তিন বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিরতা, নেপথ্যে ছাত্রলীগ
ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্ব, মারামারি, ভাংচুর, পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগের আবদার, সিট দখলসহ নানা কারণে অস্থির হয়ে উঠেছে দেশের শীর্ষস্থানীয় তিন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। এমনকি পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে যাওয়া এক সাংবাদিককে বেধড়ক পিটিয়েছে নেতাকর্মীরা। ঘটনার পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বাতিল করা হয়েছে। অস্থিরতা চলছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েও (রাবি)।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে মোশাররফ শাহ নামের এক সাংবাদিককে মারধর করেছেন শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেলের নেতৃত্বাধীন সিএফসি গ্রুপের কর্মীরা। মোশাররফ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সদস্য ও প্রথম আলোর প্রতিনিধি। তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) ক্যাম্পাসের দ্বিতীয় কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের সামনে তাকে মারধর করা হয়। ‘ছাত্রলীগ নিয়ে কেন নিউজ হয়েছে’ বলেই মারধর শুরু করেন ছাত্রলীগের কর্মীরা।
তার শারীরিক অবস্থার বর্ণনা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা মো. আবু তৈয়ব বলেন, মোশাররফের কপালে চার সেলাই দিতে হয়েছে। তার হাতেও আঘাত রয়েছে। এক্সরে করাতে হবে। বর্তমানে তাকে উন্নত চিকিৎসা জন্য চমেকে পাঠানো হয়েছে।
ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সিএফসির নেতা রেজাউল হক রুবেল বলেন, এ ঘটনায় যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাংবাদিককে মারধরের পরপরই বিলুপ্ত করা হয়েছে শাখা ছাত্রলীগের কমিটি। ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক শেখ ইনান সাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই বিলুপ্তির কথা জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের জরুরি সিদ্ধান্ত মোতাবেক জানানো যাচ্ছে যে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার বর্তমান কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হলো।
চলমান অস্থিরতার কারণে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব শেষ হওয়া শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এছাড়া শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদেরও হল ছাড়তে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রোববার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার কে. এম. নুর আহমদ স্বাক্ষরিত এক জরুরী বিজ্ঞপ্তি এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে কাউকে অবস্থানরত অবস্থায় পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
এর আগেও এক নারী সাংবাদিককে হেনস্তা ও হুমকি, চায়ের দোকানে বসাকে কেন্দ্র করে আরেক সাংবাদিককে মারধর, শিক্ষককে হুমকি এবং চিফ ইঞ্জিনিয়ার ও নিরাপত্তা প্রধানকে মারধরসহ কয়েক দফায় মারামারিতে জড়ায় চবি ছাত্রলীগ। অস্ত্রসহ মহড়া দিতে দেখা গেছে অনেককে। এসব ঘটনায় নিয়মিত সংবাদের শিরোনাম হয়েছে তারা।
শাখা ছাত্রলীগের বেপরোয়া কর্মকাণ্ড থেকে রেহাই পায়নি উপাচার্য দপ্তরও। পরিবহনের প্রায় ৬০টি গাড়ি, শিক্ষক ক্লাব ও পুলিশ বক্স ভাংচুরসহ প্রায়ই সংঘর্ষে জড়ান নেতা-কর্মীরা। এসব ঘটনার জেরেই রোববার চবি ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক বিষয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দে বলেন, মারধরের বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। তাকে সাংবাদিক বলার আগে সে শিক্ষার্থী। যারা এ ঘটনায় জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রশাসন মামলা করবে কিনা তা পরে জানানো হবে। বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়েছি। পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আসবে।
এক নারী সাংবাদিককে হেনস্তা ও হুমকি, চায়ের দোকানে বসাকে কেন্দ্র করে আরেক সাংবাদিককে মারধর, শিক্ষককে হুমকি এবং চিফ ইঞ্জিনিয়ার ও নিরাপত্তা প্রধানকে মারধরসহ কয়েক দফায় মারামারিতে জড়ায় চবি ছাত্রলীগ। অস্ত্রমহ মহড়া দিতে দেখা গেছে অনেককে। এসব ঘটনায় সংবাদের শিরোনাম হয়েছে তারা।
এদিকে এক নেত্রীকে রসায়ন বিভাগের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ না দেয়ায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ইনস্টিটিউট অব রিমোট সেনসিং এন্ড জিআইএস এর শিক্ষক নিয়োগ বোর্ডে ছাত্রলীগের বাধা দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় প্রায় দু’ঘণ্টা উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে রাখে তারা। রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) নতুন প্রশাসনিক ভবনের তৃতীয় তলায় উপাচার্য অফিসের সামনে এ ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ভবনের আশপাশে অবস্থান নিতে দেখা গেছে।
জানা গেছে, রিমোট সেনসিং এন্ড জিআইএস ইনস্টিটিটিউটের শিক্ষক নিয়োগের জন্য নিয়োগ বোর্ড শুরু হওয়ার কথা ছিলো সকাল ১০টায়। এ সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এসে প্রার্থীদের বের করে উপাচার্য কার্যালয় অবরোধ করেন। পরে ১২টায় উপাচার্যের সচিব গৌতম কুমার বিশ্বাস এসে প্রার্থীদের জানান, আজকের মতো বোর্ড স্থগিত।
পরে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে কাউন্সিল কক্ষে বৈঠকে বসেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নূরুল আলম। এ সময় উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক শেখ মনজুরুল হক, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মোস্তফা ফিরোজ, ট্রেজারার অধ্যাপক রাশেদা আখতারসহ ডিন ও শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।
শাখা ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক আশরাফুল গোলদারের ভাষ্য, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের বাইরে কাউকে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে চাই না। এ দাবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে অনেকবার জানিয়েছি। উপাচার্য অপারগ হয়ে জানিয়েছেন তিনি চাইলেও অনেকের চাপে তা সম্ভব হয় না। আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের পরিপন্থী লোকদের শিক্ষক হিসেবে চাই না।
তবে জানা গেছে, গত ২০ সেপ্টেম্বর সিন্ডিকেট সভায় রসায়ন বিভাগের তিন প্রভাষককে নিয়োগ দেয় প্রশাসন। নবনিযুক্ত প্রভাষকরা জয়েন করেছেন। তবে শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সাদিয়া আফরিন পাপড়িকে নিয়োগ না দেয়ায় উপাচার্য অফিস অবরোধ করেছেন নেতাকর্মীরা।
রসায়ন বিভাগ সূত্র জানায়, নবনিযুক্ত তিনজন প্রভাষক ৩৯, ৪২ ও ৪৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী। প্রত্যেকেই নিজ বর্ষে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে প্রথম বা দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে। তবে পাপড়ির স্নাতকে পঞ্চম ও স্নাতকোত্তরে তৃতীয় স্থান রয়েছে। তার বিরুদ্ধে তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষায় নকল করে বহিস্কৃত ও প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
জাবির নিয়োগ বোর্ড স্থগিত হওয়ায় বিপাকে পড়েন মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিতে আসা পরীক্ষার্থীরা। প্রায় দু’ঘণ্টা বসে থাকার পর পরীক্ষা না দিয়েই তারা ফিরে গেছেন। খিলগাঁও থেকে আসা সুজন বলেন, অফিস থেকে ছুটি নিয়ে পরীক্ষা দিতে এসেছি। লম্বা সময় অপেক্ষা করার পর শুনি ভাইভা হবে না। এটা কাম্য নয়।
ইনস্টিটিউট অব রিমোট সেন্সিং’র পরিচালক অধ্যাপক শেখ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের বিভাগের জন্য শিক্ষক নিয়োগ খুবই জরুরি ছিল। একটি শুন্য পদের বিপরীতে ২৩ জন ক্যান্ডিডেট ছিল। তবে বোর্ড স্থগিত হওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা।
জাবির নিয়োগ বোর্ড স্থগিত হওয়ায় বিপাকে পড়েন মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিতে আসা পরীক্ষার্থীরা। প্রায় দু’ঘণ্টা বসে থাকার পর পরীক্ষা না দিয়েই তারা ফিরে গেছেন। খিলগাঁও থেকে আসা সুজন বলেন, অফিস থেকে ছুটি নিয়ে পরীক্ষা দিতে এসেছি। লম্বা সময় অপেক্ষা করার পর শুনি ভাইভা হবে না। এটা কাম্য নয়।
এর আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) রহমতুন্নেসা হলে অবৈধভাবে অবস্থান করায় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না তন্নীকে কক্ষ ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে হল প্রশাসন। তবে নির্দেশ অমান্য করে তিনিসহ অন্যান্য হলের নেত্রীরা শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) হল গেটে তালা দেন। এতে ভোগান্তিতে পড়েন শিক্ষার্থীরা। পরে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা গেলে তালা খুলে দেন তাঁরা।
তন্নী বিশ্ববিদ্যালয়ের চিত্রকলা প্রাচ্যকলা ও ছাঁপচিত্র বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের শিক্ষার্থী। হল প্রসাশনের অভিযোগ, তন্নী হলের ৪৫৯ নম্বর কক্ষে থাকেন। কক্ষটি চার সিটের। সেখানে একটা সিট ফাঁকা। একজনকে বরাদ্দ দিলেও উঠতে দিচ্ছেন না তন্নী। এছাড়াও তার মাস্টার্সের পরীক্ষা শেষ হয়েছে ১৮ মাস আগে। তিনি রানিং শিক্ষার্থী নন।
তবে তামান্না আক্তার বলেছেন, তিনি এমফিলের জন্য আবেদন করেছেন। এদিকে হল প্রশাসন বলছেন, রহমতুন্নেছা হলে এমফিল শিক্ষার্থীদের জন্য কোনো সিট বরাদ্দ নেই।
আরো পড়ুন: চবি ছাত্রলীগের লাগাম টেনে ধরবে কে?
এ ঘটনার পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভিসি, প্রো-ভিসিসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভুল সিদ্ধান্ত ছিল বলে অভিযোগ করেছেন মন্নুজান হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফারজানা শশী। শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাতে নিজের ফেসবুকে লাইভে এসে এমন মন্তব্য তিনি।
ফেসবুক লাইভে শশী বলেন, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ছোট করে প্রতিনিয়ত নিউজ করছে সাংবাদিকরা। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো কথাই বলছে না। আপনারা যদি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের পাশে না থাকেন, তাহলে বলবো ভিসি-প্রোভিসি ও প্রক্টর ছাত্র উপদেষ্টাকে আওয়ামী পরিষদ থেকে নিয়োগ দেওয়াই ভুল সিদ্ধান্ত।
লাইভে তিনি বলেন, কয়েকদিন ধরে দেখছি বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের নিয়ে নিউজ হচ্ছে। নিউজে এতো লাল-নীল-হলুদ রংঢং দিয়ে সাংবাদিকতা করা উচিত নয়। ছাত্রলীগ নেত্রীদের হলে সাম্রাজ্য দ্বারা কী বুঝাচ্ছেন। স্মার্ট সাংবাদিকতা করেন। ছাত্রলীগের ট্যাগ লাগাতে পারলেই নিউজ হিট।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভিসি, প্রো-ভিসিসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভুল সিদ্ধান্ত ছিল বলে অভিযোগ করেছেন মন্নুজান হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফারজানা শশী। শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাতে নিজের ফেসবুকে লাইভে এসে এমন মন্তব্য তিনি।
এর আগেই অবশ্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের ২৬তম বার্ষিক সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন। সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) শাখা সম্মেলনে প্রথম অধিবেশনের শেষ পর্যায়ে তিনি এ ঘোষণ দেন।
পরে সাদ্দাম বলেন, ছাত্রলীগের কোনো কর্মী পদ পাওয়ার জন্য ছাত্রলীগ করে না। তারা দলের স্বার্থে ও শিক্ষার্থীদের স্বার্থে কাজ করে। আগামীতে যারা নেতৃত্বে আসবে তাদের সবাইকে আপনারা মেনে নেবেন এবং একসঙ্গে ইউনিটকে আরো শক্তিশালী করবেন।
অপরদিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের মাস্টার্সের ডিস-কলেজিয়েট (ক্লাসে অনিয়মিত) হওয়া ৩১ জনকে পরীক্ষায় বসতে না দেওয়ায় বিভাগের সভাপতির কক্ষসহ বিভিন্ন কক্ষে তালা দিয়ে আন্দোলনে করেছে শিক্ষার্থীরা। কলেজিয়েট হওয়া এক শিক্ষার্থীও আন্দোলনে যোগ দেন। রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) ইসমাইল হোসেন সিরাজী ভবনের প্রথম তলায় বিভাগের সামনে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা।
এসময় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন দাবি পেশ করেন। দাবিসমূহের মধ্যে রয়েছে- মাস্টার্সের পূর্বনির্ধারিত পরীক্ষা স্থগিত করতে হবে। সকল শিক্ষার্থীকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দিয়ে অনতিবিলম্বে নতুন করে মাস্টার্স পরীক্ষা ঘোষণা করা, মাস্টার্সের পূর্ণাঙ্গ সিলেবাস প্রদান করাসহ, সকল কোর্সের জন্য পর্যাপ্ত ক্লাস গ্রহণ করতে হবে, শিক্ষকদের খেয়ালখুশি মতো ক্লাস নেয়ার অপসংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে, ফর্ম পূরণের জন্য কমপক্ষে এক সপ্তাহ সময় দিতে হবে, বিভাগের উন্নয়ন ফি বাবদ অতিরিক্ত ফি প্রত্যাহার করতে হবে।
জানা গেছে, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের মাস্টার্সের ৪৪ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩১ জনই ডিস-কলেজিয়েট হয়েছে। পরীক্ষা বর্জন করে এক শিক্ষার্থীও তাদের সহপাঠীদের সাথে আন্দোলনে যোগ দেন। ফলে বাকি ১২ জনের পরীক্ষা রোববার শুরু হয়। এ সময় সেখানে গিয়ে ডিস-কলেজিয়েট হওয়া শিক্ষার্থীরা রুমের গেটে লাথি মারতে থাকে এবং ফোকলোর বিভাগের গেটে তালা বুঝিয়ে বিভাগের সভাপতিকে সরকারবিরোধী আখ্যা দিয়ে স্লোগান দিতে থাকে।
পরে প্রক্টর অধ্যাপক ড. আসাবুল হকের নেতৃত্বে প্রক্টরিয়াল বডি এসে তাদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেন। সভাপতির সাথে প্রক্টরিয়াল বডি আলোচনা করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের শান্ত করে।
ফোকলোর বিভাগের সভাপতি ড. মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ৩১ জন শিক্ষার্থী ডিস-কলেজিয়েট হয়েছে। তাদেরকে পরীক্ষায় বসতে সুযোগ না দেওয়ায় তারা আন্দোলন করেছে। অনেকেই একদিনও ক্লাস করেনি। এ বিষয়ে আমরা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি। আমাদের একটা মিটিং ডাকা হয়েছে। সেখানে তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।