রাবির ফাঁকা আসনে ভর্তি হতে চান ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ফটো

২২ আসন ফাঁকা রেখেই গত ২৪ সেপ্টেম্বর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি কার্যক্রম শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে অনেকেই ভর্তি বাতিল করায় এখন পর্যন্ত তিন ইউনিটে ৭০টির অধিক আসন ফাঁকা হয়েছে। ফাঁকা আসনগুলোতে ভর্তি হওয়ার সুযোগ চেয়ে শেষবারের মতো মাইগ্রেশন ও মেধাতালিকা প্রকাশের আবেদন জানিয়েছেন অপেক্ষমান তালিকায় থাকা শিক্ষার্থীরা।

এদিকে ডিন অফিসগুলো থেকে জানানো হয়েছে, এই তিন ইউনিটে নতুন করে মেধাতালিকা প্রকাশ করলে বর্তমানে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা ক্ষতির মধ্যে পড়বেন। তবে ভর্তি পরীক্ষা কমিটি যদি চান তাহলে ফাঁকা আসনের বিপরীতে পরবর্তী মেধাতালিকা প্রকাশ করা যেতে পারে। 

আজ রোববার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার বরাবর লিখিত আবেদন দিয়েছেন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা। এছাড়া সংশ্লিষ্ট তিন ইউনিটের ডিন বরাবরও আবেদন করেছেন তারা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার তিন ইউনিটের সর্বশেষ মেধাতালিকার নোটিশগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, নোটিশগুলোতে লেখা হয়েছিল, উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আসন ফাঁকা থাকলে ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ভর্তি পরীক্ষার তারিখ বৃদ্ধি করলে মেধাক্রম অনুসারে পরবর্তী তালিকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।

আরও পড়ুন: চোখে পানি নিয়ে রক্তদান করেছিল শিক্ষার্থীরা, ছিল না হিন্দু-মুসলিম ভেদাভেদ

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, গত ২৩ সেপ্টেম্বর ভর্তি পরীক্ষার শেষ মেরিট লিস্ট প্রদান করা হয়। পরদিন পছন্দের বিষয়ের মাইগ্রেশন ও একই সাথে ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। সর্বশেষ নোটিশে বলা হয়েছিল ভবিষ্যতে কোনো আসন ফাঁকা হলে পুনরায় মেধাতালিকা প্রকাশ করা হবে। কিন্তু পরবর্তীতে কিছু আসন ফাঁকা হলেও আর কোনো মাইগ্রেশন কিংবা মেধাতালিকা প্রকাশ করা হয়নি। ফলে আমরা চরম দুশ্চিন্তা ও হতাশায় ভুগছি। ফাঁকা আসনগুলোতে যাতে আমরা ভর্তি হতে পারি তার জন্য রাবি প্রশাসনের কাছে শেষবারের মতো মাইগ্রেশন ও মেধাতালিকা প্রকাশের আবেদন জানাচ্ছি। 

অপেক্ষমান তালিকায় থাকা মোছা. সানিয়া তাসনিম বলেন, আমি রাবিতে একজন সেকেন্ড টাইমার হিসেবে পরীক্ষা দিয়েছিলাম। গত বছর ক্লাস শুরু হওয়ার পরেও কয়েকটা মেরিট লিস্ট দেওয়া হয়েছিল। তাছাড়া এবার সর্বশেষ মেরিট লিস্টের নোটিশে বলা হয়েছিল, উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সিট ফাঁকা হলে পুনরায় মাইগ্রেশন ও মেরিট লিস্ট দেওয়া হবে। আমি ভর্তি কমিটির কাছে আবেদন জানাই, তারা যেন আর একটিবার মেরিট লিস্ট প্রকাশ করেন। ফলে কাছাকাছি পজিশনে থাকা শিক্ষার্থীরা আসন পাবেন এবং হয়রানি থেকে মুক্তি পাবেন।

ভর্তিচ্ছু আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আমি বিশ্ববিদ্যালয় ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগে এ বছর ভর্তি হয়েছি। কিন্তু আমার পছন্দের বিভাগ গণিত। গণিতে ৩ নম্বর ওয়েটিংয়ে রয়েছি। কৃষি গুচ্ছ ভর্তি হওয়ার পর মনে করেছিলাম আমি আমার কাঙ্ক্ষিত সাবজেক্ট পাব। প্রতিবছর কৃষিগুচ্ছ ভর্তি হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বড় একটা মাইগ্রেশন দেয়। কিন্তু এবছর মাইগ্রেশন না দেওয়ায় আমি এবং আমার মতো অনেকেই কাঙ্ক্ষিত সাবজেক্ট পাইনি। আমি ও আমার মতো অনেক শিক্ষার্থীর আশা পূরণে রাবি প্রশাসনের কাছে শেষবারের মতো একটা মেধাতালিকা প্রকাশ করার আবেদন জানাচ্ছি।

আরও পড়ুন: রাবির ৩৫১ শিক্ষার্থী পেলেন ফেলোশিপ

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের 'এ' ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা সমন্বয়ক অধ্যাপক ড. মো. ইলিয়াছ হোসেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, পরবর্তী আর কোনো মেরিট লিস্ট দেওয়া হবে কি না তা ভর্তি কমিটির সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে। ইতোমধ্যে প্রথম বর্ষের ২০ দিনের মতো ক্লাস হয়ে গেছে। নতুন করে আবার মেরিট লিস্ট প্রদান করলে বর্তমানে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা একটা ক্ষতির মধ্যে পড়ে যাবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট আসনের বিপরীতে ফাঁকা আসনের সংখ্যা খুবই কম। এই সীমিত সংখ্যক সিট ফাঁকা থাকা কোনো বিষয় না। নতুন করে আবার ভর্তি কার্যক্রম শুরু করা মানে বর্তমান শিক্ষার্থীদের ক্ষতি করা।

তিনি আরও বলেন, প্রত্যেকটা জিনিসের একটা ডেডলাইন আছে। ভর্তি বাতিল করা একটা ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। অনেকেই জানুয়ারি মাসে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চলে যাবে। সারা বছর ধরে ভর্তি ক্যান্সেল হয়ে থাকে। বরং এ বছর ভর্তি ক্যান্সেল হওয়ার সংখ্যাটা অনেক কম। সেমিস্টার সিস্টেমে আমরা ১৩-১৪ সপ্তাহ ক্লাস নিয়ে থাকি। এর মধ্যে অটোমেটিক্যালি ২-৩ সপ্তাহ চলে গেছে। ফলে নতুন করে মেরিট লিস্ট দিয়ে ভর্তি করালে সেসব শিক্ষার্থীরা রেজাল্ট ভালো করতে পারবেন না। তারপরও বিষয়টা ভর্তি কমিটির সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে। 


সর্বশেষ সংবাদ