ঢাবি ছাত্র ফিরোজের মৃত্যু, স্ট্যাটাসে যা জানালেন তার সহপাঠী
গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত পৌনে ১ টায় চীনা ভাষা ও সংস্কৃতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী (২০১৯ -২০) কাজী ফিরোজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হলের যমুনা ব্লক থেকে পড়ে গিয়ে মারা যান। প্রাথমিকভাবে তার মৃত্যুকে আত্মহত্যা হিসেবেই ভাবা হচ্ছে।
এসময় তার আত্মহত্যার কারণ হিসেবে মানসিক ভাবে বিষন্নতা এবং হতাশাগ্রস্থতা দায়ী করছেন তার হল এবং বিভাগের সহপাঠীরা। মারা যাওয়ার পর তার রুম থেকে কিছু সুইসাইড নোট উদ্ধার করা হয় সেখানে ফিরোজ লিখেছেন, ‘মানুষ বাঁচে তার সম্মানে। আজ মানুষের সামনে আমার যেহেতু সম্মান নেই, এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকার আমার কোনো অধিকার নেই। আমার মৃত্যুর দায়ভার একান্ত আমার। সরি মা! বাড়ি থেকে তোমাকে দিয়ে আসা কথা রাখতে পারলাম না। আমার জীবন নিয়ে হতাশ’।
তার এ ধরনের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে মানসিক হতাশাসহ বিভিন্ন কারণ দায়ী করা হলেও আরেকটি বিষয় সম্প্রতি সামনে এসেছে সেটি হলো প্রেম বিচ্ছেদ।
জানা যায়, সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেরুন নেছার সাথে দীর্ঘদিন তার প্রেমের সম্পর্ক চলছিলো। সম্প্রতি তাদের সম্পর্কের অবনতি ঘটলে তিনি মানসিক ভাবে হতাশায় ভুগছিলেন।
তার বেস্ট ফ্রেন্ড পরিচয় দিয়ে সম্প্রতি একজন ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে জানিয়েছেন, ‘বেস্ট ফ্রেন্ড হিসেবে নিয়মিত খুঁজ খবর নেয়ার অংশ হিসেবে গত শুক্রবার(১৫-০৯-২০২৩) সকাল ১১ টায় ফোন দেই। জানতে পারি ওদের সম্পর্ক ঠিক করার জন্য ফিরোজের মা, বড় ভাই, ছোট ভাই ক্যাম্পাসে আসছে। মেয়েটা সবার নম্বর ব্লক লিস্টে রেখেছে। আমি ওদের কাছে যেয়ে আমার ফোন থেকে ফোন দেই। কথা না বলেই আমাকে ব্লক করে দিল!
মা ও পরিবার সুদূর গোপালগঞ্জ থেকে ঢাকা এসেও ব্যার্থ হয়ে বাসায় চলে যায়। ফিরোজকেসহ আমি গাড়িতে তুলে দেই। রবিবার ফিরোজ আবার ক্যাম্পাসে আসে। আমরা সারাদিন একসাথে ছিলাম, রাত ২ টা পর্যন্ত মুহসীন হলের ছাদে আড্ডা দিয়েছি। অনেক আলাপ করেছি। অনেক বুঝিয়েছি। ফিরোজের কষ্টের জায়গাটা হলো, বাসায় যেয়ে ফিরোজের মা মেয়েকে ফোন দিয়েছিল অন্য নম্বর দিয়ে। রিসিভ করার পর ফিরোজের মায়ের পরিচয় জানার সাথে সাথেই ফোন কেটে ব্লক দেয়। অথচ অনেক আগের ভিডিওতে দেখেছি ওর মার সাথে কত মুহাব্বতের সাথে কথা বলেছে। ওর নানার খুঁজ খবর নেয়ার পর ওর বাবার কথা জিজ্ঞেস করার সময় বলেছিল, " আর আমার বাবা কেমন আছে?"
সেই মেয়ে কিভাবে এত অপমান করতে পারলো! ফিরোজ ওর মাকে কথা দিয়ে এসেছিল মেয়ের জন্য নিজের ক্ষতি করবে না। সেই কথা রাখতে পারেনি। কতভাবে, কতজনের মাধ্যমে মেয়ের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছে। একটু দেখা করার জন্য সারারাত বঙ্গমাতা হলের সামনে দাড়িয়ে থাকতো। মেয়ের সাথেও আমাদের পরিচয় ছিল, ওদের প্রেম ভালোবাসা দেখে বেস্ট কাপল মনে হতো। ফিরোজের মা আমাকে ওদের বাড়ি যেতে বলতো, আজ যাচ্ছি। তবে ফিরোজের লাশ’