দাবি মেনে নিতে চার দিনের আল্টিমেটাম ইবি কর্মকর্তাদের
১৬ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সাধারণ সভা করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) কর্মকর্তারা। সভা থেকে ঘোষণা করা হয়, আগামী চারদিনের মধ্যে দাবি মেনে না নিলে কঠোর আন্দোলনে যাবেন তারা। আগামী শনিবার সভা করে এ কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেবেন বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি এটি এম এমদাদুল হক। উপাচার্য বরাবর এ দাবি জানান তারা।
সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে গাছতলায় এ সভা করেন। সভাটি বেলা ৯ টায় শুরু হয়ে দেড়টায় শেষ হয়। সভায় প্রায় তিন শতাধিক কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। দাবি আদায়ে এর আগে কর্মকর্তারা লাগাতার পাঁচ ঘন্টা করে কর্মবিরতি পালন করছেন।
কর্মকর্তাদের উল্লেখযোগ্য দাবিগুলো হলো, চাকরির বয়সসীমা ৬২ বছর করা, সিন্ডিকেটর সিদ্ধান্ত মোতাবেক কর্মকর্তাদের সেশন বেনিফিট বহাল রাখা, আইসিটি সেলের উপ-রেজিস্ট্রার মমতাজের চাকরি হতে অব্যহতির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার, পোষ্য কোটার ভর্তিতে শর্ত শিথিল করা, বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরতাবস্থায় মৃত্যুজনিত কারণে কর্মচারীবৃন্দের পরিবারের যোগ্যতম ব্যক্তিকে সিণ্ডিকেটের সিদ্ধান্ত মোতাবেক
মৃত্যুর ৯০ (নব্বই) দিনের মধ্যেই চাকুরী প্রদানের বিষয়টি বাস্তবায়নের বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে, পরীক্ষা সংক্রান্ত কাজে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পরীক্ষার পারিশ্রমিক বৃদ্ধি করা এবং সিন্ডিকেটের অনুমোদিত কর্মচারীদের পদোন্নতি নীতিমালার বিশেষ টিকার আলোকে ১১ জন প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে শাখা কর্মকর্তা পদে পদোন্নতি প্রদান করতে হবে।
তাদের অন্য দাবিগুলো হলো, চিকিৎসা কেন্দ্রে কর্মরত সকল স্তরের টেকনিক্যাল কর্মকর্তাদের পদোন্নতি সংক্রান্ত জটিলতা নিরসন করতে হবে, সাধারণ কর্মচারীদের পদোন্নতি নীতিমালানুযায়ী বছরে চার বার পদোন্নতি/আপগ্রেডিং এর মাধ্যমে পদোন্নতি প্রদান করতে হবে।
জানা যায়, কর্মকর্তাদের কয়েকজন ১৬ দফা দাবির দুই দাবির বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তবে এ দুটি দাবিই কর্মকর্তাদের প্রধান দাবি বলে জানা গেছে। তারই প্রতিবাদে আজ তারা এ আলোচনা সভা করেছেন। সভায় বিপক্ষদের চ্যালেঞ্জ করা হয়।
সভায় বক্তারা বলেন, আমরা ন্যায়সঙ্গত দাবি আদায়ে আন্দোলন করছি। যে সকল কর্মকর্তারা সামান্য কিছু অর্থের কারণে বিরোধিতা করছেন তাদের পরিণতি ভাল হবে না। আর আমাদের বিরুদ্ধে যারা কু-রাজনীতি করছে তাদের বিরুদ্ধে আমরা একসঙ্গে লড়ে যাব। উপাচার্য দাবি না মানলে বিদায়ের ঘন্টা বাজবে।
কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান বলেন, আমরা চাকরির বয়স ৬২ বছরে উন্নীত করা ও পোষ্য কোটায় শর্ত শিথিল করা এই দুটি দাবির বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছি। কারণ এই সময়ে এটি বাস্তবায়ন সম্ভব না। তবে আমি সব দাবির বিপক্ষে না। সরকারও নির্বাচনের আগে সবকিছু শান্তশিষ্ট রাখতে বলেছেন।
কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি এটি এম এমদাদুল ইসলাম বলেন, আমরা আমাদের ন্যায়সঙ্গত দাবিতে আন্দোলন করছি। কতিপয় কয়েকজন বিরোধিতা করে আমাদের আন্দোলনকে অন্যদিকে মোড় ঘুরানোর চেষ্টা করছে। আমরা আমাদের দাবির পক্ষে অটল রয়েছি। দাবি না মানলে আগামী শনিবারে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করব।
গত শনিবার ২ সেপ্টেম্বর থেকে কর্মবিরতি পালন করে কর্মকর্তারা। অফিস চলাকালীন সকল অফিসিয়াল কাজ থেকে তারা কর্মবিরতি পালন করেন। তবে ছাত্র সংশ্লিষ্ট জরুরী কাজ চিকিৎসা, সনদপত্র উত্তোলন ইত্যাদি কাজ অব্যাহত রেখেছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা। গত জুলাই মাসে একই দাবিতে লাগাতার প্রায় ১৬ দিন পাঁচ ঘন্টা করে কর্মবিরতি পালন করেছিলেন কর্মতারা।