বিভিন্ন দাবিতে রাবিতে সনাতনী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন ও জাতীয় সংখ্যালঘু সুরক্ষা কমিশন গঠনসহ বিভিন্ন দাবিতে মানববন্ধন করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সনাতনী শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সোমবার (৯ অক্টোবর) সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবন সংলগ্ন প্যারিস রোডে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।
এসময় সংখ্যালঘু সনাতনীদের উপর বিভিন্ন সময়ে ঘটে যাওয়ার বিভিন্ন চিত্র প্লেকার্ড তুলে ধরেন তারা। সম্প্রতি কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে চারণ কবি রাধাপদ রায়ের উপর নির্যাতন, নড়াইলের লোহাগাড়ার সাহাপাড়ায় ২০২২ সালের ঘটনা, রংপুরের পীরগঞ্জে ২০২১ সালের ঘটনা, কক্সবাজারের রামুতে ২০১৩ ও ২০১৪ সালে নির্বাচনকালীন সহিংসতা, ২০০১ সালে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার ঘটনাগুলো প্লেকার্ডে তুলে ধরেন তারা।
এসকল সহিংসতা রুখতে এবং সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন, অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন ও দেবোত্তর সম্পত্তি সংরক্ষণ আইন প্রণয়ন, বৈষম্য বিলোপ আইন প্ৰণয়ন, ধর্ম অবমাননার মিথ্যা মামলায় আটককৃতদের মুক্তি প্রদানসহ ও নির্বাচনী ইশতেহারের প্রতিশ্রুতিসমূহ অবিলম্বে বাস্তবায়ন করার জন্য মানববন্ধনে আহ্বান জানান সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
মানববন্ধনে সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক ড. জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, বাংলাদেশে কেউ সংখ্যালঘু নয়। বাংলাদেশ যারা জন্মগ্রহণ করেছে তারা সবাই ভাই ভাই। আমরা আজন্ম হিন্দু-মুসলিম ভাই ভাই ছিলাম, আছি এবং থাকব। ধর্মীয় সম্প্রীতির দেশ হলো বাংলাদেশ। কিছু দুষ্কৃতিকারী ও ধর্মীয় লেবাসধারীরা ধর্মকে ভাগ করতে চাই। ২০০১ সালের পর থেকে সংখ্যালঘু নাম দিয়ে আমাদের সনাতন ধর্মাবল্বীদের উপর নির্যাতন করা হচ্ছে। বিশেষ করে ধর্মীয় উৎসবগুলোর সময় কিছু দুষ্কৃতকারী হামলা-ভাংচুর চালায়। তাদেরকে শাস্তির আওয়ায় আনতে হবে। সামনে যারা এসব কাজের সাথে যুক্ত থাকবে তাদেরকেও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
মানববন্ধনে মনোমোহন বাপ্পা বলেন, আমরা সংখ্যালঘু হওয়ায় বিভিন্ন সময়ে আমাদের উপর হামলা-নির্যাতন করা হচ্ছে। কিন্তু আমরা এর কোনো সুষ্ঠু বিচার পাচ্ছি না। পাগলের কোনো বিচার হয় না। এজন্য হামলা হওয়ার পর পাগল বলে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তাই আমরা এখানে সংখ্যালঘু আইন বাস্তবায়নের দাবিতে একত্রিত হয়েছি। এই আইন বাস্তবায়নে সরকার যে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা তারা এখনো পালন করেননি। শুধু আওয়ামী লীগ সরকার নয়, পূর্ববর্তী সরকারও আমাদের অবজ্ঞা করে গেছেন।
তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে বলে আমরা বিএনপি করি, বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসলে বলে আমরা আওয়ামী লীগ করি। বিএনপিরা বলে এদেশ থেকে হিন্দুরা চলে গেলে ধর্ম বাঁচবে, দেশ বাঁচবে। আর আওয়ামী লীগরা বলে এদেশে যদি হিন্দুরা থাকে তাহলে ভোট পাবো আর এদেশ থেকে চলে গেলে ভূমি পাবো। এই নীতিতে তাঁরা এখন বিশ্বাসী।