রাবির হলে পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার নিশ্চিতে মেস সিস্টেম চালু
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবির) সৈয়দ আমীর আলী হলে আবাসিক শিক্ষার্থীদের পরিচালনায় ডাইনিংয়ে মেস সিস্টেম চালু হয়েছে।গুণগত পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার নিশ্চিত করতে চালু হওয়া এ পদ্ধতি শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। অনেকদিন পর ডাইনিংয়ে আত্মতৃপ্তির সাথে খেতে পেরে শিক্ষার্থীরা এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছেন। পাশাপাশি এই সিস্টেম দীর্ঘমেয়াদী করার আহ্বান জানান শিক্ষার্থীরা।
রোববার (১ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টায় এর উদ্বোধন করেন ওই হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. এ. কে. এম. মাহমুদুল হক।
শিক্ষার্থীরা তাদের হলের ডাইনিংয়ের নাম পরিবর্তন করে 'ইসাবেল ক্যাটারিং' নামকরণ করেছেন। ইসাবেল ক্যাটারিংয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেকে এক মাসের জন্য দুজনকে ম্যানেজারের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ম্যানেজারের কথামতো প্রতিদিন দুজন করে বাজারে যাবেন। পূর্বনির্ধারিত খাবারের তালিকার অনুযায়ী বাজার করবেন তারা। এই পদ্ধতিতে দুপুর ও রাতের খাবারের মূল্য ৩৫ টাকা করে নির্ধারিত হয়েছে। আগের দিনের ইস্যুকৃত টোকেন ছাড়া কাউকে খাবার দেওয়া হবে না।
প্রথম দিনের খাবার খেয়ে শিক্ষার্থীরা বলছেন, অনেকদিন পর তারা আত্মতৃপ্তির সাথে খেয়েছেন। খাবারের মান যথেষ্ট ভালো। হলের ডাইনিংগুলোতে এমন খাবার এর আগে তারা পায়নি। কম টাকায় ভালো মানের খাবার পেয়ে আশ্চর্য বনে যাচ্ছেন তারা। এ সিস্টেম চালু থাকলে হলের খাবারের বিষয়ে আর কোনো অভিযোগ থাকবে না বলে জানাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। তারা চাচ্ছেন, এই সিস্টেম দীর্ঘমেয়াদী হোক।
প্রথম দিনের মিলের খাবার খেয়ে আমীর আলী হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আব্দুর নুর সরকার বলেন, ৩৫ টাকায় এমন খাবার খেয়ে আশ্চর্য হয়ে গেছি। কারণ এতো কম টাকায় এতো ভালো মানের খাবার এর আগে আমরা পাইনি। মনে হলো বাড়ির খাবার খেলাম। আমার ৫ বছরের ইতিহাসে এটা একটা বিরল ঘটনা। আমরা এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। এটা ধরে রাখতে পারলে শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া পাওয়া যাবে। আমরা চাই এ ব্যবস্থাপনাটা দীর্ঘমেয়াদী হোক।
আরেক শিক্ষার্থী জাহিদ হাসান বলেন, আমরা এতোদিন যে খাবার খেতাম, তাতে আমরা সন্তুষ্ট ছিলাম না। এটা আমাদের প্রধান সমস্যা ছিল। এই সমস্যা সমাধানের জন্য আমাদের প্রভোস্ট স্যার এগিয়ে আসেন। তিনি একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেন। যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ব্যবস্থাপনায় সুন্দর একটি ব্যবস্থা চালু হয়েছে। এই মিল খেয়ে আমরা সন্তুষ্ট। ভবিষ্যতে এই ধারা অব্যাহত থাকবে এটাই প্রত্যাশা।
দিলবর নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, মেস সিস্টেমে প্রথম দিন খাচ্ছি। অনেকদিন পর আত্মতৃপ্তির সাথে খেলাম। খাবারের মান যথেষ্ট ভালো। আমরা চাই এই সিস্টেম যেন দীর্ঘদিন চালু থাকে। তাহলে শিক্ষার্থীদের পুষ্টিগুণ সমুন্নত থাকবে। আজ খাবারের বিষয়ে কারো কোনো অভিযোগ নেই।
‘ইসাবেল ক্যাটারিং’ উদ্বোধন করে অধ্যাপক মাহমুদুল হক বলেন, আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলাম। সেসময় আমাদের হলে এই সিস্টেম আমরা দেখে এসেছি। এটা খুবই চমৎকার একটি পদ্ধতি। এই সিস্টেমের অনেক উপকারিতা আছে। শিক্ষার্থীরা কম টাকায় পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার খেতে পারবে। তাছাড়া এই সিস্টেম চালুর ফলে ডাইনিং কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভালো একটা সম্পর্ক তৈরি হবে। আমি চাই এই সিস্টেমটা দীর্ঘমেয়াদী হোক যাতে শিক্ষার্থীরা কম টাকায় পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার খেতে পারে।