০৮ অক্টোবর ২০২৩, ১২:৫৪

চবির সহিংসতার এক মাসেও জমা হয়নি প্রতিবেদন, গ্রেপ্তারও নেই

৭ সেপ্টেম্বর রাতে ক্যাম্পাসে ব্যাপক সহিংসতা হয়েছে  © ফাইল ছবি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবন, শিক্ষক ক্লাব, পুলিশ বক্স ও অর্ধশতাধিক যানবাহন ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় গঠিত দুটি তদন্ত কমিটি এক মাসেও প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি। এছাড়া এসব ঘটনায় দুটি মামলা হলেও রবিবার পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

মামলা ও বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দুই মামলার এজাহারভুক্ত ১৪ আসামির মধ্যে ১২ জনই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের (কমিটি সদ্যোবিলুপ্ত) নেতাকর্মী। মামলার পর শাখা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে এজাহারভুক্ত আসামিদের নাম বাদ দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে স্মারকলিপি দিয়ে আলটিমেটাম দিয়েছিল সংগঠনটি।

গত ৭ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) রাতে শাটল ট্রেনের ছাদে চড়ে ক্যাম্পাসে ফেরার সময় গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে অন্তত ১৫ শিক্ষার্থী আহত হন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই রাতে ক্যাম্পাসে হওয়া সহিংসতায় আনুমানিক ৩০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ৫০টি বাস ভাঙচুর করা হয়েছে।

এ ঘটনায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কোনও বিশেষ গোষ্ঠী ইন্ধন দিয়েছে কিনা সেটি খতিয়ে দেখা হবে বলে জানায় বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য ড. শিরিন আক্তার। সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য বলেন, হামলাকারীরা মুখোশধারী ছিলো। তারা যেভাবে তাণ্ডব চালিয়েছে তা ছাত্রসুলভ ছিলো না। পুলিশের গাফিলতি ছিলো বলেও অভিযোগ করেন তিনি। 

ড. শিরিন আক্তার বলেন, যারা এর সাথে জড়িত তাদের শাস্তির আওতায় আনা হবে। ভাঙচুরের ঘটনায় হাটহাজারী থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে আলাদা একাধিক মামলা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

আরও পড়ুন: কমিটি ভেঙে দিয়েও থামানো যাচ্ছে না চবি ছাত্রলীগকে

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ে সহিংসতার ঘটনায় গঠিত কমিটির আহ্বায়ক ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ বশির আহম্মদ বলেন, তদন্ত কার্যক্রম চলছে। কাজ শেষ হলে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।

হাটহাজারী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ নুরুল আলম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে করা মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি ১৪ এবং অজ্ঞাতনামা হাজারের বেশি। এখন পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। মামলা দুটি তদন্তাধীন। তদন্ত কার্যক্রম শেষ হলে আদালতে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।

থেমে নেই সংঘাত-সহিংসতা
এদিকে, গত ২৪ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম আলোর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মোশাররফ শাহর ওপর হামলার পর শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্তি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। কমিটি ভেঙে দেওয়া হলেও থেমে নেই বিভিন্ন গ্রুপ-উপগ্রুপের সংঘাত-সংঘর্ষ।

কমিটি বিলুপ্তির দুই সপ্তাহ না পেরোতেই ফের সংঘর্ষে জড়িয়েছে দুই উপগ্রুপ সিক্সটি নাইন ও বিজয়ের একাংশ। গত ০৬ অক্টোবর (শুক্রবার) বিশ্ববিদ্যালয়ের সোহরাওয়ার্দী হল-সংলগ্ন একটি হোটেলে খাবার খেতে গিয়ে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ২১ জন আহত হয়েছেন।

এর আগে, গত ২৪ সেপ্টেম্বর (রোববার) কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের স্বাক্ষর করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কমিটির ঘোষণা করা হয়। কমিটি বিলুপ্তির তিনদিন আগে থেকে অর্থাৎ ২১-২৪ সেপ্টেম্বর টানা চারদিন তিন গ্রুপে আট দফা সংঘর্ষ হয় ক্যাম্পাসে।