভোস্ট রুম, শিক্ষকদের রুম, লন্ড্রি, দোকানসহ সব আধুনিক সুযোগ-সুবিধা রয়েছে হলটিতে।

পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদের সিট বরাদ্দ না দিয়ে ২০১৭ সালের ২০ জুলাই থেকে হলটির ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণের কাজ শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ। এর মধ্যে ১৮৬ আসন বিশিষ্ট দোতলা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলকে ৭৩৮ আসন বিশিষ্ট ছয় তলায় রূপান্তর করা হয়। ফলে এর মোট আয়তন দাঁড়ায় ১৩ হাজার ৮৪৮ বর্গ মিটার। যার নির্মাণ ব্যয় দেখানো হয় ৪২ কোটি ৯০ লাখ ৩২ হাজার টাকা। অন্যদিকে ৫ হাজার ৪৭৮ বর্গমিটার জায়গাজুড়ে সর্বমোট ১৬ কোটি ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে অতীশ দীপঙ্কর হলের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয় ২০১৬ সালের ২১ জানুয়ারি।