২৩ অক্টোবর ২০২৩, ১৫:৩১

বিশেষ সমাবর্তনে অংশ নেবেন ২০ হাজারেরও অধিক— যেভাবে শুরু হয় রীতি

সর্বশেষ ২০১৭ সালের ৪ জুলাই ঢাবিতে বিশেষ এই সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছিল  © ফাইল ছবি

জাতীয় ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তিদের সম্মানসূচক ডিগ্রি প্রদানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) বিশেষ সমাবর্তনের রীতি শুরু হয় ১৯৭৪ সাল থেকে। সর্বশেষ ২০১৭ সালের ৪ জুলাই বিশেষ এই সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেখানে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মহাপরিচালক ইউকিয়া আমানোকে সম্মানসূচক ‘ডক্টর অব লজ’ ডিগ্রি প্রদান করা হয়েছিল। তবে নিয়মিত সমাবর্তনেও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এই ডিগ্রি প্রদান করা হয়ে থাকে। নিয়মিত ও বিশেষ সমাবর্তনে সবমিলিয়ে অর্ধশতের অধিক বিশিষ্ট ব্যক্তিকে এই সম্মানসূচক ডিগ্রি প্রদান করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

আগামী ২৯ অক্টোবর আবারও বিশেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। সেখানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সম্মানসূচক ‘ডক্টর অব লজ’ (মরণোত্তর) ডিগ্রি দেওয়া হবে। সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মো. সাহাবুদ্দিন।

এদিন বেলা সাড়ে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে হবে এ সমাবর্তন। সমাবর্তনে ২০ হাজারেরও অধিক বিদেশি কূটনীতিক, আমন্ত্রিত অতিথিসহ সিনেট, সিন্ডিকেট ও অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অ্যালামনাই এবং রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েটরা অংশগ্রহণ করবেন বলে জানা গেছে।

জানা গেছে,  বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ডিগ্রি দিতে যে সমাবর্তন আয়োজন করা হয় সেখানে অংশ নেয়া সব শিক্ষার্থীদের টুপি-গাউন-কস্টিউম দেয়া হয়। তবে বিশেষ এই সমাবর্তনে শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রেশন করা শিক্ষকদের কস্টিউম দেয়া হবে। 

এদিকে, আজ সোমবার এবং আগামী বুধবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবন বুথ থেকে কস্টিউম সংগ্রহের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রেশন করা শিক্ষকদের আহ্বান জানানো হয়েছে। একই বুথ থেকে আগামীকাল মঙ্গলবার এবং আগামী বুধবার রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট ও অ্যালামনাইরা আমন্ত্রণপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন।

এ ছাড়া আগামীকাল মঙ্গলবার এবং আগামী বুধবার নিজ নিজ বিভাগ ও ইনস্টিটিউট থেকে আমন্ত্রণপত্র সংগ্রহের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রেশন করা শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অনুরোধ জানানো হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, এবারের বিশেষ সমাবর্তনে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ ২০ হাজারের বেশি উপস্থিত থাকবে বলে প্রত্যাশা করছি। বিশেষ সমাবর্তনের সকল কর্মসূচি সুষ্ঠু, সুশৃঙ্খল ও সফলভাবে বাস্তবায়ন করার জন্য সবার প্রতি আমি আহবান জানাচ্ছি।

সর্বশেষ ২০১৭ সালের ৪ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ছোট পরিসরে বিশেষ সমাবর্তনের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মহাপরিচালক ইউকিয়া আমানো। সমাবর্তন অনুষ্ঠানে তিনি ‘শান্তি ও উন্নয়নে পারমাণবিক শক্তি’ শীর্ষক বক্তব্য রাখেন। সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেছিলেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য আবদুল হামিদ। বিশেষ এই সমাবর্তনে ইউকিয়া আমানোকে ডক্টর অব লজ ডিগ্রি প্রদান করা হয়েছিল।

জানা যায়, ১৯৭৪ সাল থেকে বিশেষ সমাবর্তনের রীতি শুরু হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ওই সমাবর্তনে ৮ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে সম্মানসূচক ডিগ্রি প্রদান করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। তারা হলেন-অধ্যাপক সত্যেন্দ্রনাথ বোস (মরণোত্তর), জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ (মরণোত্তর), অধ্যাপক কাজী মোতাহার হোসেন, অধ্যাপক কুদরাত-ই-খুদা, অধ্যাপক হিরেন্দ্রলাল দেব, সাহিত্যিক আবুল ফজল ও ওস্তাদ আলী আকবর খান।